• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৩  

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, যে দেশকে একসময় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো, সে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এখন বলা হয় উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ৬ষ্ঠ ফুড অ্যান্ড এগ্রো বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩, ৬ষ্ঠ ইন্টারন্যাশনাল হেলথ ট্যুরিজম অ্যান্ড সার্ভিসেস এক্সপো বাংলাদেশ ২০২৩ এবং ১৪তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩- এর উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত এগিয়ে আসার কারণে দেশের এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। নীতি নির্ধারণসহ বেসরকারি খাতকে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলেই এ উন্নয়ন হয়েছে। এভাবে সরকারি-বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। তাই কাউকে পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনসাধারণের উন্নয়নের জন্যই শুধু নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে কাজ করছেন। তার দায়বদ্ধতা, আন্তরিকতা এবং নীতি নির্ধারণ বিশ্বনেতাদের প্রশংসা অর্জন করেছে। সম্প্রতি বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ও আইএমএফ প্রধানও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অসাধারণ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে ভিশন ও মিশন থাকতে হয় সেটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী করে দেখিয়েছেন। তাই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ শেখ হাসিনার শাসনামল বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। বর্তমানে এখন বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা শঙ্কা করেছিল করোনায় বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নীতি এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে মহামারি সত্ত্বেও দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে খাদ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার আমরা করছি। ফলে খাদ্য জাতীয় পণ্য তথা- ধান, গম, ভুট্টা, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম এমন উৎপাদন হয়েছে এবং এর গুণগতমান এত ভালো যে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে এখন অনেক কিছু আমদানি করছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত মাছ এখন বিশ্বের ৫২ দেশে রপ্তানি হয়। পৃথিবীর অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে মাংস আমদানি করতে চাইছে। দেশে উৎপাদিত নানা ধরনের খাদ্য সামগ্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উৎপাদিত ওষুধ পৃথিবীর বহু দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ওষুধ শিল্পে যান্ত্রিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্য সেবা এবং অন্যান্য গবেষণায় যে উন্নয়ন হয়েছে তা বিশ্বের বিস্ময়।

মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে দেশে শিশু মৃত্যু-মাতৃ মৃত্যুর হার কমেছে, গড় আয়ু বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ সরকার দেশে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের জোগান দিতে পারছে, উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে, মানুষের প্রশান্তির জন্য অন্য যেসব সহযোগিতা দরকার তা দিতে পারছে। প্রান্তিক পর্যায়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এক সময় বিপন্ন ছিল। এখন প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

দেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে এ সময় মন্ত্রী বলেন, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, ঢাকা-কক্সবাজার অত্যাধুনিক রেল সংযোগ, রাস্তার ব্যবস্থা- কী না হচ্ছে বাংলাদেশে। দেশে কোনো মানুষ খাদ্যের অভাবে থাকে না, চিকিৎসার অভাবে কোনো মানুষ মারা যায় না। দেশের সব বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। সব জেলায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। মানুষকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। এর সবই সম্ভব হয়েছে দেশের মানুষের সদিচ্ছা, রাষ্ট্রীয় উপযুক্ত পলিসি এবং সরকার প্রধানের নিরলস প্রচেষ্টায়। রাষ্ট্র নাগরিকের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে চায়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খুরশিদ ইকবাল রেজভী, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নিলুফার নাজনিন, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদ এবং চেন্নাই ফার্টিলিটি সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. ভি এম থমাস। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন সেমস গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম।

সেমস গ্লোবালের আয়োজনে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ২৫ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ৬ষ্ঠ ফুড অ্যান্ড এগ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ৬ষ্ঠ ইন্টারন্যাশনাল হেলথ ট্যুরিজম অ্যান্ড সার্ভিসেস এক্সপো এবং ১৪তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।