• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরে হাতছানি দিচ্ছে ৩০ কোটি টাকার ফসল     

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১  

তিস্তার বুকে জেগে ওঠা রুপালী বালুচর এবার ঢাকা পড়েছে সবুজের চাদরে। বন্যার ধকল কাটিয়ে ফসলের মাঠে চলছে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রাণান্তর চেষ্টা। সবকিছু ঠিক থাকলে নীলফামারীর ডিমলা আর জলঢাকা উপজেলায় জেগে ওঠা তিস্তা নদীর ২৩টি চরে উৎপাদন হবে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকার ফসল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমের প্রলয়ঙ্কারী তিস্তায় এখন নেই তেমন একটা প্রবাহ। শীতের শুরুতে নদীতে প্রবাহ নেই বললেই চলে। জেগে উঠেছে চর। দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত রুপালী বালুচরে সবুজের সমারোহ। চরগুলোতে ভুট্টা, সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, তরমুজসহ ১০ ধরনের ফসল চাষ করছে কৃষকরা। সেই ফসল ঘিরেই আগামীর স্বপ্ন বুনছেন নদী পাড়ের মানুষ।

নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী, খালিশা চাপানী, টেপাখড়িবাড়ী, পূর্ব ছাতনাই, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী ও সউলমারী ইউনিয়নে তিস্তার ২৩টি চরে তিন হাজার ২৭৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে এসব ফসল। ডিমলায় দুই হাজার ৯৪৫ হেক্টর ও জলঢাকায় ৩২৮ হেক্টর জমি চরবেষ্টিত। গেল বন্যায় কাটা ধানসহ সহায় সম্বল হারানো মানুষগুলো এখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফসল উৎপাদনে। 

ঝুনাগাছ চাপানী চরের জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত আমন মৌসুমে হঠাৎ বন্যার কারণে ধান ঘরে তুলত পারিনাই। জমিত কাটি থোয়া ধান বানির পানিত ভাসি গেইছে। যেগুলা পাকা ধান কাটার অপেক্ষায় আছিল তাও বানের পানিত তলে থাকি পচি নষ্ট হয়া গেইছে। ভাত খাওয়ার মতো কোন ধান ঘরে তুলিবার পাই নাই। এবার ৭৫ শতক জমিত ভুট্টা চাষ করছি। ভুট্টা লাগার পরে এখন সার আর তেলের দাম বাড়ি গেইছে। কাটা মাড়াইর সময় যদি ভুট্টার দাম না বাড়ে তাহইলে এবারও হামরা মাঠে মরে যামো। তার উপর এই আবাদ করছি দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থাকি সুদের টাকা নিয়া। ফসল উঠলে বিক্রি করি আগোত সুদসহ টাকা দিবার নাইগবে। তাই সরকারের কাছোত দাবি তেল ও সারের দাম কমে দিলে হামরা বউ-ছাওয়া নিয়া বাচমো।’

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গত বর্ষায় তিস্তার উজানের ঢলে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার দুইটি বাঁধ ভেঙে ৮২৬ হেক্টর জমিতে পানি প্রবেশ করে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকার চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রণোদনার আওতায় আনা হচ্ছে তাদের। কৃষকরা যেভাবে ফসলের পরিচর্যা করছে তাতে এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকলে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে।