• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

বিএনপিতে সক্রিয় হচ্ছে তৃতীয় পক্ষ 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২১  

একের পর এক নির্বাচনে পরাজয়। খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের মতের অমিল এবং দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিএনপি এখন তিন ভাগে বিভক্ত। রয়েছে তারেকপন্থী এবং খালেদাপন্থী পক্ষ। তৃতীয় পক্ষটি খালেদা-তারেকবিহীন। তারা চায় এ দুজনকে মাইনাস করে নতুন করে বিএনপিকে ঢেলে সাজাতে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময় বিএনপির হাইকমান্ড থেকে বঞ্চনার শিকার সিনিয়র নেতারা রয়েছেন এ তৃতীয় পক্ষে। আরো রয়েছেন তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে বিনা কারণে শোকজ পেয়ে অপমানিত হওয়া নেতারা। এমনকি এক এগারোর সময় বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতারাও রয়েছেন এ তৃতীয় পক্ষে।

বিএনপির সংস্কারপন্থী এক সিনিয়র নেতা জানান, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর আবারো কোনো হোমওয়ার্ক ছাড়া উপ-নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়ে দলকে এবং নেতাকর্মীদের মানসিকভাবে হেয় করার কোনো অর্থ নেই।

তিনি আরো বলেন, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হওয়ার পর তার মুক্তির দাবিতে যথাযথ আন্দোলন না করা, নির্বাচনে যাওয়া, প্রার্থী চূড়ান্তকরণ, সংসদে যোগ দেওয়াসহ বেশিরভাগ সিদ্ধান্তই ছিল শুধু তারেক রহমানের। কোনোটিতেই রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়নি বিএনপি। লাভবান হয়েছেন তার পছন্দের কিছু নেতা এবং তিনি নিজে।

এদিকে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে বিভাজন রয়েছে। দলীয় রাজনীতিতে তারেক রহমানের স্বেচ্ছাচারিতা এবং অসুস্থ খালেদা জিয়ার রাজনীতি থেকে দূরে সরে থাকাসহ নানা মেরুকরণে ক্রমাগতভাবে প্রান্তিক হতে থাকা দলটিতে বিরুদ্ধতা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে টিকে থাকতে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দল থেকে ছেঁটে দিতে তৎপর এ তৃতীয় পক্ষ। এরই মধ্যে তারা নিজেদের গুছিয়ে নিতে কাজও শুরু করেছেন।

বিএনপির গোপন একটি সূত্র জানায়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলের কর্মসূচির বাইরের কার্যকলাপে অংশ নেয়া বেশ কিছু নেতার মধ্যে অন্তত ১২ জন দলের হাইকমান্ডের নজরদারিতে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও দলের সঙ্গে আগে থেকেই দূরত্ব বাড়তে থাকা এসব নেতারা তাতে কর্ণপাত করেননি। তাদের সন্দেহজনক গতিবিধি, কার্যকলাপ এবং দলীয় কর্মসূচিতে অনেক দিন ধরেই অংশ না নেয়ার ফলে সন্দেহ তৈরি হয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বে।

জানা যায়, তৃতীয় পক্ষ হিসেবে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন এক এগারোর সময়ে যেসব নেতা দলের মূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে সংস্কার প্রস্তাব এনেছিলেন, তাদের বড় একটি অংশ। তারা সংস্কারপন্থী নেতা মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে কাজ করছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ আমান, শোকজ খাওয়া বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদসহ প্রাক্তন ছাত্র নেতাদের একটি অংশও রয়েছে এ পক্ষে।

বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির দলীয় কোন্দল নতুন বিষয় নয়। দলটি সৃষ্টির পর থেকেই এতে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। তবে এবার হয়তো দলটি ভেঙ্গে আবার নতুন করে গড়ে উঠতে পারে। কেননা খালেদা জিয়া অসুস্থতা এবং বার্ধক্যজনিত কারণে রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। এদিকে তারেক রহমানও পলাতক। তার দেশে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এমতাবস্থায় দলের হাল তো কাউকে না কাউকে ধরতেই হবে।