• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

কীভাবে তৈরি হয়েছিল প্রথম আইফোন!

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৮  

২০০৭ সালে এমন একটি মোবাইল ফোন বাজারে আসে যা সারা বিশ্বের যোগাযোগ এবং সামাজিক ভূমিকায় এক বিপ্লব এনে দেয়। যার নাম ছিল আইফোন। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রানসিসকোতে ঘোষণা দেয়ার ছয় মাস পরে বাজারে আসে প্রথম আইফোন। বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার সময় স্টিভ জবস বলেছিলেন তিনটি বৈপ্লবিক উদ্ভাবনের সমন্বয়ে আইফোন। একটি হচ্ছে বৈপ্লবিক মোবাইল ফোন, প্রশস্ত পর্দার স্পর্শ নিয়ন্ত্রণযোগ্য আইপড ও যুগান্তকারী ইন্টারনেট যোগাযোগের যন্ত্র। যাতে ডেস্কটপের মতো মেইল আদান প্রদান, ওয়েব ব্রাউজিং, সার্চ ও ম্যাপ দেখা যায়। বিশ্বজুড়ে অ্যাপল ভক্তদের কাছে পছন্দ এবং ভরসার নাম হয়ে উঠেছে আইফোন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন আইফোন আসা নিয়ে প্রতিবছর শুরু হয় চরম উন্মাদনা এবং গুঞ্জন।

 

1.কীভাবে তৈরি হয়েছিল প্রথম আইফোন!

আইফোনের ইতিহাসের কথা বললে প্রথম যে নামটি আসে সেটি হল স্টিভ জবস। তার হাত ধরেই এসেছে মোবাইল ফোনের যুগ পরিবর্তনকারী আইফোন। প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট স্কেটের তথ্য অনুয়ায়ী আইফোন তৈরির আগে মানুষ গান শোনার জন্য ব্যবহার করত অ্যাপলেরই আরেক প্রযুক্তি আইপ্যাড। অ্যাপল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস চেয়েছিলেন এই মিউজিক প্লেয়ারের সমাপ্তি দেখতে। অতঃপর স্টিভ জবস এই মিউজিক প্লেয়ার আইপডের জায়গা দখল করতে পারে এমন একটি প্রযুক্তি পণ্য তৈরি করার ইচ্ছা পোষণ করেন। অ্যাপলের সেই সময়কার কর্মকর্তারা ভেবে দেখেন, অ্যাপল যদি আইপডের বিকল্প প্রযুক্তি উদ্ভাবন না করতে পারে তবে অন্য প্রতিষ্ঠান একই সঙ্গে ছবি তোলা, গান শোনা, ভিডিও দেখা, মেইল আদান প্রদান করার জন্য মুঠোফোন টাইপ একটি যন্ত্র হয়তো আবিষ্কার করে ফেলবে।

 

2.কীভাবে তৈরি হয়েছিল প্রথম আইফোন!

তাদের শঙ্কা ছিল যে আইপডের বাজার দখল করতে পারে এমন প্রযুক্তি যদি অন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ফেলে তাহলে সেটি তাদের জন্য হবে হুমকিস্বরুপ। এই শঙ্কা থেকেই তারা আইফোন তৈরির রূপরেখা তৈরি করে। তবে আইপডের প্রধান ডিজাইনের টিম ফেডেল স্টিভ জবসের রোটেটিং হুইলযুক্ত নতুন পণ্যটির ধারণাকে বাতিল করে দেন এবং ফ্লিক হুইলের পরিবর্তে মাল্টি টাচ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করার কথা জানান। টনি ফেডেলের কথা শুনে অ্যাপলের প্রকৌশলীদের দু’ভাগে ভাগ করে দেন স্টিভ জবস। একটি দল সফটওয়্যার এবং আরেকটি দল হার্ডওয়্যার নিয়ে কাজ শুরু করে। সফটওয়্যার দলটির কাজ ছিলো সুন্দর ইন্টারফেস তৈরি করা এবং হার্ডওয়্যার দলটির কাজ ছিল মানুষের পছন্দসই মুঠোফোনের একটি নকশা তৈরি করা।

 

3.কীভাবে তৈরি হয়েছিল প্রথম আইফোন!

