• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

কুলিদের উৎপাত, অসহায় যাত্রীরা

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০১৮  

ঢাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত সদরঘাট দিয়ে নৌযানে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৮০ হাজার লোক প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। এরফলে এ নৌঘাটে উপচেপড়া মানুষের ভিড়ে মালামাল বহনের ক্ষেত্রে কুলিদের হাতে যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

যথাযথ নিয়ন্ত্রণের অভাবে কুলিদের উৎপাত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে দাবি যাত্রীদের।

যাত্রীদের হাতে বহনযোগ্য পণ্য বহন করতেও কুলিদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। যাত্রীরা হাতে বহনযোগ্য পণ্য নিজেরাই বহন করতে চাইলেও কুলিরা নিতে বাধা দেন। যদিও বিআইডব্লিউটিএ’র নির্দেশনা অনুযায়ী হাতে বহনযোগ্য পণ্য যাত্রীরা কোনো প্রকার টাকা ছাড়াই নিতে পারবেন।

আর কোনো মালামাল কুলিদের দিয়ে বহন করলেও তারা অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাচ্চার জন্য খেলনা নিয়ে যাওয়ার সময় একজন ব্যক্তির কাছ থেকে ১০০ টাকা আদায় করা হয়। আরেকজন ব্যক্তি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘাটে প্রবেশ করার সময় তার কাছ থেকে ৩০০ টাকা দাবি করা হয়। চাঁদপুরগামী যাত্রী জাফরের কাছ থেকে প্রতিবস্তা পণ্য ৩০০ টাকা আদায় করে কুলিরা।

বিআইডব্লিউটি’র সূত্র অনুযায়ী কুলিদের পণ্য বহনের মূল্য- লাগেজ/ব্যাগ অনধিক ১০ কেজি ১০ টাকা, অনধিক ৬০ কেজি ৬০ টাকা, আলমারি (স্টীল/কাঠের) ১০০ কেজি ১০০ টাকা, টেলিভিশন ২০ টাকা, ফ্রিজ ৫০ টাকা, মোটরসাইকেল ২৫ টাকা, বাইসাইকেল ২০ টাকা, ফ্যান ২০ টাকা, হার্ডওয়ার মালামাল ৫০ কেজি ৪০ টাকা নির্ধারণ করা আছে।

মাসুদ নামে কর্মরত এক কুলি জানায়, পণ্য বহন করে তারা যে টাকা আয় করে তার ৫০% নিয়ে যায় হাবিব নামে এক ব্যক্তি। চেকার যখন ঘাটে চেক করতে আসে তাদেরকে ৫০০ টাকা দিয়ে দেয় ঘাটে নিযুক্ত দালালরা।

তিনি বলেন, বিভিন্নজনকে টাকার ভাগ দিতে হয়, তাই কুলিরা যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করে। ব্যবসায়ীক পণ্য ও ব্যক্তিগত পণ্য পৃথক নিয়ম খাকলেও এর তোয়াক্কা করছেন না তারা।

বিআইডব্লিউটিএ’র নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যবসায়িক পণ্য যারা বহন করবে তাদের পোশাক হলুদ রঙের আর যারা যাত্রীর মালামাল বহন করবে তাদের পোশাক আকাশি রঙের নিয়ম থাকলেও খুব অপ্রতুল সংখ্যক কুলিকে নির্দিষ্ট পোশাকে দেখা যায়। নির্ধারিত পোশাকবিহীন অনেককেই টাকা আদায় করতে দেখা যায়। গেট নং-৭ এ বিল্লাল নামে একজন ব্যক্তি ৪ জন শিশুর মাধ্যমে মালামাল বহনের কাজ করাতে দেখা যায়।

ঢাকা-কাঠপট্টিগামী যাত্রী সুমন বলেন, যাত্রীরা নিজের মান-সম্মানের ভয়ে কুলিদের কিছু বলে না। তারা যে টাকা দাবি করে তা না দিলে কলার চেপে ধরে এমনকি সংঘবদ্ধ হয়ে হেনস্তা করে এবং গালাগালও করে।

ঢাকা নৌবন্দরের যুগ্ম পরিচালক আরিফ উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য লোক ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। এর মধ্যে কেউ যদি হেনস্তার শিকার হন আমাদের কাছে তা জানাচ্ছেন না। ঘাটে বিভিন্ন জায়গায় ফোন নম্বর, অভিযোগ বাক্স দেয়া আছে, তবে যাত্রীদের মাঝে সচেতনতার অভাবে তেমন কোন অভিযোগ আমরা পাচ্ছি না।

তিনি আরো বলেন, যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ এবং আনসার বাহিনী ঘাটে নিযুক্ত রয়েছে। নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।