ইসলামের দৃষ্টিতে আশুরায়ে মহররম
– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
আশুরায়ে মহররমের তাৎপর্য ও ইতিহাস: আরবি হিজরি সনের প্রথম মাসের নাম মহররম। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আরবি বার মাসের মধ্যে চারটি মাসকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন।
রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন,
إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِندَ اللّهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللّهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَات وَالأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلاَ تَظْلِمُواْ فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ وَقَاتِلُواْ الْمُشْرِكِينَ كَآفَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَآفَّةً وَاعْلَمُواْ أَنَّ اللّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ
‘নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সঙ্গে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সূরা: তাওবাহ, আয়াত: ৩৬)
বিদায় হজের সময় মিনায় প্রদত্ত খুতবায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্মানিত মাসগুলোর বর্ণনা দিয়ে বলেন, তিনটি মাস হলো ধারাবাহিক-জিলকদ, জিলহজ ও মহররম, অপরটি হলো রজব। (মুসলিম)
আরবি বার মাসের মধ্যে মহররম মাস হচ্ছে অন্যতম। আর মহররম মাসের মধ্যে অন্যতম দিন হচ্ছে দশম দিনটি, যাকে আরবিতে ‘আশুরা’ বলে। ইসলামের ইতিহাসে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।
আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরেরও পূর্বে মিসরের স্বেচ্ছাচারী, যালিম শাসক আল্লাহদ্রোহী ফেরআউনের চরম নির্যাতন ও নিপীড়নের হাত থেকে উক্ত ১০ই মহররমে হজরত মূসা (আ.) ও তার সম্প্রদায় বনী ইসরাঈল মুক্তি পেয়েছিলেন। এ সম্পর্কে সূরাহ আল ক্বাসাস (২৮) আয়াত: ৭৭-৭৮ আয়াতগুলোতে এবং আরো কিছু আয়াতে ও সহীহ হাদিসে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
‘আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) মদীনায় এসে ইয়াহূদিদের আশুরার দিনে সওম অবস্হায় পেলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এটি কোন দিন যাতে তোমরা সওম পালন করছ? তারা বলল এটি একটি মহান দিন, আল্লাহ তায়ালা এদিন মূসা (আ.) ও তার সম্প্রদায়কে মুক্তি দিয়েছিলেন। আর ফিরাউন ও তার সম্প্রদায়কে সমুদ্রে নিমজ্জিত করেছিলেন। তাই এ দিনে মূসা (আ.) শুকরিয়া স্বরুপ সওম রেখেছিলেন। অতএব, আমরাও এ দিনে সওম রাখি। রাসূল (সা.) বরলেন, তোমাদের তুলনায় আমরাই মূসা (আ.) এর বেশি হকদার ওনিকটতম। অতঃপর রাসূল (সা.) নিজে এ দিনে সওম রাখলেন এবং সাহাবাদের সওম রাখার নির্দেশ প্রদান করলেন। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ১১৩০)
পবিত্র কোরআনের আয়াত ও সহীহ হাদিস একথাই প্রমান করে যে, আশুরা হলো ফেরাউন ও তার বাহিনী কর্তৃক যুগ যুগ ধরে চরম নির্যাতিত মূসা (আ.) ও বনী ইসরাঈরের মুক্তি ও বিজয়ের দিন। আর সেখানেই আশুরার তাৎপর্য নিহিত রয়েছে। এক শ্রেণীর মুসলিম ভাইয়েরা শুধু মহানবী (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.) এর শাহাদাতের হৃদয় বিদারক ঘটনাকেই শুধু স্বরণ করে মহররম মাসে বিশেষ তাযিয়া অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন, যা কোরআন ও হাদিস বহির্ভূত শির্ক ও বিদাদযুক্ত কার্যকলাপ।
আশুরায়ে মহররমের গুরুত্ব ও ফজিলত:
আশুরায়ে মহররমের ফজিলত সম্পর্কে আবূ ক্বাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আশুরা বা ১০ই মহররমের সওম, আমি আল্লাহর কাছে আশা করি তা পূর্বের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। (সহীহ মুসলিম হা: ১১৬২, তিরমিযী হা: ৭৫২, তাহক্বীক্ব মিশকাত২০৪৪)
আবূ হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘রমজানের পরে শ্রেষ্ঠ সওম হচ্ছে মহররম মাসের (আশুরার) সওম।’ (সহীহ মুসলিম হা: ১১৬৩, তিরমিযী হা: ৪৩৮, তাহক্বীক্ব মিশকাত হা: ২০৩৯)
মহানবী (সা.) তাঁর ইন্তেকারের পূর্বে ইয়াহুদিদের বিপরীত পন্থা অনুসরণের লক্ষে ১০ই মহররমের পূর্বে ৯ই মহররম আরো একদিন সওম রাখার আশা ব্যক্ত করেন। (সহীহ মুসলিম, হা: ১১৩৪) তাই কেউ যদি আশুরায়ে মহররমের উদ্দেশ্যে সওম পালন করতে চায় তাহলে তাকে দু’টি সাওম রাখতে হবে। অর্থাৎ-৯ ও ১০ মহররম। ১০ই মহররম শুধু একটি সওম পালন করা ঠিক হবে না।
মহররম মাসে করণীয় ও বর্জনীয়:
রাসূর (সা.) এর ইন্তেকালের প্রায় ৫০ বছর পর ৬১ হিজরীর ১০ই মহররম ইমাম হুসাইন (রা.) ইরাকের কাবালা প্রান্তরে স্ব-পরিবারে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ করে শাহাদাত বরণ করেন। তার এ ঘটনাকে স্বরণ করে আমাদের কিছু মুসলিম ভাই-বোনেরা ১লা মহররম থেকে ১০ই মহররম পর্যন্ত তাজিয়া মিছিল, মারসিয়া, শোক গাথা, মাতম, হায় হোসেন! বলে বুক চাপড়ানো, ইমাম হুসাইন (রা.) এর কল্পিত কবর বানিয়ে সেখানে হিন্দুদের মতো নযর নিয়ায পেশ করা, মানৎ করা, শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে নিজেকে রক্তাক্ত করা, সাহাবীদেরকে গালি-গালাজ ইত্যাদি কাজগুলো করে থাকে, যা ইসলাম ধর্মে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ কাজগুলো সরাসরি শির্ক ও বিদাতের অন্তর্ভূক্ত। আর বিধর্মীদের অন্ধ অনুকরণ করার শামিল। যার দরুন ইহকালে তাদের সকল ‘আমলগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। আর পরকালেও তাদের জান্নাতে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।’ (সূরা আল কাহাফ-১০৩-১০৬)