অ্যাপলের মুঠোফোনের নকশাকারী দলটি স্টিভ জবসের সামনে পাতলা, মোটা, হালকা, গোলাকার ডিস্প্লেসহ একাধিক নকশা উপস্থাপন করেন। কিন্তু তিনি আরো সহজতর নকশার কথা বলেন। তবে স্টিভ জবস পছন্দ করেছিলেন জোনাথন আইভের নকশা করা ২০০৪ সালে বাজারে আসা আইপড মিনি সাদৃশ্যের ধাতব পদার্থের প্রোটোটাইপ টি আর এটির নকশায় পরিবর্তন আনেন জোনাথন আইভ। এভাবেই শুরু হয় প্রথম আইফোনের যাত্রা। তৃতীয় প্রজন্মের আইফোন ১১ জুলাই ২০০৮ সালে বাজারে আনার ঘোষণা দেয় অ্যাপল। তৃতীয় প্রজন্মের আইফোন থ্রি জি বাজার আসে ৮ জুন ২০০৯ তারিখে। ২০১১ সালের ০৪ অক্টোবর আবারো বাজারে আসে তৃতীয় প্রজন্মের আইফোন ‘ফোর এস’। ২০১১ সালের ৫ই অক্টোবর স্টিভ জবস মারা যাওয়ার পর নতুন প্রজন্মের আইফোন বাজারে আনার ঘোষণা দেয় অ্যাপল।

 

4.কীভাবে তৈরি হয়েছিল প্রথম আইফোন!

আইফোনের প্রতিটি নকশাতে স্টিভ জবসের হাত ছিলো বলে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা দাবি করেন। অতঃপর স্টিভ জবসকে ছাড়াই নতুন ডিজাইনের আইফোন ৫ বাজারে আনে অ্যাপল। কিন্তু আইফোন তৈরির প্রথম দিকে কোনো অ্যাপ স্টোর ছিলো না। ফলে এতে অ্যাপ ডাউনলোডের কোনো সুযোগ ছিলো না। আইওএস অপারেটিং সিস্টেমের ডিজিটাল বিপণন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পরিচিত অ্যাপ স্টোর থেকে প্রথম অ্যাপ ডাউনলোড করা হয়। ২০০৮ সালের ১০ জুলাই মাত্র ৫০০ অ্যাপ নিয়ে শুরু হয় এই অ্যাপ স্টোর। ২০১৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এতে ২২ লাখের বেশি এপ্লিকেশন হালনাগাদ করা আছে।

 

5.কীভাবে তৈরি হয়েছিল প্রথম আইফোন!

আইফোন যাত্রার প্রথমদিকে অ্যাপলের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছিল আইফোনের নামকরণ নিয়ে৷ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সিসকো পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেলের মামলায় হেরে যায় এবং অ্যাপল তাদের আইফোন নামটির আইনি বৈধতা পায়। আর এভাবেই আইফোনের মধ্য দিয়ে অ্যাপল যেন আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা এবং নির্ভরযোগ্য একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। অ্যাপল কোম্পানির আয়ের ৬০ শতাংশ আসে এই আইফোন থেকেই। অবাক করার মতো একটি তথ্য প্রকাশ পায় ২০১৬ সালের জুন মাসে যেখানে জানানো হয় বিশ্বে সর্বমোট ১০০ কোটি আইফোন রয়েছে যা সেই সময়ের বিশ্ব জনসংখ্যার শতকরা ১ ভাগ। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে অ্যাপল বাজার মাত করছে আইফোন এক্স বা আইফোন ১০, আইফোন এক্স এস, আইফোন এক্স আর এবং আইফোন এক্স ম্যাক্স দিয়ে।