• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ভৈরব রেলস্টেশন: ১০ দিন আগেও পাওয়া যায় না টিকেট 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্টপেজ ভৈরব রেলস্টেশন। অথচ এ স্টেশনে আসনের তুলনায় যাত্রী সাড়ে সাত গুণ। অথচ টিকেট বরাদ্দ মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ, একটি টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়ান ৭৫ যাত্রী।
ভৈরবে ট্রেনের টিকেট যেন সোনার হরিণ। এ স্টেশনে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী মহানগর প্রভাতি এক্সপ্রেসের যাত্রী চার শতাধিক। অথচ টিকেট বরাদ্দ মাত্র ৪৩টি। যার অর্ধেক চলে যায় অনলাইনে। এসব টিকেট আবার কিনে নেন অন্য স্টেশনের যাত্রীরা। এ অবস্থায় ১০ দিন আগে লাইনে দাঁড়িয়েও মেলে না কাঙ্খিত টিকেট। বাধ্য হয়ে স্ট্যান্ডিং টিকেট কেটে সীমাহীন দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে ট্রেনে চড়েন হাজারো যাত্রী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকার টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন শতাধিক যাত্রী। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কাউন্টারে গিয়ে জানাতে পারছেন সিট নেই।

ভুক্তভোগী যাত্রী মিজান বলেন, ট্রেনে সিট না পেলে ভোগান্তি আরো বাড়ে। এ স্টেশনে সিট ও টিকেট বাড়াতে হবে।

ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, কয়েক বছর ধরে ১০ দিন আগে এসেও প্রথম শ্রেণির টিকেট পাওয়া যায় না। জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যেতে হলে এখন আর ট্রেনে চড়ি না।
বিসিসি কর্মকর্তা আরো বলেন, এ গ্রেডের একটি স্টেশনে যাত্রী সেবার মান এমন হতে পারে না। এখানে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত বেঞ্চ নেই, ওভারব্রিজ ও টয়লেটের অবস্থা জরাজীর্ণ। এমনকি রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বে অবহেলায় প্লাটফর্মে চুরি-ছিনতাই হচ্ছেই। 

স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা গেছে, ভৈরব হয়ে প্রতিদিন ২৪টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নরসিংদীর তিন হাজারের বেশি যাত্রী এ স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন শুধু টিকেট বিক্রির মাধ্যমেই রাজস্ব আয় হয় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা। যা প্রতি মাসে কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। রাজস্ব আদায়ে ঢাকা বিভাগে তৃতীয় ও সারা দেশে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভৈরব। এরপরও স্টেশনটির সেবার মান তলানিতে। যাত্রীদের দাবি, দ্রুত ট্রেনের আসন বৃদ্ধি, সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও স্টেশনের আধুনিকায়নে পদক্ষেপ নেয়া হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভৈরব রেলস্টেশনে কালনী এক্সপ্রেসের পাঁচশ যাত্রীর বিপরীতে আসন বরাদ্দ মাত্র পাঁচটি, চট্টলা এক্সপ্রেসের দুইশ যাত্রীর জন্য ৮০টি, এগারো সিন্দুর গোধুলীর তিনশ যাত্রীর জন্য ৪৩টি, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের দুইশ যাত্রীর জন্য ৪০টি, মহানগর এক্সপ্রেসের দুইশ যাত্রীর জন্য ৫০টি, মহানগর গোধুলী তিনশ যাত্রীর জন্য ৫০টি, উপবন ও তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসের দুইশ যাত্রীর জন্য ৪০টি আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিটি ট্রেনেই আসনের তুলনায় যাত্রী সাড়ে সাত গুণ।

ভৈরবের স্টেশন মাস্টার এ.কে.এম কামরুজ্জামান  বলেন, আমাদের স্টেশনের মতো আর কোনো এ গ্রেডের স্টেশনে এত যাত্রী চলাচল করে না। তাই আমরা যাত্রীদের চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে আসন বাড়ানোর প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।