• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

বিএনপি নিচু মানসিকতার রাজনীতি করে: মাহবুবউল আলম হানিফ

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২২  

বিএনপি নিচু মানসিকতার রাজনীতি করে: মাহবুবউল আলম হানিফ             
বিএনপি নিচু মানসিকতা ও প্রতিহিংসার রাজনীতি করে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছিল। আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ১০ হাজার মা-বোনকে পাশবিক নির্যাতন করেছে। ২০০৪ সালে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এসবের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় আওয়ামী লীগ নয় বরং বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে।

শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল দশটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে 'মুজিব তুমি শোক নও, মুজিব তুমি শক্তি, যুগ মহাযোগ মহাকালে তুমি নিপীড়িত বাঙালির মুক্তি' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ৫ সেপ্টেম্বর জন্ম নিয়েছিলেন। তার পিতা এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেছিলেন। আর এখন জাতীয় শোকের দিনে খালেদা জিয়া মিথ্যা জন্মদিন পালন করে উল্লাস করেন। নিচু মানসিকতার এ রাজনীতি বিএনপি করতে পারে।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। দুই বছর করোনার কারণে বিশ্ব বিপর্যস্ত ছিল। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হেয়েছে। বিশ্ব সংকটের কারণে সেই ধাক্কা আমাদের দেশেও লেগেছে। কিন্তু বিএনপি এই সুযোগে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এই সংকট সাময়িক। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠবো।

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগের পর থেকে বাঙালি জাতি ছিলো নির্যাতিত, নিপীড়িত। আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার পরও পশ্চিম পাকিস্তান শুরু থেকেই আমাদের শোষণ শুরু করেছিলো।

জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের প্রথম সৈনিক হিসেবে গ্রেফতার হয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, '৫২ ভাষা বন্দোলন, '৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, '৬২ শিক্ষা ও ৬৬ ছয় দফার মধ্য দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাঙালি জাতির মধ্যে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক আত্মনির্ভরশীল জাতি গড়ার স্বপ্ন ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী তাকে বারবার গ্রেফতার করেছিল। প্রায় ১৪ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তবুও বাঙালির দাবি আদায়ে পিছপা হননি, হুমকি-ধমকির ভয়ে ভীত হননি। তার লক্ষ্য ছিলো অবিচল। বঙ্গবন্ধু না হলে আজ এই স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পেতো না।

বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক নেতা হিসেবে উচুঁমানের নেতা ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়ে সাড়ে তিন বছরে দেশ পুনর্গঠিন করেছিলেন। রাজনৈতিক নেতৃত্বের চেয়ে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তার বেশি প্রাজ্ঞতা ছিলো। তিনি বিশ্বমানের নেতা ছিলেন। শূন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থাকার পরও তিনি দেশ গড়তে যা প্রয়োজন তার সবগুলো করেছিলেন। আর এর মধ্য দিয়ে ভিশনারি লিডার ছিলেন তা প্রমাণ করেছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, স্বাধীনতার মূল চেতনাকে হত্যা করা হয়েছিলো। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য তাকে হত্যা করা হয়নি। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান ও তাদের দোসর পশ্চিমা মহাশক্তিধর রাষ্ট্র এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলো।

হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দণ্ডপাপ্ত অনেকের রায় কার্যকর হয়েছে। কয়েকজন আত্মস্বীকৃত খুনী পালিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাকে অনুরোধ করবো বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী দণ্ডপ্রাপ্তরা যদি আপনাদের দেশে থাকে তাদের ফিরিয়ে দিন। আমরা তাদের বিচারের রায় কার্যকরে মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে চাই।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মুল নেপথ্যে ছিলেন জিয়াউর রহমান- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় যারা মূল চক্রান্তকারী তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়নি। জিয়াউর রহমান তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রমাণ রেখে গেছেন তিনি জড়িত ছিলেন। আত্মস্বীকৃত খুনীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। খুনী ফারুক বলেছেন, জিয়া বলেছিলেন তোমরা এগিয়ে যাও, আমি আছি।

ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে বাঙালি ছিলো অল্পশিক্ষিত জাতি। নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন ছিলো না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা। তিনি জানতেন ছাত্ররা জাগ্রত সমাজ, অধিকার আদায়ে সোচ্চার। সে সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের আগে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তোলার জন্য। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত কোনো ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করতে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ সকল শহিদ স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগ।

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি। এছাড়া বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহার।আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগ সভাপতি রাজিয়া সুলতানা কথা।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সোহেলী সুলতানা সুমী, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রোজিনা নাছরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফরিদা পারভীন, ইমাম সুলতানা স্মৃতি, ছাত্রলীগের সাবেক উপ-ছাত্রবৃত্তি সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মাহমুদ সালাউদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক।