• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

ঠাকুরগাঁওয়ে আলুর কেজি ৮ টাকা, তবুও ক্রেতা নেই

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২২  

ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি আলু চাষের জন্য বেশ উপযোগী। আলু উৎপাদনে মুন্সিগঞ্জের পরেই ঠাকুরগাঁওয়ের অবস্থান। সে হিসেবে দেশে আলু উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে ঠাকুরগাঁও। প্রতি বছর আলু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে এ জেলায়। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলাতে সরবরাহ করা হয় এখানকার আলু। 

আলুচাষিরা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতি কেজি আলু ৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবুও মাঠে ক্রেতা নেই। উৎপাদিত আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের আলুচাষিরা। গত বছর অধিক দামে আগাম আলু বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় এবারও লাভের আশায় আগাম আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন তারা। কিন্তু আগাম আলুর বাজারে ধস নামায় লোকসান হচ্ছে তাদের। গত বছর চাষিরা এই সময় প্রতি কেজি আলু মাঠেই বিক্রি করেছিলেন ২৫-৩০ টাকা দরে।  এবার সেই আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮ টাকা দরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলার পাঁচ উপজেলায় এবার ২৭ হাজার ৬৪৭ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমির আলু কর্তন করা হয়েছে। আলু উৎপাদন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৪ মেট্রিক টন। বর্তমান বাজার দরে আলু বিক্রি করে প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) চাষিরা দাম পাচ্ছেন ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। আর প্রতি হেক্টর আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। গত বছর জেলায় ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। আর উৎপাদন হয়েছিল ৭ লাখ ৪১ হাজার ২৯৭ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ বলছে গত বছরের কিছু আলু মজুদ থাকায় বাজার দর কম। পুরাতন আলু শেষে হলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। 

সাধারণত মাটিতে এক বার আলু রোপণ করলে এক বার ফলন পাওয়া গেলেও এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। চাষিরা এবার দুই বার আলু রোপণ করে ফলন পাচ্ছেন মাত্র এক বার। সে কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে চাষিদের। তাছাড়া বাজারের অবস্থা ভালো না থাকায় লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। আগাম আলু রোপণের কয়েকদিন পরে বর্ষার শেষের বৃষ্টিতে রোপণ করা আলু মাঠেই পচে যায়। আবারও লাভের আশায় সেই জমিতে আলু রোপণ করেন চাষিরা।

আলু চাষি আবুল কালাম বলেন, আমি এবার ৩ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। গত বছর আলুর ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছিলাম। কিন্তু এবার আলু চাষ করে ৮ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে, তাও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না৷ এবার আলু চাষ করে লাভতো দূরের কথা বরং ৫০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পোষানোর মতো না৷ এবার আলু চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আমি। 

আরেক চাষি ফজলুর রহমান বলেন, এবার কীটনাশকের দাম সবচেয়ে বেশি ছিল। আর এবারই আলুর দাম কম, প্রচণ্ড লস হবে আমাদের। এক মণ আলু বিক্রি করে একটা কামলা খরচ দিতে হয়। তাহলে হিসেব করেন আমাদের অবস্থানটা কোথায়। আমরা এবার আলু চাষ করে লোকসানে আছি।

সদর উপজেলার ফকদনপুর এলাকার আলুচাষি এন্তাজুল ইসলাম বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি ছিল। কম ফলনেও ভালো লাভ হয়েছে। এবার বেশি ফলনেও লোকসান হচ্ছে। এবার লাভতো দূরের কথা আসলও তুলতে পারছি না। কম দামে আলু বিক্রি করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। তার পরও নগদ টাকার ক্রেতা নেই। 

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, গত বছরের বাড়তি আলুর মজুদ শেষে হলে বাজারের অবস্থা ঠিক হবে। সেই সঙ্গে আলুর ফলন ভালো হলে চাষিদের লোকসান পুষিয়ে নেওয়া যাবে। চাষ করা আলু এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থায় আছে। চাষিদের যে কোনো পরামর্শ দিতে কৃষি বিভাগ মাঠপর্যায়ে রয়েছে।