• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

‘রাস্তা হইছে, স্কুল হইছে, আর কোনো চিন্তা নাই’

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২৩  

  
‘আগে এইলা রাস্তা ছিল কাঁচা-কাঁদা-ভাঙা। আমরা ভারত না বাংলাদেশের, এ নিয়ে থাকতে হতো ভয়ে। এখন আমরা সব সুযোগ-সুবিধা পাই। পাকা রাস্তা হইছে, স্কুল হইছে। আর কোনো চিন্তা নাই। আমরা ভালো আছি।’

কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারীর ডিমলার উপজেলার বিলুপ্ত ৩১ নম্বর বড় খানকিনগর জিগাবাড়ী ছিটমহলের বাসিন্দা বেলাল হোসেন। শুধু তিনি না, ছিটমহল বিলুপ্ত হওয়ার পর দেশের সাধারণ নাগরিকের মতো সবধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা।

বহুল আলোচিত বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয় ২০১৫ সালে। এরমধ্যে দিয়ে ৬৮ বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন ছিটমহলের বাসিন্দারা। আট বছরে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। উন্নত জীবনের পাশপাশি সবধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আত্মমর্যাদার সঙ্গে বাস করছেন নীলফামারীর বিলুপ্ত চারটি ছিটমহলের বাসিন্দারা।

একসময় এসব ছিটমহলগুলোতে পাকা সড়ক আর বিদ্যুতের আলো ছিল স্বপ্ন। সন্তানের লেখাপড়া করাতে হতো মিথ্যা পরিচয়ে। ছিল না জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থাও। কিন্তু মাত্র আট বছরে বদলে গেছে বিলুপ্ত ছিটমহলের চিত্র। শিক্ষাসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এখানকার বাসিন্দারা পাচ্ছেন সবধরনের সুযোগ-সুবিধা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ডিমলা উপজেলার অভ্যন্তরে থাকা ২৮ নম্বর বড় খানকিনগর গিদালদহ ছিটমহল, ২৯ নম্বর বড় খানকিনগর খারিজা গিদালদহ, ৩০ নম্বর বড় খানকিনগর গিদালদহ ছিটমহল ও ৩১ নম্বর বড় খানকিনগর জিগাবাড়ী ছিটমহল মিলে মোট ১০৮ একর জমিতে ১২০টি পরিবারের ৫৫০ জন বসবাস করেন। বর্তমানে এখানকার বাসিন্দারা পাচ্ছেন বাংলাদেশ সরকারের বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা। জাতীয় পরিচয়পত্র, নাগরিক সনদসহ জমির কাগজপত্র সব কিছুই করতে পারছেন তারা। নির্মিত হয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

স্থানীয় নরেন বাবু বলেন, ‘এখন আর আগের মতো আমরা নেই। সবকিছু পাই। বয়স্ক ভাতা হয়েছে অনেকের। বিধবা ভাতাও পেয়েছে। বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করে দিচ্ছি কোনো ঝামেলা ছাড়াই। এখন সবমিলে কোনো সমস্যা নেই।’

খারিজা গিদালদহ এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘২০১৫ সালের আগে নিজের পরিচয় ছিল না। এখন আইডি কার্ড পাইছি। আগের তুলনায় অনেক ভালো আছি।’

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর উন্নয়নে সরকার একের পর এক কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। আরও কীভাবে মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখা যায় সেজন্য আমাদের নানামুখী চেষ্টা চলছে।