তাই আল্লাহ তায়ালা শির্কের পরিণতি সম্পর্কে বলেন:
‘নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তাঁর জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।’ (সূরা আল মায়িদাহ-৭২)
নবী (সা.) বিদাত সম্পর্কে বলেন:
‘যে ব্যক্তি এমন কাজ করল যা তাকে আদেশ করা হয়নি, তার সে আমল গ্রহণযোগ্য হবে না।’(সহীহ মুসলিম, হা: ১৭১৮)
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (কারো মৃত্যুতে) মুখমন্ডলে চপেটাঘাত করে, পরিধানের বস্ত্র ছিঁড়ে ও জাহিলিয়াত যুগের ন্যায় চীৎকার করে সে আমাদের (মুসলমানদের) অন্তর্ভূক্ত নয়।’ (সহীহ বুখারী হা: ১২৯৭, সহীহ মুসলিম হা: ১০৩, মিশকাত হা: ১৭২৫, জানাজা অধ্যায়)
তিনি আরো বলেন, ‘যারা কারো শোকে মাথার চুল ফেলে দেয়, উচ্চস্বরে চীৎকার করে, কাপড় ছিঁড়ে, তার থেকে আমি মুক্ত অর্থাৎ তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’ (সহীহ বুখারী হা: ৪৩৬, সহীহ মুসলিম হা: ১০৪, মিশকাত হা: ১৭২৬)
সম্মানিত সাহাবীগণের মর্যাদা সম্পর্কে বলতে গিয়ে নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আমার সাহাবীদের গালি-গালাজ করো না। তোমাদের কেউ উহুদ পাহাড় সমতুল্য স্বর্ণ (আল্লাহর পথে) ব্যয় করলেও তাদের এক মুদ বা অর্ধমুদ অর্থাৎ সিকি সা‘বা তারও অর্ধেক পরিমাণ (হাফ কেজির) সমান সওয়াব পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না।’ (সহীহুল বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাত হা: ৫৯৯৫, সহাবীদের মর্যদা অনুচ্ছেদ)
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আসুন! আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নত পালনার্থে মহররমের ৯ ও ১০ তারিখ দু’টি সওম পারন করি এবং আশুরাকে ঘিরে যে সকল ভ্রান্ত ধারনা ও ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ সমাজে চালু আছে তা থেকে নিজেকে ও অপর ভাই-বোনকে বিরত রাখতে তৎপর হই। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ ও তদ্বীয় রাসূলের আদেশ ও নিষেধকে মেনে চলার প্রত্যয় গ্রহণ করি এবং শির্ক ও বিদাতমুক্ত আমল করার শপথ গ্রহণ করে জান্নাতে যাওয়ার পথ উম্মুক্তকরি।
ইমাম হুসাইন (আ.) অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে শাহাদাত বরণ করে যে মহান আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সহীহ ও বিশুদ্ধ আমল করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
- নীলফামারীতে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনা
- চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী
- চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫০ ভাগ
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- গাজার সেই শহরে আবারও নারকীয় হামলার ঘোষণা ইসরায়েলের
- পাটপণ্যের উন্নয়নে সমন্বিত পথনকশা প্রণয়ন করা হবে: পাটমন্ত্রী
- জাতীয় সংসদের সব উন্নয়নের পৃষ্ঠপোষক প্রধানমন্ত্রী: স্পিকার
- বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ৫ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই
- ডোমারে ৩ দিনব্যাপী সমন্বিত পুষ্টি প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন
- ভ্রু ম্যাজিক
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে
- ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’
- ট্রেনের টিকিট এবার ভেন্ডিং মেশিনে, দাঁড়াতে হবে না লাইনে
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- পাকিস্তান-ইরানের সম্পর্কের নতুন মাত্রা
- ডিমলায় জুয়া খেলার অপরাধে আটক-২
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- রাতেই যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- ফারিণের ‘নিকষ’ অন্ধকার!
- অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি, ৫ যুগ্ম-সচিবের বদলি
- ‘সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে ভূমিসেবায় দুর্নীতি প্রতিরোধ করা হবে’
- জলবায়ু সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- অবৈধ দখলে থাকা খাস জমি চিহ্নিত করতে বললেন ভূমিমন্ত্রী
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- চিকিৎসা ব্যবস্থা যেকোনো মূল্যে সহজলভ্য করবো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- মানুষের জীবন সহনীয় করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জামদানিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত করা হবে: শিল্প সচিব
- রোহিঙ্গা সমাধানে নিউজিল্যান্ডকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান
- তুরস্কে আঞ্চলিক নির্বাচনে এরদোগান বিরোধীদের জয়
- ঈদে সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়তি ফ্লাইট
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- আইপিএলের মাঝপথে হঠাৎ দেশে ফিরলেন মুস্তাফিজ