• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

কর্ণফুলী টানেলের কাজ প্রায় শেষ, উদ্বোধনের অপেক্ষা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৩  

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের ৯৭ ভাগ কাজ শেষ। প্রকল্প কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটি খুব শিগগিরই সবার জন্যে খুলে দেয়া হবে। 

এদিকে ট্যানেলের দুই প্রান্ত পতেঙ্গা ও আনোয়ারার বাসিন্দারা জানান, সরাসরি যুক্ত হওয়ার জন্যে তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। উদ্বোধনের দিন তারা মেতে উঠবেন যোগাযোগ উৎসবে। 

পদ্মা সেতুর পর দেশের আরেক স্বপ্নের প্রকল্প কর্নফুলী টানেল। নদীর তলদেশে এই টানেলের মাধ্যমে কর্নফুলীর দুই পাড়ে সেতুবন্ধন রচনার কাজ এখন প্রায় শেষের পথে। 

চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা ও দক্ষিণের আনোয়ারাকে যুক্ত করবে দুই টিউববিশিষ্ট একাধিক লেনের এই টানেল।যাকে বলা হচ্ছে ওয়ান সিটি টু টাউন। 

অর্থাৎ কর্ণফুলী টানেলের কল্যাণে পিছিয়ে পড়া আনোয়ারাও একটি সুপরিকল্পিত নগরীর রূপ পাবে। নদীর তলদেশ দিয়ে কম সময়ে যাতায়াত করা যাবে। 

কমে আসবে ঢাকা থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দূরত্ব। সব মিলে স্বপ্নের এই প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯৭ শতাংশই শেষ। জানালেন প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ। 

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ও চীনের সরকারি পর্যায়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। টানেলটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার অর্থ সহায়তা দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা দিচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। 

তিন দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দুই টিউবের এই টানেলে থাকছে দুটি করে মোট চারটি লেন। পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের জন্য থাকছে ৮টি ফ্যান ও ১২৬টি জেট ফ্যান। 

টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে থাকছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এছাড়া আনোয়ারা প্রান্তে থাকবে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারপাস। 

এই টানেল দিয়ে ঘন্টায় ৮ হাজার যানবাহন চলাচল করতে পারবে। যা বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুগান্তকারি ভূমিকা রাখবে। 

কর্ণফুলী টানেলকে ঘিরে এরিমধ্যে নদীর দক্ষিণ পাড়ে নানা রকম শিল্প কারখানা গড়ে উঠতে শুরু করেছে। বিনিয়োগ হয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। 

আনোয়ারা প্রান্তে থাকা কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইপিজেড, সিইপিজেড, মাতারবাড়ি গভীর সমূদ্র বন্দর, মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনবে এই টানেল। 

পাহাড় থেকে নেমে আসা নদী কর্ণফুলী। ফলে নদীটি বিপুল পরিমাণ পলি বহন করে। নদীর সেতু করা হলে সেতুর পিলারে পলি জমে ভরাট হয় নদী। 

সেই বিবেচনায় টানেল কর্ণফুলীর জন্য পরিবেশগত ভাবেও সহায়ক হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদ অধ্যাপক ইদ্রিস আলী। 

এই টানেলকে ঘিরে যেনো নতুন করে সেজে উঠছে চট্টগ্রামের দুই প্রান্ত। টানেল চালুর পর বিপুল কর্মযজ্ঞের অপেক্ষায় চট্টগ্রামের মানুষ। দুই প্রান্তে তৈরি হচ্ছে দুটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি। 

কর্ণফুলী টানেল দেশের জিডিপিতে অবদানের পাশাপাশি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যে সুদূর প্রসারী অর্থনৈতিক প্রভাব রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।