• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সম্পর্কে টানাপোড়েনের সমাধান আপনার হাতেই

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

 
আমার প্রেমে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না, আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না', সৈয়দ মুজতবা আলীর মতোই বলা যায় সম্পর্ক কিংবা অনুভূতি—এইগুলো সব সময়ই ব্যক্তিবিশেষে আলাদা। কথা কাটাকাটি, মনোমালিন্য, ঝগড়াঝাঁটি সব সম্পর্কেই থাকে।

অনেকেই আছেন যারা সম্পর্কের এই ধরনের টানাপোড়নের সঙ্গে সমঝোতা করে নেন। আবার অনেকে সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ারও চিন্তা ভাবনা শুরু করেন। সম্পর্কগুলোতে আন্তরিকতা, সহানুভূতি আর সহমর্মিতার মাধ্যমে সম্পর্কের টানাপোড়নই দূর করে সম্পর্ককে আরও মধুর করে তোলেন।

সম্পর্কের টানাপোড়েন দূরে সবার প্রথমে সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে ও বোঝার চেষ্টা করতে হবে কেনো দূরত্বের সৃষ্টি হচ্ছে। জানতে হবে আপনাদের সম্পর্কের মধুরতায় বাধা হয়ে আছে কোন ব্যাপারটি। বুঝতে হবে সেই কারণটিকে। যখন আপনি কারণটি জানতে পারবেন এবং সেটি বুঝতেও পারবেন তখন আপনার পক্ষে অনেক সহজ হবে সমস্যাটি নিয়ে সঙ্গীর সাথে কথা বলে সমাধান করার ক্ষেত্রে। সুতরাং প্রথমে দেখুন, খুঁজুন, বুঝে নিন , শুনুন ও পরে সমাধানের পথ খুঁজুন।

অনেক ক্ষেত্রেই সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যায় তা নিয়ে খোলাখুলি কথা না বললে। দেখা যায় দুজনেই সমস্যাটি জানেন কিন্তু কথা বলে ঠিক করে নিতে এগুচ্ছেন না কেউই। এতে করেই দুজনের মধ্যে দূরত্ব আরও বেরে যায়। যখনই সমস্যাটি ধরতে পারবেন সব থেকে ভালো হচ্ছে সঙ্গীর সাথে সেটি সময় পেলেই আলোচনা করে নেয়া। এতে করে সম্পর্কে স্বচ্ছতা আসে। একজন আরেকজনকে বোঝার ক্ষমতা বাড়ে।

ক্ষমা করার মনোভাব রাখুন। কথা কাটাকাটি, মনোমালিন্য, ঝগড়াঝাঁটির সময় অনেক নেতিবাচক কথা বলা হয় দু পক্ষ থেকেই। কিন্তু এই নিয়ে ধরে বসে থাকলে সম্পর্কের দূরত্ব বাড়তে থাকে। মনে রাখতে হবে রাগের মাথায় কিংবা মানসিক চাপের মুখে মানুষ নানা কথাই বলতে পারেন। কিন্তু তারা নিজেরাই পরে বুঝতে পারেন কথাগুলো ভুল ছিল। তাই কথা নিয়ে বসে থাকবেন না। ক্ষমা করে দেয়ার মনোভাব রাখুন। সে আপনার সঙ্গী। ভালো মন্দ মিলিয়েই সে আপনার সাথে ছিলেন এবং থাকবেন। কোন কথায় দুঃখ পেলে তাকে ক্ষমা করে দিন। দুপক্ষের ক্ষমাসুলভ আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি আপনাদের সম্পর্কের টানাপোড়ন অনায়াসেই দূর করতে পারবে।

যদি আপনি ওপরের সব কাজই করে থাকেন কিন্তু এরপরও সম্পর্কে নতুন কোন আকর্ষণ খুঁজে না পান তাহলে বুঝতে হবে আপনি যতটুকু ভাবছেন আপনাদের সম্পর্কের টানাপোড়ন এর থেকেও অনেক বেশি। তখন আপনি পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন বিজ্ঞদের থেকে। আপনি ম্যারেজ কাউন্সেলরের সাথে পরামর্শ করতে পারেন, বিশ্বস্ত ও বিজ্ঞ পারিবারিক কার সাথে এ ব্যাপারে আলাপ করে দেখতে পারেন। আপনাকে পরামর্শ গ্রহণ করতে বলার মানে এই নয় যে তারা যা বলবেন তাই আপনাকে মেনে নিতে হবে। পরামর্শ গ্রহণ করুন, নিজের বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে বিশ্লেষণ করুন তারপরে কোন সিদ্ধান্তে আসুন। 

পরস্পরের আর্থিক দিক নিয়ে বাড়াবাড়ি বা হস্তক্ষেপ করতে না যাওয়াই ভালো। এতে সম্পর্ক আরও খারাপ হতে পারে। বাড়তে পারে ভুল বোঝাবুঝিও। তাই সম্পর্ক ভালো রাখা এবং ভুল বোঝাবুঝি দূর করার খাতিরে এই বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে।

কথায় কথা বাড়ে। অনেক সময় সমঝোতার মনোভাব নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেও সেটা ঝগড়ায় গড়ায়। লিখে ফেলতে পারেন মিষ্টি একটি প্রেমপত্র। নিজের সব অনুভূতিগুলোকে গুছিয়ে লিখে ফেলুন একটি চিরকুটে। এরপর প্রিয়জনকে সেটা পড়তে দিন। প্রেমপত্র দেবার মাধ্যমেই তার রাগ অনেকটা কমিয়ে আনতে পারবেন। আর এটি পড়ার পরে তো আপনাদের মাঝে কোনও রকমের ভুল বোঝাবুঝি থাকবার কথাই নয়!

মনোমালিন্যের সময় সঙ্গীর সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় আলাপ করতে হবে। এখানে রাগ করে থাকা চলবে না। কিছুটা সময় দিতে হবে। এতে সমস্যা সমাধানের সহজ পথ খুঁজে পাবেন। তবে বিরক্তি এবং রাগ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন।

যেকোনো সম্পর্কের ভেতরেই স্বাধীনতা থাকা জরুরি। এই স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না অনেকেই। কিন্তু স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার কারণে সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হয়। কিছু বিষয়ে আপনার অধিকার সবার আগে, তবে কিছু বিষয়ে ছাড়ও দিতে হবে। সম্পর্কে স্বাধীনতা থাকলে তাতে ভুল বোঝাবুঝির ভয় কম থাকে।