• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

তিস্তার সেচে ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা       

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানিতে তিন জেলার ১২ উপজেলার পাঁচ লাখ ১২ হাজার কৃষক বোরো রোপণে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বোরো ধান চাষে জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। অনেকে জমিতে হাল দিচ্ছেন। কেউ করছেন চারা রোপণ। আবার অনেকেই জমিতে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে ১৮ হাজার হেক্টর, ২০১৬ সালে ১০ হাজার হেক্টর, ২০১৭ সালে আট হাজার হেক্টর, ২০১৮ সালে ৩৫ হাজার হেক্টর এবং ২০১৯ সালে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, নীলফামারী সদর, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর, রংপুর জেলার সদর, বদরগঞ্জ, তারাগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর, খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলায় সেচের পানি দেয়া হবে রোটেশন অনুযায়ী।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০০৩ সালে সেচ কার্যক্রম শুরু করে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প। টারশিয়ারী ও সেকেন্ডারি মিলে ৭৬০ কিলোমিটার ক্যানেল থেকে এ সেচ সুবিধা দেয়া হয় কৃষকদের। বছরে বিঘা প্রতি ১৬০ টাকা নেয়া হয় কৃষকদের কাছ থেকে এবং একর প্রতি (তিন বিঘা) নেয়া হয় ৪৮০ টাকা।

নীলফামারীর ডিমলার নাউতরা শালহাটি গ্রামের কৃষক ও ক্যানেল তীরবর্তী বাসিন্দা সাজু মিয়া জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি এবার চাহিদামতো পাওয়া যাচ্ছে। ক্যানেলের পানিতে বিঘা প্রতি খরচ হয় দেড়শ থেকে ২০০ টাকা।

একই গ্রামের সমসের আলী বলেন, ‘ক্যানেলের পানিতে আবাদ করি হামরা ভালো আছি। শ্যালো দিয়া আবাদ করলে খরচ বেশি পড়ি যায়। ক্যানেলের পানিতে আবাদও ভালো হয়।‘

পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি কিশোরগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সেচ পাম্প বা শ্যালো মেশিন দিয়ে বোরো আবাদে খরচ হয় অন্তত ১০ হাজার টাকা। সেখানে তিস্তা সেচ প্রকল্পে মাত্র ৪৮০ টাকায় সেচ সুবিধা পাচ্ছি।

জলঢাকা উপজেলা পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি খাইরুল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি দিয়েই বোরো আবাদ করি। খরচ কম, সময়মত পানিও পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, তিস্তা সেচের ফলে বোরো আবাদে খরচ অনেক কম হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী শামীম জানান, পানির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতে পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যেখানে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক সেখানে ততটুকু পানি দেওয়া হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী শামীম বলেন, তিস্তা ব্যারেজ রির্জাভারে ১৫ হাজার কিউসেক পানি রয়েছে। যা দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হওয়া এলাকায় পানি দেওয়া সম্ভব। ফেব্রুয়ারির দিকে নদীর পানি কমতে থাকে। এরপরও রোটেশন অনুযায়ী দিলে সমস্যা হয় না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদৌলা জানান, এবার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী মৌসুমে আরও বেশি এলাকায় দেয়ার চেষ্টা থাকবে। কারণ আগের চেয়ে এখন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, পুরো মৌসুম সেচপ্রকল্প এলাকায় মনিটরিং করা হবে। কেউ পাইপিং করে পানি নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।