• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

উলিপুরে মোবাইল হারিয়ে গৃহিণীর আত্মহত্যা! 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২১  

কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক গৃহবধু ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। দুই সন্তানের জননী ওই গৃহবধূর দামী মোবাইল সেট হারিয়ে যাওয়ায় অভিমানে আত্মহত্যা করতে পারে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছে। তবে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। 

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের দড়িকিশোরপুর কানীপাড়া গ্রামে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সন্ধ্যা ৬টার দিকে কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞসাবাদের জন্য নিহতের স্বামীসহ ৪জনকে উলিপুর থানায় নেয়া হয়েছে। 

এলাকাবাসী জানায়, ওই এলাকার জহুর উদ্দিনের ছেলে আবু সিদ্দিক ওরফে সিদ্দিক কসাই (৪০) প্রায় ১২ বছর পূর্বে একই এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে হাওয়ানুর বেগমকে (২৮) বিয়ে করেন। হাওয়ানুর বেগম সিদ্দিকের দ্বিতীয় স্ত্রী। তাদের ঘরে ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে। 

ঘটনার দিন শুক্রবার দুপুরে হাওয়ানুর বেগম শয়ন ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ সময় ওই ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ঘটনার সময় স্বামী সিদ্দিক কসাই পাশ্ববর্তী বাকরেরহাট বাজারে ব্যবসায়ীক কাজে অবস্থান করছিলেন। পরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে খবর দেন। 

সিদ্দিকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হাওয়ানুর বেগমকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়।
 
শুক্রবার বিকালে সরেজমিন ওই এলাকায় গেলে এলাকাবাসী আব্দুস সালাম (৮০), আহাদ আলী (৫৬), আসাদুর রহমান (৫৫), অছিমউদ্দিন (৫০) ও গ্রাম পুলিশ এমমাদুল হকসহ অনেকে জানান, নিহত হাওয়ানুর বেগমের একটি দামী মোবাইল ফোন ৩-৪ দিন পূর্বে বাড়ি থেকে হারিয়ে যায়। তারা আরও দাবী করেন, হাওয়ানুর বেগম কিছুটা মানুষিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। কি কারনে হাওয়ানুর বেগম আত্মহত্যা করেছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, বিষয়টি তাদের জানা নেই। 

এদিকে পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশ উদ্ধারের সময় নিহতের স্বজনরা কেউ পাশে না থাকায় ঘটনাটি নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের স্বামী সিদ্দিক কসাই, দেবর আবুল খায়ের, ননদ শাহানুর বেগম ও জা মাহমুদা বেগমকে থানায় নিয়ে আসে।   

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, ওই গৃহবধুকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে আসলে নিহতের স্বজনরা সটকে পড়েন। পুলিশ লাশ থানায় নিয়ে যান। 

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (তদন্ত) রুহুল আমীন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশ উদ্ধার করার সময় নিহতের স্বজনরা কেউ পাশে ছিল না। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সংবাদপ্রাপ্তির ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।