• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

নীলফামারীতে টোলের আড়ালে `চাঁদাবাজি`!

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২১  

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার আমবাড়ী হাটে টোল আদায়ে চলছে চাঁদাবাজি। গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের দ্বিগুণের বেশি টোল আদায়ের অভিযোগ ওই হাটের ইজারাদারের বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত টোলের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, প্রতিটি গরু বিক্রিতে সরকার নির্ধারিত টোল ২১০ টাকা। সেখানে আদায় করা হচ্ছে ৫০০ টাকা। একইভাবে প্রতিটি ছাগলে ৯০ টাকার স্থলে ২০০ টাকা, বাইসাইকেল ৪৫ টাকার স্থলে ২০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য, হাঁস-মুরগি ও বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে। ওই টোল আদায়ে সকল ক্ষেত্রে ছাপানো রশিদ প্রদান করার কথা থাকলেও কেবলমাত্র ছাগল, গরু এবং বাইসাইকেলের রশিদ প্রদান করা হয়। তবে এসব রশিদে টোল আদায়ের টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই।

ওই হাটে গরু বিক্রেতা চিলাহাটি এলাকার স্বাধীন (৩৫) বলেন, ‘হাটে একটি গরু বিক্রি করতে ইজারাদার হাসিল লেখায় (টোল আদায়ের রশিদ) নিয়েছে ৫০০ টাকা। এর আগেও এ হাটে গরু বিক্রি করেছি, সে সময়ের ইজারাদার কম নিয়েছিলেন।’

পাঙ্গামুটুকপুর ইউনিয়নের পাঙ্গা গ্রামের গরু ক্রেতা সফিজ উদ্দিন (৪৫) বলেন, ‘অন্যান্য হাটের চেয়ে এ হাটে টোলের পরিমাণ বেশি। চলতি সনে (ইজারার বাংলা সাল) নতুন ইজারাদার টোল বাড়িয়েছেন।’

জেলার ডিমলা উপজেলার টুনিরহাট দোহলপাড়া গ্রামের গরু ব্যবসায়ী মো. সুলতান বলেন, ‘হাটে সরকারি টোলের তালিকা টানানো কথা থাকলেও সেটি নেই। ফলে কেউ বুঝতে পারছেন না টোলের পরিমাণ কত?'

হাটের হাসিল (রশিদ) লেখক গোলাম রব্বানী (২৩) ও আব্দুল খালেক (৫৫) বলেন, ‘ইজারাদার যেভাবে নির্দেশনা দেন আমরা সেভাবেই কাজ করি।’ আদায়কৃত টোলের পরিমাণ রশিদে লিখছেন না কেন প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'সেটি লেখা নিষেধ আছে। আর ওই রশিদে টোলের পরিমাণ লেখার ঘরও নেই।’

এ বিষয়ে হাটের ইজারাদার মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি ১৪২৮ (বাংলা) সনের জন্য ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় হাটটি আমি ইজারা নিয়েছি। করোনার কারণে হাটে কেনা বেচা কম হচ্ছে। লোকসান তুলে নিতে গরু, ছাগল ও বাইসাইকেল ক্রয়-বিক্রয়ে হাসিল প্রতি টোল বেশি নেওয়া হচ্ছে। তার পরও অন্যান্য হাটের তুলনায় আমরা কম নিচ্ছি। এর পরেও প্রশাসনিক দিক নির্দেশনা পেলে সেভাবে কাজ করবো।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম বলেন, ‘সরকারিভাবে প্রতিটি গরুর টোল ২১০ টাকা নির্ধারণ করা আছে। সেখানে ৫০০ টাকা নেওয়া কোনোভাবে উচিৎ না। একইভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও তারা সরকারি দরের চেয়ে বেশি নিতে পারবেন না। ওই হাটে টোল বেশি নেয়ার কথা মৌখিকভাবে শুনেছি। কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। আমরা হাটে গেলে তাদের (ইজারাদারের) লোকজন আগে থেকে সেট করা থাকে। তারা এসে আমাদের কাছে বলেন, সরকারি দরে টোল আদায় হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ এবং সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সরকার নির্ধারিত টোলের তালিকা হাটে টানানোর বিষয়ে তিনি বলেন,‘আমি তাদের তালিকা টনানোর জন্য নির্দেশনা দিব। এর পরেও না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’