• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

‘ফেক নিউজ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে’

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

‘ফেক নিউজ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে’                    
ফেক নিউজ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা কমিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। ফেক নিউজের বিস্তার সাধারণ খবরের থেকে অনেক দ্রুতগতিতে হয়। আবার অনেক সময় সেই নিউজের উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না। ফেক নিউজ বাংলাদেশের মানবাধিকারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে বেসরকারি সংস্থা এলকপ আয়োজিত "ফেক নিউজ: মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে এ কথা তুলে ধরা হয়।

সেমিনারের প্রথম সেশনে ‘ফেক নিউজ: সার্ক ও ব্রিকস্‌ভুক্ত (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক জোট) দেশসমূহে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সেলিম সামাদ।

তিনি তার প্রবন্ধে ফেক নিউজ নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ এশিয়া ও ব্রিকস্‌ভুক্ত দেশসমূহের সম্মিলিত প্রচেষ্টার অভাবকে চিহ্নিত করেছেন। প্রথম সেশনের পরবর্তী অংশে ‘ফেক নিউজঃ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ শিরোনামে পেপার উপস্থাপন করেন এলকপের  গবেষক আরেফিন মিজান। তিনি তার প্রবন্ধে আলোচনা করেন কিভাবে ফেক নিউজ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা কমিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।

 ‘একজন আর দশ জনকে শিখাই’ স্লোগানের মাধ্যমে ফেক নিউজ প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে তাঁর প্রবন্ধ উপস্থাপনা শেষ করেন। উক্ত সেশনে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে অধ্যাপক ডক্টর আবুল বারাকাত, ভারত থেকে ডক্টর অর্ঘ্য সে্নগুপ্ত এবং পুলকেশ ঘোষ। ডঃ বারাকাত বলেন ফেক নিউজকে মোকাবিলা করতে যুগোপযোগি আইনি কাঠামো, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহের অঙ্গিকার, ও নাগরিক সমাজের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

ড. অর্ঘ্য বলেন যেহেতু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ফেক নিউজ ছড়াচ্ছে, সেহেতু প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে।

সেমিনারের দ্বিতীয় সেশনে ‘ফেক নিউজ: সার্ক ও ব্রিকস্‌ভুক্ত দেশসমূহে মানবাধিকারের জন্য হুমকি’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এলকপের গবেষক অরুপ রতন সাহা। তিনি তার প্রবন্ধে মানবাধিকারের উপর ফেক নিউজের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করার পাশপাশি এসব দেশে যেসকল আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন। এরপর এলকপের গবেষক মোঃ জহির উদ্দিন সোহাগ ‘ফেক নিউজঃ বাংলাদেশের মানবাধিকারের জন্য হুমকি’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি তার উপস্থাপনায় তুলে ধরেন কিভাবে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহের উত্থান ও পপুলিজমের কারনে ফেইকে নিউজ এর দ্রুত বিস্তার হয় এবং এর ফলশ্রুতিতে সাধারণ জনগণ উত্তেজিত হয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করতে পারে।

ঊক্ত প্রবন্ধে উপস্থাপন করা হয়েছে কিভাবে ফেক নিউজ বাংলাদেশের মানবাধিকারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। উক্ত সেশনে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে অধ্যাপক ডঃ ইমতিয়াজ আহমেদ, নেপাল থেকে অধ্যাপক ডঃ যুবরাজ সাংরুলা, ভারত থেকে জয়ন্ত রায় চৌধুরী, ডঃ লোপামুদ্রা মৈত্রী বাজপাই, এবং রাশিয়া থেকে ‘স্পুটনিক’ নামক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ভাসিলি পুশকভ। নেপালের সাবেক এটর্নি জেনারেল ডঃ যুবরাজ বলেন ফেক নিউজ বন্ধ করার জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

প্রতিটি পর্ব শেষে উন্মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জহিরুল ইসলাম খান পান্না, কূটনীতিকদের মধ্যে নেপাল দূতাবাস থেকে ললিতা সিল্বাল , ফিলিস্তিন দুতাবশ হতে নুর আল্যেদি, রাশিয়ান দূতাবাসের উপদেষ্টা অ্যানটন চেরনভ, ও চীনা দূতাবাসের মিস ফি ইয়ু, আদিবাসি অধিকার বিষয়ক সংস্থার সভাপতি সঞ্জীব দ্রং, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এর সভাপতি কাজল দেবনাথ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক মোঃ বায়েজিদ হোসেন, নজরুল ইসলাম মিঠু, জে আই মামুন।

ফেক নিউজ প্রতিরোধের অঙ্গিকার নিয়ে এলকপের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বলের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে সেমিনারটি শেষ হয়।