• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

বিদেশে অর্থপাচারকারীদের তথ্য চেয়েছেন হাইকোর্ট 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২০  

বিদেশে অর্থপাচারকারীদের যাবতীয় তথ্য চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই তথ্য হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে দুই সচিব ও কয়েকটি সংস্থার শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে। একই সঙ্গে বিদেশে অর্থপাচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অর্থপাচারকারীদের জাতীয় বেইমান আখ্যায়িত করে উচ্চ আদালত অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ সবার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

তথ্য দাখিলের জন্য স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রসচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফইইউ) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন এ নির্দেশের পাশাপাশি চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে তাঁদের।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই নির্দেশ দেন এবং রুল জারি করেন। আদালত বলেছেন, অর্থপাচারকারীরা দেশ ও জাতির শক্র। তাঁরা জাতীয় বেঈমান। দেশে পড়াশোনা করে দেশের মাটিতে থেকে দেশের বাইরে টাকা পাচার করবেন, এগুলো দেখা দরকার।

গত ১৮ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে ১৯ ও ২১ নভেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এই আদেশ দেন হাইকোর্ট। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

আদালত বলেন, বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশি টাকা কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে চলে যাচ্ছে এবং যাঁরা এ টাকা নিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের বেশির ভাগই হলেন সরকারি কর্মকর্তা। এই যে টাকাগুলো নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা জানা দরকার। তাঁরা কিভাবে অর্থপাচার করলেন, কিভাবে বিদেশে বাড়ি তৈরি করলেন এটা জানা দরকার, না হলে তো অপরাধটা কমবে না।

এ সময় দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, এটা সংস্কৃতি হয়ে গেছে।

আদালত বলেন, দেশের মাটিতে থাকব, দেশে পড়াশোনা করব, কিন্তু দেশকে ঠকিয়ে দেশের টাকা দেশের বাইরে পাচার করব—এটা তো হতে পারে না। এটা কিভাবে সম্ভব? দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকলে এটা কখনো করতে পারে না।

আদালত বলেন, ‘আমরা দুর্বৃত্তদের সুযোগ দিতে পারি না। দেশের টাকা অবৈধভাবে চলে যাবে? আমাদের এতগুলো আইনগত সংস্থা, কোর্ট আছে। আমাদের অবশ্যই এগুলো বন্ধে কাজ করতে হবে। যদি আমরা এদিকে মনোযোগ না দিই, যদি দেশকে উন্নত করার জন্য কাজ না করি, তাহলে কিভাবে দেশ উন্নত হবে।  আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করতে চাই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। অর্থপাচার দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘রাজনীতিবিদরা নন, বিদেশে বেশি অর্থপাচার করেন সরকারি চাকুরেরা। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে, কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য এসেছে, যদিও এটি সামগ্রিক তথ্য নয়, সেটিতে আমি অবাক হয়েছি। সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাঁদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকে। আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এ ছাড়া কিছু আছেন আমাদের তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরো তথ্য সংগ্রহ করছি। পাচারে শুধু কানাডা নয়, মালয়েশিয়াতেও একই অবস্থা। তবে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন। বিভিন্ন মিডিয়ায় যে তথ্য বের হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, আসলে সংখ্যাটি তত নয়।’