• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দুর্ঘটনাকবলিত করমন্ডল এক্সপ্রেসকে কেন অভিশপ্ত বলা হচ্ছে

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২৩  

ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ‘কিং’ বা রাজা বলা হয় করমন্ডল এক্সপ্রেসকে। কিন্তু সেই রাজার রাজ্যপাট যেন ওলট-পালট হয়ে গেল। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বালাসোরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস।

রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত বেড়ে ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৯০০ জনের বেশি। ট্রেনের ভেতর এখনো অনেকেই আটকা পড়ে আছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতীয় রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কলকাতাগামী বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছিল। চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঐ এলাকা পেরিয়ে যাওয়ার সময় লাইনচ্যুত ট্রেনের বগির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। করমন্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি ঘটনাস্থলে একটি মালবাহী ট্রেনের বগির ওপরও আছড়ে পড়ে। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই মারাত্মক ছিল যে করমন্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। 

তবে এই প্রথম দুর্ঘটনায় পড়ল না করমন্ডল এক্সপ্রেস। অতীতে এই ওড়িশায় একাধিকবার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এই ‘কিং’। যে ট্রেনে করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রচুর মানুষ চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে যায়। এমনকি বাংলাদেশের মানুষরাও এই ট্রেনে করে দক্ষিণ ভারতের ঐ শহরে গিয়ে থাকেন। অনেকে আবার কর্মসূত্রে চেন্নাইয়ে যেতে ট্রেনটি ব্যবহার করে থাকেন। ট্রেনটি আগে হাওড়া থেকে ছাড়ত। বর্তমানে শালিমার থেকে ছাড়ে এই করমন্ডল এক্সপ্রেস।

করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার ইতিহাস

১. ২০০২ সালের ১৫ মার্চ: অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলার কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে হাওড়া-চেন্নাই করমন্ডল এক্সপ্রেসের সাতটি কোচ। তাতে আহত হয়েছিলেন প্রায় ১০০ যাত্রী।

২. ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে জাজপুরে লাইনচ্যুত হয়েছিল হাওড়া-চেন্নাই করমন্ডল এক্সপ্রেস। সেই ঘটনায় ১৬ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন ১৬১ জন। ইস্ট-কোস্ট রেলের তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার অজয়কুমার গোয়েল জানিয়েছিলেন, জাজপুর রোডের কাছে করমন্ডল এক্সপ্রেসের ১৩টি কোচ লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছিল। দুটি স্লিপার কোচ ছিল। দুটি ছিল জেনারেল কোচ। ট্রেনের ইঞ্জিনও উলটে গিয়েছিল।

৩. ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ওড়িশার লিঙ্গরাজ স্টেশনের কাছে চেন্নাই-হাওড়া করমন্ডল এক্সপ্রেসের একটি কোচে আগুন ধরে গিয়েছিল। ইস্ট-কোস্ট রেলের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, ইঞ্জিনের পর যে দু’ নম্বর কোচ (জেনারেল কোচ) ছিল, তাতে আগুন ধরেছিল। তবে বড় কোনও বিপদ হয়নি। অন্য কোচে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছিল।

৪. ২০২৩ সালের ২ জুন: ওড়িশার বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে যায় শালিমার-চেন্নাই করমন্ডল এক্সপ্রেস। লাইন থেকে ছিটকে যায় ১৫টি বগি। সেইসঙ্গে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি।