• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

টিউলিপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকদের জন্য চালু হলো হোটেল

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

টিউলিপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকদের জন্য চালু হলো হোটেল             
পর্যটকদের জন্য এবার হোটেল চালু হয়েছে টিউলিপ গ্রাম দর্জিপাড়ায়। এখন থেকে পর্যটকরা টিউলিপ বাগান দেখতে এসে এ হোটেলে খেতে পারবেন স্থানীয় নানান পদের খাবার। এখানে মিলবে তেতুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবার। ইচ্ছে করলে পর্যটকরা রাত্রীযাপন করে সকালের শিশির ঝরা ফুটন্ত টিউলিপ বাগানের সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন।

গতকাল মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে দর্জিপাড়ায় পর্যটকদের জন্য হোটেলটি উদ্বোধন করেন ইএসডিও’র পরিচালক (প্রশাসন) ড. সেলিমা আখতার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইএসডিও’র সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর আইনুল হকসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।

আয়োজকরা জানান, টিউলিপের একখণ্ড নেদারল্যান্ড হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম দর্জিপাড়া। গত বছর প্রথম ৪০ শতক জমিতে টিউলিপ চাষ হলে তা দেখতে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকদের আগমন ঘটে এ এলাকায়। গতবারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার দুই একর জমিতে এক লাখ টিউলিপ রোপণ করা হয়েছে। টিউলিপ দেখতে আসা পর্যটকদের সেবার জন্য নেওয়া হয়েছে কিছু নতুন উদ্যোগ। এসব উদ্যোগের মধ্যে হোটেলে থাকা-খাবার ব্যবস্থা ও যানবাহনের ব্যবস্থা।

এ বছর ১০ প্রজাতির টিউলিপ লাগানো হয়েছে। নানা প্রজাতি ও রংগুলোর মধ্যে রয়েছে- অ্যান্টার্কটিকা (সাদা), ডেনমার্ক (কমলা ছায়া), লালিবেলা (লাল), ডাচ সূর্যোদয় (হলুদ), স্ট্রং গোল্ড (হলুদ), জান্টুপিঙ্ক (গোলাপী), হোয়াইট মার্ভেল (সাদা), মিস্টিক ভ্যান ইজক (গোলাপী), হ্যাপি জেনারেশন (সাদা লাল শেড) ও গোল্ডেন টিকিট (হলুদ)। কিছুদিনের মধ্যেই ১০ প্রজাতির এসব টিউলিপ রাজকীয় সৌন্দর্য ছড়াবে।

জানা যায়, সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইকো সোস্যাল ডেভলেভমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)’র উদ্যোগে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফের অর্থায়নে দুই একর জমিতে লাগানো হয়েছে টিউলিপ ফুল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ঘুরতে এসে পর্যটকদের সেবা দিতে বাগান সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইকো ট্যুরিজমের মাধ্যমে থাকা-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য বাগানের বিভিন্ন জায়গায় বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা সেখানে বসে টিউলিপের মোহনীয় রূপ উপভোগ করতে পারবেন। ছবি তুলতে ও ফুল কিনে প্রিয়জনদের উপহার দিতে পারবেন।

বাগান ঘুরে দেখা যায়, ফুল ফুটতে শুরু করেছে। বাগানের বেশ কিছু সারিতে কলি ফুটে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। বাগানের মাঝখানে গমের চারা দিয়ে সবুজ রং এর চতুর্ভুজের মাঝখানে লাল টিউলিপের গোলবৃত্ত তৈরি করে পতাকা তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য এটি একটি অন্যরকম দৃশ্য মনে হবে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাস জুড়ে এখানকার আচার-অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবস ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাঙিয়ে থাকবে এ টিউলিপ ফুল। মুগ্ধ করবে যেকোন পর্যটকদের। পর্যটকরা নির্ধারিত ফি প্রদান করে বাগানে প্রবেশ করে দেশের মাটিতে ভিনদেশী টিউলিপের সৌন্দর্যে মোহিত হতে পারবেন।

টিউলিপ শীত প্রধান অঞ্চলের একটি মাধুর্যময় ফুল। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘টিউলিপা’। এটি নেদারল্যান্ডসের ফুল। যা অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফুল উৎপাদনকারী উদ্ভিদ। এটি বাগানে কিংবা কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হয়। ফুলদানীতে সাজিয়ে রাখার জন্য এর আবেদন অনন্য। বর্ষজীবী ও কন্দযুক্ত প্রজাতির এ গাছটি লিলিয়াসিয়ে পরিবারভূক্ত উদ্ভিদ। টিউলিপের প্রায় ১৫০ প্রজাতি এবং এদের অসংখ্য শংকর রয়েছে। বিভিন্ন ধরণের হাইব্রিডসহ টিউলিপের সকল প্রজাতিকেই সাধারণভাবে টিউলিপ নামে ডাকা হয়। টিউলিপ মূলত বর্ষজীবী ও শীত প্রধান দেশের বসন্তকালীন ফুল হিসেবে পরিচিত।

ইএসডিও’র পরিচালক (প্রশাসন) ড. সেলিমা আখতার বলেন, উত্তরাঞ্চলের পর্যটন শিল্প উন্নয়নে আমরা ইকো ট্যুরিজম হিসেবে দর্জিপাড়া গ্রামে দুই একর জমিতে টিউলিপ রোপণ করেছি। এ বছর বড় পরিসরে টিউলিপের চাষ শুরু করেছি। ফুল চাষে যারা দরিদ্র চাষিরা কাজ করছে তারাও স্বাবলম্বী হবে। বিশেষ করে পর্যটকদের সেবা প্রদানে এখানে টিউলিপ হোটেল দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব পর্যটক এখানে আসবেন, তারা হোটেলে স্থানীয় ঘরোয়া রান্না হিসেবে হাঁস-মুরগি, কবুতর মাংস, লাফা শাকের ঝোল, আলুর ভর্তা, শীদলের ভর্তাসহ তেঁতুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো এখানে খেতে পারবেন। তারা চাইলে রাত্রীযাপন করতে ইএসডিও মহানন্দা কটেজসহ এখানেও থাকতে পারবেন।