• শুক্রবার ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৮ ১৪৩১

  • || ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আহত শিক্ষার্থীদের জন্য ‘একগুচ্ছ পরিকল্পনা’ সরকারের

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

কোটা সংস্কার থেকে আন্দোলন থেকে সরকার পতন। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা। ছাত্র আন্দোলনে পটপরিবর্তন হয়েছে দেশে। টানা সাড়ে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাড়া দিয়েছিল সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অনেক শিক্ষার্থী আহত-নিহত হয়েছেন। যাদের ত্যাগে রাষ্ট্রের পটপরিবর্তন হয়েছে তাদের কল্যাণে কাজ শুরু করেছে সরকার।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আহত সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের জন্য ‘একগুচ্ছ পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের ১ মাস পূর্তি উপলক্ষে সেই পরিকল্পনার কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

সোমবার সচিবালয়ের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিনি এসব পরিকল্পনার বিষয়ে জানান।

এসব পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা, অর্থ সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং ইন্টার্নশীপ করার সুযোগ। স্বল্পমেয়াদী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় থাকছে, আহত শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে “নিবেদিত ফিজিওথেরাপী” সেবা। হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয় এবং উপজেলা রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত ১ হাজার ৬২৮ জন শিক্ষার্থী-জনতাকে মোট ৭৫ লাখ ৩ হাজার ৬২০ টাকার সেবা প্রদান। ১ হাজার জনকে মানসিক সেবা প্রদান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী-জনতার জন্য তথ্যভাণ্ডার প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এছাড়া গুরুতর আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান। খুব শীঘ্রই ‘ইন্টার্নশীপ নীতিমালা-২০২৩’-এর আওতায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন অনুবিভাগ/অধিশাখা/শাখা এবং অধীনস্থ দফতরে চার (৪) মাস মেয়াদে বারো (১২) জন ছাত্র-ছাত্রীকে ইন্টার্নশীপ প্রদান করা হবে।

আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী-জনতার মধ্যে বিনামূল্যে হইল চেয়ার ও হিয়ারিং এইড দেওয়া হবে। আহত শিক্ষার্থী-জনতার মধ্যে যারা নড়াচড়া কম করতে পারে, তাদের জন্য মোবাইল ভ্যান দিয়ে বাড়ির দোরগোড়ায় সেবা দেওয়া। জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের ৬৪ জেলায় “বিশিষ্ট সমাজকর্মী” হিসেবে তারুণ্যের প্রতিনিধিকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুতই তালিকা প্রকাশ করা হবে।

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় ও তারুণ্যকে দেশের সেবায় কাজে লাগানোর জন্য অ্যাকশন রিসার্চ গ্রহণ করা হবে যার ফলাফল পরবর্তীতে জন সম্মুখে উপস্থাপন করা। সমাজসেবা অধিদফতরের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করা হবে।

শারমীন এস মুরশিদ বলেন, একাত্তরে অন্যায় হয়েছিল, এর বিরুদ্ধে বীর বাঙালি রুখে দাঁড়িয়েছিল। ২০২৪ সালেও অন্যায় হয়েছে, এবার আমাদের সন্তানেরা রুখে দাঁড়িয়েছে। তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময় এক নতুন বাংলাদেশ দিয়ে গেছে। আমরা যে রাষ্ট্র বা সমাজ নির্মাণ করেছিলাম আমাদের বাচ্চাদের সে সমাজ বা রাষ্ট্রব্যবস্থা পছন্দ হয়নি। তারা এক নতুন রাষ্ট্র নির্মাণে রাস্তায় নেমেছে রুখে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা ন্যায় অন্যায়ে স্থূল ছিলাম। কিন্তু বাচ্চারা আমাদের শিক্ষা দিয়েছে যে অন্যায় আর সহ্য করাবো না। এ বাচ্চারা আমাদের শেকড়কে নাড়া দিয়েছে। আমি গর্বিত ড. ইউনূসের দলে অন্তর্ভুক্ত হতে পেরে। আমরা স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবো। বিনির্মাণ না হলে নির্মাণ করা যায় না। মেরামত সংস্কার ও পুনর্গঠন করতেই হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা শুরু করতে হবে।

সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, তরুণদের সুস্থ করে মূল ধরার নিয়ে আসতে হবে। তাদের একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একটি সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে যে সময় লাগবে তার চেয়ে একদিনও বেশি আমরা ক্ষমতায় থাকবো না বা আপনারা যখন মনে করবেন আমাদের প্রয়োজন নেই, সে পর্যন্ত আমরা থাকবো। আমাদের লক্ষ্য জাতিকে একটি নির্ভুল নির্বাচন উপহার দেওয়া।