• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

গরিবের হক বুঝে পেতেই নির্বাচন করছি

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২২  

আগামী ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠেও ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ভোটের লড়াইয়ে মাঠে নেমেছেন ২৮ ইঞ্চি উচ্চতার বামন মশু। তার বাড়ি সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাগভান্ডার কদমতলা গ্রামে। মশু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এলাকার মানুষের মনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ওই এলাকার হরমুজ আলী ও চায়না দম্পতির সন্তান। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মশুর বাবা জীবিত থাকলেও তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। আট বছর বয়সেই মশুর মা মারা যান। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে মোশাররফ হোসেন মশু দ্বিতীয়। জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ২০ আগস্ট ১৯৯৫। সে হিসেবে তার বয়স ২৬, উচ্চতা ২৮ ইঞ্চি আর ওজন ৩৮ কেজি। তিনি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। দারিদ্র্যের কারণে পরে আর পড়ালেখার সুযোগ হয়নি। এখন তার ইচ্ছা জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের সেবা করা।

আসন্ন ইউপি নির্বাচনে অন্য প্রার্থীদের মতো মশুরও দম ফেলার সময় নেই। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। মশু সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্যপদে ভ‍্যানগাড়ি প্রতীকে অংশ নিয়েছেন। এই ওয়ার্ডে তার বিপরীতে লড়ছেন আরও পাঁচ প্রার্থী। মশুর সাহস আর অদম্য ইচ্ছে দেখে বিস্মিত এলাকার মানুষ। 

স্থানীয় ভোটাররা জানান, আর্থিক সংকট থাকায় ভোটাররাই ব্যানার, পোস্টার করে তার পক্ষে গণসংযোগ করছে। তাদের আশা ভোট যুদ্ধে বিজয়ী হবেন মশু।

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুর রহমান বলেন, এখানে সবাই মশুর কথা বলছে। ভোটে জিতবে কিনা সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু সে সাহস করে ভোট করছে এতেই আশ্চর্য হচ্ছে মানুষ।

৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আমজাদ বলেন, মশু ছোট মানুষ। খুব সরল। ওর ভোটে দাঁড়ানো দেখে আমরাই অবাক। এই ছোট ছেলেটা তার সমর্থকদের নিয়ে পায়ে হেঁটেই ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে।

আরেক বাসিন্দা আজিজুল বলেন, ছোট থেকেই ওর খুব ইচ্ছে মানুষের উপকার করার। সব কাজ সে করতে চায়, চলাচলে একটু সমস্যা হলেও আমি চাই মশু ভোটে জিতুক।

ওই এলাকার স্কুল শিক্ষক সুলতানা পারভীন বলেন, মশুর ভোটে জয়ী হওয়া দরকার। মানুষের ধারণা বদলানো দরকার। প্রতিবন্ধী যে সমাজের বোঝা নয় তা করে দেখাচ্ছেন মশু। মনের ইচ্ছাই বড় ইচ্ছা, সেটা তিনি ভোটের মাঠে দেখাচ্ছেন।

মশু বলেন, জনগণ আমার সরলতা এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ভালোবাসেন। আমি গরিব মানুষ। বিগত দিনগুলোতে গরিব মানুষরা হক বুঝে পায়নি। গরিবের হক বুঝে পেতেই আমি নির্বাচন করছি। আমার টাকা নেই, ভোটাররাই টাকা খরচ করে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, আমি বিজয়ী হব। নির্বাচিত হলে জনগণের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করব।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, মশু শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও নির্বাচন করতে তার আইনগত কোনো বাধা নেই।