• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

দুই প্রকল্প গ্রহণ: নিরাপদ মহাসড়ক নিশ্চিতে আধুনিক প্রযুক্তি

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২২  

দুই প্রকল্প গ্রহণ: নিরাপদ মহাসড়ক নিশ্চিতে আধুনিক প্রযুক্তি              
দেশে সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চলার কারণেই সিংহভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। আর এজন্য হতাহত হচ্ছে বহু মানুষ। তাই মহাসড়ক নিরাপদ করতে আধুনিক ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম’ (আইটিএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুটি প্রকল্পের আওতায় এই প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রায় পৌনে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। দুই মহাসড়কে স্বয়ংক্রিয় আইটিএস প্রযুক্তির ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্থাপনের মাধ্যমে সড়ক পর্যবেক্ষণ করা হবে।

জানা গেছে, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে নির্ধারিত সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার। কিন্তু বাস্তবে সব চালক এই মহাসড়কে ওঠার পর গতির নেশায় মেতে ওঠে। বেশি গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, ঘটছে অনেক প্রাণহানি। গত শুক্রবার রাজেন্দ্রপুর এলাকার রাস্তায় হঠাৎ করে দ্রুতগতির একটি বাস রাস্তার ওপর ব্রেক করে। বাসের পেছনে থাকা একটি মোটরসাইকেল তখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুই আরোহী আহত হয়। মোটরসাইকেলের গতি বেশি থাকায় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। মহাসড়কে যানবাহনের এই বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে এবার উন্নত বিশ্বের মতো ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম’ (আইটিএস) প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দুটি প্রকল্পের আওতায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ পরীক্ষামূলকভাবে এ ব্যবস্থা চালু করবে। এর আওতায় ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ৪০ কিলোমিটার এবং জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে রংপুর পর্যন্ত ২৬০ কিলোমিটার রয়েছে। এই দুই মহাসড়কে নিরবচ্ছিন্ন আইটিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এটি বাস্তবায়ন করবে।

আইটিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে মহাসড়কে সব যানবাহনের ওপর নজরদারি বাড়ানো হবে। এটি দ্রুত গতি নিয়ন্ত্রণে চালকদের বাধ্য করার পাশাপাশি তাদের নিয়ম ভাঙার বিরুদ্ধে ত্বরিৎ ব্যবস্থা এবং দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিক সহায়তা কার্যক্রমে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি পথে চালকরাও জানতে পারবেন তার বাহনের গতি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রয়েছে কিনা। নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবেন। একই সঙ্গে কন্ট্রোল রুম থেকে ‘ভেহিকল ডিটেক্টিভ সিস্টেমের’ মাধ্যমে কোনো গাড়ি নির্ধারিত গতি অতিক্রম করলে সেটিকে চিহ্নিত করা যাবে।

এই আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামছুল হক বলেন, সড়কে বেপরোয়া গতির কারণেই বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে সড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে সবকিছু মনিটরিং করছে। প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে চালকরাও সতর্ক থাকছে। এসব ব্যবস্থাপনার কারণে দুর্ঘটনা কম হচ্ছে। আমাদের এখানেও সড়ক-মহাসড়কে গতি নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি হয়ে পড়েছে। সব সড়ক-মহাসড়রক আধুনিক আইটিএস বা অন্যান্য প্রযুক্তিগত সহায়তা নেয়া এবং তা মনিটর করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমবে বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দুই হাজার ৬৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় তিন হাজার ৩৫৮ জন প্রাণ হারায়। ২০২১ সালে তিন হাজার ২০৪টি দুর্ঘটনায় তিন হাজার ৭৭৬ জন নিহত হয়। আর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে তিন হাজার ২৫১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ যানবাহনের বেপরোয়া গতি।