• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

দর্শকরা দেবতার মতো: পপি

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

ঢালিউডের অন্যতম দর্শকপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সমান জনপ্রিয় তিনি। তার সমসাময়িক অনেকেই রূপালি পর্দা থেকে সরে গেলেও চলচ্চিত্রকে ভলোবেসে এখনো নিয়মিত কাজ করছেন তিনি।

পপির সমসাময়িক ব্যাস্ততা ও চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন ডেইলি বাংলাদেশের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মেহেদী সোহেল।

আপনার বর্তমান ব্যাস্ততার খবর শুনতে চাই...

অনন্য মামুন পরিচালিত ‘ইন্দুবালা’র শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল গত সপ্তাহে। কিন্তু ডাবিং শেষ কিছু অংশের দৃশ্যধারণ রয়ে গেছে। যে কারণে গত ২৩, ২৪ ও ২৫ নভেম্বর রাজধানীর অদূরে নবাবগঞ্জ সদরের বিভিন্ন লোকেশনে ‘ইন্দুবালা’র বাকি অংশগুলোর শুটিং শেষ করলাম। এছাড়া দ্রুতই শুরু হবে কাজী আমিরুল ইসলাম শোভা পরিচালিত ‘সেভ লাইফ’ ও বুলবুল বিশ্বাস পরিচালিক ‘কাটপিছ’ চলচ্চিত্র দুটি। কাজ চলছে আরিফুর জামান আরিফের নির্দেশনায় ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’, সাদেক সিদ্দিকীর নির্দেশনায় ‘সাহসী যোদ্ধা’র চলচ্চিত্রগুলোর কাজ চলমান রয়েছে।

চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন দেখছেন

চলচ্চিত্রের অবস্থা মোটামুটি। ভালোও না আবার খারাপও না! তবে এক দশক আগেও আমাদের চলচ্চিত্র যে অবস্থাতে ছিলো এখন সেরকম নেই। আসলে সত্যিকথা বলতে গেলে চলচ্চিত্র খারাপ সময় পার করছে।

চলচ্চিত্রের এই খারাপ অবস্থার কারণ কি বলে মনে করেন আপনি?

কারণতো রয়েছে অনেক, কোনটা রেখে কোনটা বলবো! এখন সব থেকে বড় সংকট হচ্ছে প্রযোজকের সংকট। একসময় বছরে শতাধিক চলচ্চিত্র নির্মাণ হতো। এখন সে সংখ্যা ৫০ এর নিচে নেমে এসেছে। ১৩ শতাধির প্রেক্ষাগৃহ ছিলো সেই সংখ্যা এখন তিনশ’ এর কম। আর যে প্রেক্ষাগৃহগুলো আছে তাতেও দর্শক আগেরমত খুব একটা চোখে পড়ে না। কারণ প্রেক্ষাগৃহে বসে সিনেমা দেখার পরিবেশ এখন আর নেই বললেই চলে।

বলছেন দর্শক আগেরমতো হলমুখি না, কিন্তু কেন?

এখন চলচ্চিত্রের জন্য ভালো গল্প দেখা যায় না। গল্প ভালো না হলে প্রযুক্তি আর অভিনয় দিয়ে দর্শক ধরে রাখা যায় না। একটি ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দক্ষ অভিনেতা যেমন দরকার ঠিক তেমনি উন্নত প্রযুক্তিও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু দর্শক ধরে রাখতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভালো গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া তারকা শিল্পীরও সংকট বাড়ছে।

তারকা শিল্পীর সংকট বলতে ঠিক কি বোঝাতে চাচ্ছেন?

দেখুন আমি ভালো গল্পের অভাবের কথা বলেছি। ভালো গল্প বলতে যে গল্পে দেশ, মাটি ও মানুষের কথা থাকে। যে গল্প মানুষের হৃদয়কে ছুয়ে যায়। যে গল্প মানুষকে হাসায়, ভাবায়, শেখায় আবার চোখের পানিও আনতে পারে। এখনকার চলচ্চিত্রগুলোতে এমন গল্পের অভাব। গল্পগুলোতে মা-বাবা, দাদা-দাদি, ভাই-ভাবি ইত্যাদি চরিত্রগুলোর গুরুত্ব নেই বললেই চলে। এছাড়া এই চরিত্রগুলোতে যারা অভিনয় করছেন তাদের অনেকই অপরিচিত মুখ। আগে এসব চরিত্রে কাজ করতেন, আলমগীর-শাবানা, ফারুক-ববিতা, আনোয়ারা-পবির মিত্র, সোহেল রানা ও নায়করাজের মত মহা তারকারা।

অপরদিকে খলনায়ক ছিলেন, রাজীব, হুমায়ুন ফরিদী, এটিএম শামসুজ্জামান, খলিলউল্লাহ খান, অমল বোস ও নাসির খানেরমতো তারকা অভিনেতারা। তাদের অনেকেই মৃত্যুবরণ করছেন। আর যারা আছেন তারা নিয়মিত নন। অপর দিকে এই তারকাদের পরিপূরক শিল্পী আমাদের চলচ্চিত্রে গড়ে উঠেনি। অপরিচিত মুখ হলে দর্শক টানতে পারেন না। এতে প্রেক্ষাগৃহগুলো দর্শকশূণ্য হওয়ার একটা বড় কারণ।

আপনি সিনেমা হলের পরিবেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন?

এটা খুব স্বাভাবিক কথা। একটা হলের পাশ দিয়ে যখন আপনি যাবেন তখন ওই হলগুলোকে আপনার মালামাল রাখা গুদাম ঘরের মত মনে হবে। দেখুন আমাদের দেশের হলগুলো আজ থেকে ৩০ বা ৪০ বছর আগে নির্মাণ করা। সেখানকার চেয়ারগুলো এখন বসার অনুপোযোগি। বেশির ভাগ ফ্যানগুলো অচল। সেখানে ছারপোকা তেলাপোকার অবাসস্থল। এমন পরিবেশে বসে যে দর্শক এখনো সিনেমা দেখেন। তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তারাই লক্ষ্মী, তারাই তো দেবতার মতন।