• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

যে প্রশংসায় উল্টো ক্ষতি হয়

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

মানুষের ভালো-মন্দ গুণাগুণ থাকতেই পারে। দোষ-গুণ মিলেই মানুষ। তাই কারো সম্পর্কে প্রশংসা করতে হলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ইসলামে যে কোনো বিষয়ে অতিরঞ্জিত বা বাড়াবাড়ি প্রশংসা করা নিষিদ্ধ। এতে প্রশংসাকারী ও প্রশংসিত উভয় ব্যক্তিই মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

তাই অতিরিক্ত প্রশংসা ইসলাম শুধু নিষিদ্ধই নয় বরং তাতে রয়েছে মারাত্মক শাস্তি। এ বিষয়ে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন মহান আল্লাহ তায়ালা। কোরআনুল কারিমে এসেছে-

‘তুমি মনে করো না- তারা শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে, যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আনন্দিত হয় এবং না করা বিষয়ের জন্য প্রশংসিত হতে ভালোবাসে। এরূপ কখনো মনে করো না, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১৮৮)

সুতরাং কারো প্রশংসা, খোশামোদ, তোষামোদ করতে গিয়ে অতিরঞ্জিত না করাই ইসলামের বিধান। কেননা অতিরক্তি প্রশংসা ও তোষামোদের দ্বিমুখী ক্ষতি রয়েছে। যে ব্যক্তি প্রশংসা করে আর যার প্রশংসা করা হয়, উভয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রশংসাকারীর ক্ষতি-

যে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য নয় সে রকম প্রশংসা বা তোষামোদ করলে তাতে গোনাহগার হয় প্রশংসাকারী। অসামঞ্জস্য মাত্রারিক্তি প্রশংসায় ৩ ধরনের গোনাহ হয়ে থাকে। আর তাহলো-

(১) মিথ্যাচারের গোনাহ:

যারা নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই, এমন প্রশংসা করে তা মূলত মিথ্যাচারের অন্তর্ভূক্ত। আর মিথ্যা সবেচেয়ে বড় গোনাহই নয় বরং সব পাপের মা।

(২) মুনাফেকির গোনাহ:

যে ব্যক্তি অন্য কারো এমন প্রশংসা করে, যে প্রশংসায় তার নিজেরও আস্থা বা বিশ্বাস নেই। তবে সে প্রশংসা করা মুনাফেকি। কোরআনের ভাষায় মুনাফিকের অবস্থান জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে।

(৩) অন্যকে হেয় করার গোনাহ:

কোনো ব্যক্তি যদি কারো এমন প্রশংসা করে যে, তার প্রশংসার ফলে যার প্রশংসা বা গুণগাণ গাওয়া হয়, তাতে ওই ব্যক্তি অন্যের চোখে হেয় হয় বা অপমাণিত হয়। তাতে প্রশংসাকারী নীচুতা ও হঠকারিতার পাপে পতিত হবে।

প্রশংসিত ব্যক্তিও ২ ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়-

(১) অহংকারের ক্ষতি:

প্রশংসা পাওয়ার ফলে ওই ব্যক্তির মনে অহংকার জন্মাতে থাকে। সে অহংকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। অথচ অহংকার হলো মহান আল্লাহর গায়ের চাদর। যা নিয়ে টানাটানি করতে নিষেধ করা হয়েছে। মানুষ অহংকার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অংহকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ পছন্দ করেন না।

(২) অন্যকে অপমানের মানসিকতা তৈরি হয়:

মিথ্যা ও অতিরিক্ত প্রশংসা শুনে প্রশংসিত ব্যক্তির মাঝে নিজর সম্পর্কে অনুরূপ ধারণা জন্মাতে থাকে। তাতে সে অন্যের সঙ্গে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ব্যবহার করতে থাকে। মানুষের কাছ থেকে আরো বেশি প্রশংসা বাক্য শুনতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। যার যোগ্য সে নয়। এদের ব্যাপারে কঠিন শাস্তির ঘোষণা এসেছে কোরআনে।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর উভয় শ্রেণিকে অতিরিক্ত প্রশংসা করার ও প্রশংসা পাওয়ার মানসিকতা থেকে দূরে রাখুন। মিথ্যাবাদী, মুনাফেক ও অহংকারী হওয়া থেকে প্রত্যেককেই হেফাজত করুন। আমিন।