• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেলেন সৈয়দপুরের সেই বাশার  

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২২  

বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেলেন সৈয়দপুরের সেই বাশার                     
হতদরিদ্র ঘরের সন্তান আবুল বাশার এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার এই সাফল্যে তার পরিবার, এলাকা ও নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বইছে খুশির বন্যা।

গত ৩০ জুন বুয়েটের ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিলেন বাশার। আর সেই তালিকা থেকে নেভাল আর্কিটেক্ট অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

এ ছাড়া বাশার এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১ হাজার ৭০২তম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ষষ্ঠতম স্থান অর্জন করেন।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ওয়াপদা গেট খলিফাপাড়া এলাকার তসলিম উদ্দীন ও বিউটি বেগম দম্পতির ছেলে আবুল বাশার। তার বাবা পেশায় একজন দরজি। বাবার সেলাইয়ের কাজের স্বল্প আয় দিয়েই চলে তাদের চারজনের পরিবার।

বাশার ২০১৯ সালে স্থানীয় সানফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ২০২১ সালে একই প্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ-৫ পান। আগে থেকেই বাশারের স্বপ্ন ছিল বুয়েটে পড়াশোনা করবেন। অভাব-অনটন আর সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হলো।

মা-বাবার মতো বাশারও ছিলেন পরিশ্রমী। তবে সংসারে অভাব থাকা সত্ত্বেও সন্তানের পড়ালেখার ক্ষতি হবে, তাই তাকে কোনো কাজ করতে দেননি মা-বাবা।

আবুল বাশার বলেন, ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে উঠেছি। মা-বাবাকে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে দেখেছি। সকাল হলে বাবা চলে যান কাজে, আর মা সংসারের কাজে ব্যস্ত। অর্থাভাব ও শত কষ্টের মাঝেও নিজেকে প্রস্তুত করি। ভাবতাম একদিন বুয়েট থেকে প্রকোশলী হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করব। মা-বাবার দুঃখ-কষ্ট দূর করব। আল্লাহর মেহেরবানিতে বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়ে সেই স্বপ্নের পথে এগিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমার সাফল্যের পেছনে শিক্ষক ও মা-বাবার অবদানই বেশি। অনেক শিক্ষক আমাকে এ পর্যায়ে আসতে অনেক সহযোগিতা করছেন।

বাশারের মা বিউটি বেগম বলেন, আমার ছেলের সাফল্যে আমরা গর্বিত। অনেক কষ্ট করেছে আমার ছেলে। ছোটবেলায় ও কাগজ কেটে বাড়ি বানাত, উড়োজাহাজ দেখলেই দৌড়ে ঘর থেকে বের হতো। বলত, বড় হয়ে আমি ইঞ্জিনিয়ার হব। ছেলের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় জীবনের দুঃখ-কষ্ট ভুলে গেছি।

সৈয়দপুর সানফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান বলেন, আবুল বাশারের এ সাফল্যে আমরা শিক্ষকরা অনেক খুশি ও গর্বিত। ও শুধু পড়ালেখায় নয়, সব দিক দিয়েই খুব ভালো ছেলে। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তিই তাকে এ সফলতা এনে দিয়েছে।