• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আধার কেটে সংসারে অবদান রাখতে শুরু করেছেন হিলির নারীরা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১  

সীমান্ত এলাকা হওয়ায় হিলির পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোগুলোতে নেই তেমন কোনো কল-কারখানা। ফলে কোনো রকম সংসার চালাতেন পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। আর নারীরা বাড়িতে বসে অলস সময় কাটাতেন। তবে সেই আধার কেটে সংসারে অবদান রাখতে শুরু করেছেন নারীরা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, সীমান্তঘেঁষা হাকিমপুর উপজেলা থেকে ২৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে মতিহারা গ্রামে গড়ে উঠেছে ২৪টি হেয়ার ক্যাপের কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করছেন নারীরা। তারা চুল দিয়ে ভিন্নধর্মী ক্যাপ তৈরি করছেন। এ কাজ করে তাদের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরছে।

জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে হেয়ার ক্যাপের কারখানাগুলোতে। তিন হাজার নারীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কারখানাপ্রাঙ্গণ। কাজে যোগদান করতে পেরে তারাও খুশি। স্বপ্ন দেখছেন সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা দেওয়ার। 

কারখানায় কর্মরত সুমাইয়া, নাজিরা, রিক্তা নামে তিন নারী শ্রমিক বলেন, করোনার কারণে আমাদের কারখানা দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। আবার কারখানা খুলে দিয়েছে। সংসারের কাজের পাশাপাশি কারখানায় কাজ করে আয় করতে পারছি।

রুবিনা নামে আরেক নারী শ্রমিক বলেন, আমরা নারীরা বাড়িতে বদ্ধ অবস্থায় ছিলাম। বাড়ির কাজ-কর্ম ছাড়া আর কোনো কিছু করার সুযোগ ছিল না। বাড়ির কাছে কারখানা হওয়ায় কাজ করতে পারছি। এখান থেকে যে অর্থ পাচ্ছি তা দিয়ে আমাদের সংসার ভালো চলছে। শুধু সংসার চালানো নয়, সন্তানদের লেখাপড়াও করাতে পারছি।

কারখানার সুপারভাইজার লাকী বলেন, আমরা এই কারখানায় পাঁচজন আছি। সবাই সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালন করি। আমরা সকালে এসে শ্রমিকদের চুল দেয় এবং ছুটি শেষে চুল বুঝে নেই। এ ছাড়া যারা নতুন আসছে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজও আমরা করি।

হেয়ার ক্যাপ কারখানার ম্যানেজার মামুন হোসেন বলেন, করোনার কারণে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের কারখানাগুলো বন্ধ ছিল। তবে সরকারি সব নির্দেশনা মেনে আবারও কারখানা চালু করেছি। আমরা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতসহ সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে কারখানা পরিচালনা করছি।

নবাবগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শামছুল আলম বলেন, এই উপজেলা অত্যন্ত অবহেলিত। এখানকার মানুষের কর্মসংস্থানের তেমন সুযোগ ছিল না। চুলের কারখানা হওয়াতে এখানকার নারীরা কাজ করতে পারছে। সরকার যদি এ শিল্পের প্রসারে কাজ করতো তাহলে আরও মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতো।