• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত জাহাঙ্গীরকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় দাফন

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২২  

শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত জাহাঙ্গীরকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় দাফন             
আগামী রোজার ঈদে বাড়ি ফেরার কথা ছিল সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের (২৬)। তার আগেই বাড়ি আসলো, তবে কফিন বন্দি হয়ে। জাহাঙ্গীরের মরদেহ দেখে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।  

শনিবার(১৫ অক্টোবর) দুপুরে নামাজে জানাজায় অংশ নেয়া শত শত মানুষের অশ্রæধারায় “পূর্ণ সামরিক মর্যাদা” প্রদানের মাধ্যমে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিন তিতপাড়া গ্রামে  পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী সদস্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমকে।

দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের লতিফুর রহমান ও গোলেনুর বেগমের পাঁচ ছেলের মধ্যে জাহাঙ্গীর তাদের চতুর্থ সন্তান। নিহত শহীদ জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শিমু আক্তার(২০)। স্ত্রী সহ স্বজনদের গগনবিদারক কান্না গ্রামটিকে ভারী করে তুলে গ্রামটিকে। 

এ সময়  বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে গার্ড অব অনার, কফিনে জাতীয় ও সেনাবাহিনীর পতাকা প্রদান করেন বীর উত্তম শহীদ মাহবুব সেনানিবাস খোলাহাটির ২০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির ক্যাপ্টেন তানজিদুল ইসলামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল। জাহাঙ্গীরের কফিনে শান্তিরক্ষা মিশনের পতাকাও মোড়ানো ছিল।

সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর গত ৩ অক্টোবর সোমবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে মোতায়েন করা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন কালিন এক বিষ্ফোরণে নিহত হয়েছিলেন। ঘটনার ১৩ দিন পর  কফিন বন্দী করে দেশে এনে জাহাঙ্গীর আলমকে তার গ্রামে দাফন করা হলো। 

এ সময় জানাজা ও দাফনে অংশ নেন নিহত সৈনিক জাহাঙ্গীর বাবা লতিফুর রহমান, ৪ ভাই যথাক্রমে আবুজার রহমান, আমজাদ হোসেন, আলমগীর হোসেন, বাদশা মিয়া সহ অন্যান্য স্বজনদের সাথে শতশত গ্রামবাসী, এবং নীলফামারী ১ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার, উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, ডিমলা থানা ওসি লাইছুর রহমার প্রমুখ। 

এর আগে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী হতে  নিহত  সৈনিক জাহাঙ্গীরের মরদেহ শনিবার সকাল সারে আটটায় ঢাকায় আনা হয়। সেখানে সেনাবাহিনীর পক্ষে মরনোত্তর সালাম প্রদান শেষে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় জানাজা শেষে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে আকাশ পথে জাহাঙ্গীর আলমের কফিন সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার “রানী বৃন্দা রানী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়” মাঠে আনা হয়। হেলিকপ্টার থেকে কফিন নামিয়ে  মরনোত্তর সাজোয়া গাড়ীর বহরে জাহাঙ্গীরের কফিন তার দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামে নেয়া হয়েছিল। সেখানেই জাহাঙ্গীর আলমের কফিন ঘিরে স্বজনদের আহাজারি চলছিল। তার পর জানাজা শেষে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানেই  দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়।

জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই সেনা সদস্য আবুজার রহমান বলেন, '২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয় জাহাঙ্গীর। এক বছর আগে বিয়ে করেছিল। ১০ মাস আগে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষা মিশনে যায় জাহাঙ্গীর। ২০২১ সালের ৯ নবেম্বর থেকে সে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের পশ্চিম সেক্টরের বোয়ার এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক ব্যাটালিয়নের (ব্যানব্যাট-৮) সঙ্গে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত ছিল।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন নির্দেশ মোতাবেক আমরা বীর সৈনিক শহীদ জাহাঙ্গীর আলমের মরদেহ ডিমলা নিয়ে এসে জানাজা ও দাফন পর্যন্ত সকল কার্যক্রমে সেনাবাহিনীকে সহযোগীতা করা হয়েছে।