• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

জলঢাকায় ভ্যান চালিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে আদর 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২১  

বাবা অসুস্থ থাকায় কদিন হয় বাবার ভ্যান হাতে নিয়ে দারিদ্র পরিবারের দায়িত্ব ঘাড়ে নিয়েছে ছেলেটি। তবে কে জানত সেই ভ্যান চালাতে চালাতে শুনবে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। বলছি সদ্য ২০২১ সালের এস এস সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করা কাওসার হোসেন আদরের কথা।

সে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা কাজির হাট পন্ডিত পাড়ার অলিয়ার হোসেনের ছেলে। দুই ভাই বোনের মধ্যে আদর বড়। সে জলঢাকা পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শাখা থেকে এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

স্থানীয়রা জানান, আদরের বাবা অলিয়ার রহমান ভ্যান চালানোর পাশাপাশি অন্যের জমি চাষ করে খুব কষ্ট সংসার চালায়। মাঝে মাঝে বাবা যখন অসুস্থ বা জমিতে কাজ করত তখন আদর ভ্যান নিয়ে যায় অসহায় পরিবারের সহায়তার জন্য। অন্যান্য বাচ্চাদের থেকে সে খেলাধুলা পড়াশুনায় এগিয়ে থাকত সব সময়। আদরের এমন সাফল্যে খুশি হলেন স্থানীয়রা।

আদরের বাবা অলিয়ার রহমান জানান, কয়েকদিন থেকে আমি অসুস্থ, ঠান্ডায় ভ্যান চালাতে পারি না। অভাবের সংসার, আদর এসব দেখে নিজেই ভ্যান নিয়ে যায়। আদরের হাত খরচ ও চলে বাড়িতেও দেয়। তিনি বলেন, আদর প্রায় প্রাইভেটের টাকা চাইত আমি দিতে পারতাম না বলতাম যে পড়াশোনা করে লাভ নাই কাজ কর। তবে আজ আমার মন ভরে গেছে। সবাই বলছে অলিয়ারের ছেলে পাস করেছে।

আদরের সহপাঠী আলিফজা আক্তার জানায়, আদর খুব ভাল বন্ধু এবং অনেক মেধাবী। সে যেমন সবাইকে হাসি খুশি রাখত তেমন পড়াশুনায় ভাল।

দারিদ্র্যতাকে জয় করা আদর জানায়, আমি একটু বাইরে ছিলাম। যখন শুনলাম রেজাল্ট দিছে তাড়াতাড়ি করে ভ্যান নিয়ে স্কুলে যাই। স্যারের থেকে শুনলাম যে আমি জিপিএ-৫ পেয়েছি। তখনি খুশিতে আমি আত্মহারা হয়ে যাই। আল্লাহ আমার কষ্টটা দেখছে।

পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান জানান, ছেলেটা খুব মেধাবী। অভাবের সংসারে কাজের পাশাপাশি পড়াশুনা করে। অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মত প্রাইভেট পড়ার সুযোগ ও কম পেয়েছে। তার এমন রেজাল্টে খুশি আমরা।

আদরের এমন সাফল্যে খুশি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক। তিনি জানান, আদর তার কাঙ্ক্ষিত ফল সে নিজেই নিয়ে এসেছে। অভাবের দারিদ্র্যতা উপেক্ষা করে সে যেভাবে তার সাফল্য এনেছে সে ধারা যেন তার শিক্ষা জীবনে অব্যাহত থাকে।