• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

ভোগ বিলাস নয়, উন্নয়নের জন্য আ.লীগের ক্ষমতায় আসা দরকার: হানিফ

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২২  

ভোগ বিলাস করার জন্য নয় বরং দেশের উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগের আবারও ক্ষমতায় আসা দরকার বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে ভোগ বিলাসে মত্ত ছিলো। তাদের লক্ষ্য ছিলো ক্ষমতায় থাকা। যার কারণে দেশের উন্নয়নে, মানুষের কল্যাণে তারা কোনো কাজ করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়ন, অগ্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসা দরকার।

বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শাহ আলী থানা অন্তর্গত ৮ ও ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, ভিশনারি লিডার ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বৈষম্যের চিত্র বেরিয়ে আসতে থাকলে সেই সময় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বাঙালি জাতির জন্য নতুন রাষ্ট্র প্রয়োজন। তিনি স্বাধীন, ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে লড়াই করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, পতাকা, সংবিধান সবই হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পর আজ আমরা প্রধানমন্ত্রী শেক হাসিনাকে দ্বিতীয় ভিশনারি লিডার হিসেবে পেয়েছি। লিডার ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব হয় না। আজ তিনি তা প্রমাণ করেছেন।

দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ টানা ২২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। মালয়েশিয়ার মানুষের মাথাপিছু আয় ১৬ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। লি কুইন টানা ২০ বছর সিঙ্গাপুরের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজ তাদের মাথাপিছু আয় ৭৯ হাজার মার্কিন ডলার। তারা ভিশনারি লিডার ছিলেন। আমরা সেই নেতা পেয়েছি বলেই আজ বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে ২৮৬০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে। ১ কোটি মানুষের কমসংস্থান হবে। ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় বাড়বে। ভিশনারি লিডারশীপ আছে বলে দেশকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা ২০৪১ উন্নত বাংলাদেশ দেখতে পাবো।

বিএনপি নেতারা বলছেন, এক এগারোতে শেখ হাসিনা আপোষ করেছিলেন। অথচ বিএনপির হাত ধরে তো এক এগারোর উৎপত্তি হয়েছে। তারা ক্ষমতায় বসেই শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করেছিলো, তাকে কেন গ্রেফতার করা হবে? তিনি তো সেই সময় ক্ষমতায় ছিলেন না। তিনি ক্ষমতা ছাড়ার পর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছিলেন। ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা যদি অনিয়ম করতেন খালেদা জিয়া কি ছেড়ে দিতেন? এমন প্রশ্ন রেখে হানিফ বলেন, আপোষ করলে খালেদা জিয়া করেছেন। শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের কয়েকমাস পর সেপ্টেম্বর শেষ দিকে খালেদাকে গ্রেফতার করা হয়। এতেই প্রমাণ হয় কে আপোষ করেছিলো।

বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে আওয়ামী লীগ সরকারকে দায় নিতে হবে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। রাজনৈতিক কমী হিসেবে আমরা চাই তিনি সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরুক। তবে এটা মানতে হবে তিনি আদালত কর্তৃক দণ্ডিত। সরকার তার বিরুদ্ধে মামলা করেনি। এক এগারোর সময় মামলা হয়েছে। আদালত দণ্ড দিয়েছে। সরকার কিছু করেনি, তাহলে কেন আমাদেরকে দায় নিতে হবে?

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়ে কারাগার থেকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত ছিলো। সরকার কি বলেছিলো, আমরা কি বলেছিলাম এতিমের টাকা আত্মাসাৎ করতে? এসময় বিএনপি নেতাদেরকে বিভ্রান্তিমূলক কথা পরিহার করার আহবান জানান তিনি।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, স্লোগান রাজনীতির অংশ তবে এটা পরিপূর্ণ রাজনীতি নয়। তৃণমূলের মাধ্যমে জনমত গঠন হয়। শুধু স্লোগান নির্ভর হলে হবে না। তৃনমূল আওয়ামী লীগকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে। মানুষের কাছে যাবেন, সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরবেন। ১৬ কোটি মানুষের আশা, ভরসা ও আস্থার জায়গা শেখ হাসিনা। যত ষড়যন্ত্রই হোক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু ও সহ-প্রচার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হামিদ।

শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টু এমপি'র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম মোল্লা'র সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।