• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

ইউক্রেনকে ন্যাটোর বাইরে রাখার দাবি প্রত্যাখ্যান করল যুক্তরাষ্ট্র 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০২২  

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো থেকে ইউক্রেনকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর শঙ্কার মধ্যে মস্কোর এ দাবি প্রত্যাখ্যান করা হলো।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানটনি ব্লিংকেন রাশিয়ার দাবির বিষয়ে তার দেশের অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ব্লিংকেন বলেছেন, ‘কূটনৈতিক পথে’ আসার আহ্বান জানাচ্ছেন, আর রাশিয়ার তা গ্রহণ করা উচিত। রাশিয়ার একজন মন্ত্রী বলেছেন, ন্যাটোর মাধ্যমে যে জবাব যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে, তা নিয়ে তারা আলোচনা করবেন।

ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণের আলোচনায় নিজেদের আপত্তি আর দাবির একটি তালিকা লিখিতভাবে দিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পথ পাকাপাকিভাবে বন্ধ করার দাবিও সেখানে ছিল।

এমনকি সেখানে ন্যাটোর সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হবে না- এমন প্রতিশ্রুতিও চেয়েছিল রাশিয়া। গত বছরের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফোনালাপের আগে-পরে মস্কো এসব দাবি সামনে আনে।

গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখের বেশি সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে রাশিয়া। পশ্চিমা দেশগুলো বলে আসছে, রাশিয়া যে কোনো সময় ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তারা মনে করছে। তবে রাশিয়া তা অস্বীকার করে আসছে।

ব্লিংকেন বলেছেন, তার দেশের মূল নীতিতে কোনো অস্পষ্টতা নেই। যুক্তরাষ্ট্র একই সঙ্গে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং ন্যাটোর মত কোনো সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার অধিকার রক্ষার পক্ষে।

তার ভাষায়, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার আন্তরিকতা নিয়ে কারও সন্দেহ থাকা উচিত নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র একইসঙ্গে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে সমান মনোযোগ দিচ্ছে, যাতে তারা রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন মোকাবেলা করতে পারে।

“বিষয়টি এখন নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর, তারাই ঠিক করবে, তারা কীভাবে সাড়া দেবে। যে সিদ্ধান্তই তারা নিক, আমরা প্রস্তুত আছি।”

চলতি সপ্তাহেই ‘সামরিক সহায়তার’ তিনটি চালান ইউক্রেইনে পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র, এন্টি আর্মার উইপন এবং কয়েকশ টন গোলাবারুদ রয়েছে সেসব চালানে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেদেশের সরকারে ‘মস্কোপন্থি কাউকে বসানোর ষড়যন্ত্র’ করছেন বলেও এ সপ্তাহে অভিযোগ তোলে যুক্তরাজ্য।

ব্রিটিশ মন্ত্রীরা হুঁশিয়ার করেছেন, ইউক্রেইনে হামলা হলে রাশিয়াকে ‘চরম পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।

পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে মতপার্থক্য বা বিভক্তির কথা অস্বীকার করেছেন ব্লিংকেন। তার ভাষায়, ন্যাটো নিজস্ব একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবগুলোকেই নিয়েই করা হচ্ছে।

ন্যাটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, তাদের জোটের বক্তব্য লিখিতভাবে মস্কোতে পাঠানো হয়েছে। রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়গুলো তারা শুনতে চান। কিন্তু নিজেদের মত করে প্রতিরক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার অধিকার সব দেশেরই আছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ অবশ্য ন্যাটো মহাসচিবের বক্তব্যকে ‘বাস্তবতাবিবর্জিত’ আখ্যায়িত করেছেন।

বুধবার রাশিয়ার পার্লামেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেইনে ন্যাটোর সামরিক শক্তি বৃদ্ধির বিষয়ে স্টলটেনবার্গের বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ল্যাভরভ বলেন, “আপনারা জানেন, তার বক্তব্যের বিষয়ে কথা বলা আমি অনেক আগেই বন্ধ করে দিয়েছি।”

ইউক্রেনবাসীরা সেদেশের রুশপন্থি প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করার পর রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালিয়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়।

তখন থেকেই রাশিয়ার পূর্ব সীমান্তের এলাকাগুলোর কাছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাশিয়া-সমর্থিত বিদ্রোহীদের যুদ্ধ চলে আসছে।