• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

বঙ্গবন্ধুর চার খুনীর রাষ্ট্রীয় খেতাব স্থগিতে হাইকোর্টের নির্দেশ 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০  

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় দণ্ডিত চার খুনীর মুক্তিযুদ্ধের জন্য পাওয়া রাষ্ট্রীয় খেতাব স্থগিত করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মন্ত্রী পরিষদ সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সেইসঙ্গে তাদের খেতাব বাতিলে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি হয়েছে। এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। গত ১ ডিসেম্বর রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস।

তিনি আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ওই চার খুনী হলো- শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নুর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন ওরফে মুসলেম উদ্দিন। তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার দণ্ডিত এ চার আসামির খেতাব বাতিলে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারির করেছে সর্বোচ্চ আদালত। এ রুল পেন্ডিং থাকা অবস্থায় তাদের খেতাব স্থগিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রিট পিটিশনে এ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রকম খেতাব কেড়ে নেয়ার নজির আছে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, নিউজিল্যান্ড, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের নজির আবেদনে পেশ করা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান। রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান সাংবাদিকদের বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তারা মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের যে খেতাবগুলো দেয়া হয়েছে সেটা তাদের কারও অধিকার না। রাষ্ট্র তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে, রাষ্ট্র চাইলে সে খেতাব কেড়েও নিতে পারে।

রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৭৩ সালে সাতজনকে বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জনকে বীর উত্তম, ১৭৫ জনকে বীর বিক্রম ও ৪২৬ জনকে বীর প্রতীক উপাধি দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালের একই সময়ে বছরের ১৫ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়। নূর চৌধুরীকে বীর বিক্রম, শরীফুল হক ডালিমকে বীর উত্তম, রাসেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দীনকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়া হয়। এর বৈধতা নিয়েই রিটটি করা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার দীর্ঘদিন পর আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি রাতে পাঁচ খুনী সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমেদ ও এ কে এম মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এছাড়া গত ১১ এপ্রিল রাতে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনী আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তবে এখনও পলাতক পাঁচ খুনীর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও নুর চৌধুরী কানাডায় রয়েছেন বলে সরকার নিশ্চিত হয়েছে। খন্দকার আবদুর রশিদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেহ উদ্দিন কোন দেশে অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার।

অবকাশকালীন চেম্বার জজ হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ॥ সুপ্রীমকোর্টের অবকাশকালীন আপীল বিভাগের মামলা সংক্রান্ত জরুরী বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য চেম্বার জজ হিসেবে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে মনোনীত করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। সুপ্রীমকোর্টেও আপীল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোঃ বদরুল আলম ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবকাশকালে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২৩ ডিসেম্বর ও ৩০ ডিসেম্বর চেম্বার কোর্টে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বেলা ১১টা থেকে মামলার শুনানি গ্রহণ করবেন। সুপ্রীমকোর্টের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনাকালীন বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান চেম্বার আদালতে মামলা পরিচালনার দায়িত্বভার পালন করে আসছিলেন।