• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

সর্বশেষ:
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই আইন হিসেবে গণ্য হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ২৫ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত।

৩ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, হত্যাপ্রক্রিয়া নিয়ে জল্পনা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

নীলফামারীতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন আশিকুল মোল্লা বাবু নামের এক ব্যবসায়ী। তৎক্ষণাৎ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।

পরে বাড়ির ঘরের ভেতরে একটি বিছানায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও দুই মেয়ের মরদেহ।

আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের কেউই ঘটনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনও ধারণা দিতে পারছেন না। এছাড়াও একই বিছানায় মরদেহ তিনটি পাশাপাশি রাখায় পুরো হত্যাপ্রক্রিয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা।

গুরুতর জখম আশিকুল হক মোল্লা সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুর রউফ মোল্লার ছেলে। তিনি কাঠ ও আসবাবের ব্যবসা করেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেন।

সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারা যাওয়া তিনজন হলেন- আশিকুলের স্ত্রী তহুরা বেগম (৩৫), তাদের বড় মেয়ে আয়েশা আক্তার তানিয়া (১১) ও ছোট মেয়ে জারিন আক্তার (৬)।

আশিকুলের ছোট বোন সাথী আক্তার (২৭) বলেন, ভাই দীর্ঘ ছয় মাস ধরে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ ছিলেন। শ্বশুড়বাড়ি থেকে আমি প্রতি সপ্তাহে এসে ভাইয়ের খোঁজখবর নিয়ে যেতাম। বৃহস্পতিবার ভাবির সাথে আমার কথা হয়েছিল, ভাবি আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল- কখন আসবে। আমি ভাবিকে বলেছিলাম, শুক্রবার সকালে যাব।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সকালে মোবাইল ফোনে খবর পাই- ভাবি ও আমার দুই ভাতিজি আর বেঁচে নেই, ভাইকে গলাকাটা অবস্থায় রংপুরে নেওয়া হয়েছে। এরপর এখানে এসে লোকজনের কাছে শুনি, ভাবি ও তার দুই মেয়েকে হত্যা করে গলাকেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ভাই। কী কারণে এবং কেন এমন ঘটনা ঘটাল তার কোনও কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছি না।

এদিকে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে নীলফামারী সদর থানায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার অভিযোগে আশিকুল হক মোল্লাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম।

তিনি ঢাকা বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে নিহত গৃহবধুর ভাই আসাদুজ্জামান নূর আসাদ বাদী হয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশি পাহারায় গুরুতর জখম আশিকুল হক মোল্লা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দাড়োয়ানী বন্দর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীরা খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় রংপুর সিআইডি ক্রাইম সিনকে খবর দেওয়া হয়।

পরে বেলা পৌনে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেন সিআইডি ক্রাইম সিনের সদস্যরা। বিকেল চারটার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেয়। এ সময় বিছানার পাশে সবজি কাটার রক্তাক্ত চাকু (কাটারি) উদ্ধার করে পুলিশ।