করোনাভাইরাস: গুজবেই বিপদ
– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২০

বিদেশফেরত শুনে বাড়িতে ঢুকতে বাধা, গ্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে চাপ দেওয়া, কোভিড-১৯ এর লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির দাফনে বাধা, সম্ভাব্য রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ায় হাসপাতাল ভাঙচুর, অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরিতে বাধা- বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকেই এমন অনেক ঘটনার খবর মিলছে নিয়মিতই।
মূলত এই ভাইরাস নিয়ে গুজবনির্ভর ভুল ধারণার কারণেই এসব ঘটনা ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈজ্ঞানিক, অযৌক্তিক এবং অমূলক এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ নিজেদেরই ক্ষতি করছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআরের হিসাবে, রোববার (২৯ মার্চ) পর্যন্ত দেশে ৪৮ জন নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। এ রোগে মারা গেছেন এখন পর্যন্ত ৫ জন। আইইডিসিআর বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে বা নিজের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া নিরাপদ। বিদেশফেরত মানুষকেও নিজের বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ শুরু থেকেই দিয়ে আসছে আইইডিসিআর।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা এক নারী জানান, গত ২৩ মার্চ থেকে তার ৬৬ বছর বয়সী বাবার জ্বর, বমি, পেট খারাপ এবং বুকে ও পুরো শরীরে ব্যথা শুরু হয়। করোনাভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে মিল থাকায় অনেক চেষ্টা করে আইইডিসিআরে নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন। ২৭ মার্চ পাওয়া পরীক্ষার ফলে দেখা যায় তার করোনাভাইরাস নেই।
তিনি জানান, ২৮ মার্চ চিকিৎসককে দেখাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান তারা। রাত আটটায় বাসায় ফিরতে গেলে বাধা দেয় অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। তাদের আইইডিসিআরের প্রতিবেদন দেখানোর পরও কাজ হচ্ছিল না। শেষে পুলিশের শরণাপন্ন হন তারা।
“পুলিশ এসে তাদের দীর্ঘক্ষণ বুঝিয়ে শেষে বাসায় উঠিয়ে দিয়ে যায়। এর মধ্যে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা আমার অসুস্থ বাবাকে বাইরে থাকতে হয়েছে। আড়াই ঘণ্টা পর তারা আমার বাবা ভাইদের বাসায় ঢুকতে দেয়। আমার বাবা যতটুকু ফিট থাকার চেষ্টা করেছিল, মানুষগুলো তাকে ঠিক তার দ্বিগুণ কষ্ট দিয়ে অসুস্থ করে দিয়েছিল।” আবারও হেনস্তার শিকার হতে পারেন-এই শঙ্কায় পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন ওই নারী।
মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম মালয়েশিয়া থেকে ভারতে আসেন। ২১ মার্চ আবার মালয়েশিয়া ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। ১৮ মার্চ মালয়েশিয়া লকডাউন করায় ভারত থেকে দেশে আসেন তিনি।
মাহবুব আলম জানান, সাভারের বাসায় গেলে উঠতে দেয়নি প্রতিবেশিরা। পরে টাঙ্গাইলে নানাবাড়ি গেলে সেখানেও বাধার মুখে পড়েন তিনি।
“ওইখানে আমাদের আলাদা বাড়ি। ভেবেছিলাম হোম কোয়ারেন্টিনের জন্য ভালো হবে। কিন্তু কিভাবে যেন জানতে পেরে গ্রামের কয়েকশ মানুষ চলে আসে। তারা বলে যে সেখানে থাকা যাবে না। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শেষে আমি সেখানে থাকতে পারি।”
“আমি সংক্রমিত না হওয়ার পরও আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরা এমন আচরণ করেছে। লোকজন এভাবে প্যানিক তৈরি করলে মানুষ তো পঞ্চাশ ভাগ অসুস্থ এমনিতেই হয়ে যাবে।” দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশফেরতদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া কোভিড-১৯ আক্রান্ত সন্দেহে মারা গেছে এই অজুহাতে গত ২৮ মার্চ বগুড়ার শিবগঞ্জে এক ব্যক্তির লাশ দাফনে বাধা দেয় স্থানীয়রা। ঢাকার খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানেও কোভিড-১৯ এ মারা যাওয়া দুই ব্যক্তিকে দাফন করতে বাধা দেয় এলাকাবাসী। পরে তাদেরকে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। ২২ মার্চ রাজধানীর উত্তরায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি ও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয়রা। শনিবার তেজগাঁওয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল তৈরির কাজে বাধা দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. নজরুল ইসলামের মতে, বাংলাদেশের মানুষের অনেক গুণ আছে, আবার কিছু কঠিন খারাপ দোষও আছে। গুজবে বিশ্বাস করা এর মধ্যে একটা।
তিনি বলেন, “কোনো ব্যক্তি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ তার সংস্পর্শে না আসছে ততক্ষণ সংক্রমিত হওয়ার ভয় নেই।
“বিশেষজ্ঞ কেউ তো এমন কথা বলছে না। নতুন অজানা রোগ নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত সেটা জানি। কিন্তু এতে তো তারাও আক্রান্ত হতে পারে। যারা অন্যকে বাধা দিচ্ছেন, সামাজিকভাবে হেয় করছেন তারা নিজেরাও তো কাল আক্রান্ত হতে পারেন। এই বিষয়গুলো কঠিনভাবে বন্ধ করতে হবে।”
আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির সঙ্গে বিরূপ আচরণ করলে এর ফল খারাপ হতে পারে। তখন কারও শরীরে লক্ষণ দেখা দিলেও তিনি তা গোপন করবেন সামাজিকভাবে নিগৃহীত হওয়ার ভয়ে। “যদি বাসায় থাকে তাহলে সেটা ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। কিন্তু তাকে যদি বাইরে বের করে দেওয়া হয় তাহলে তার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ভয় থাকে। এটা আরও বেশি বিপজ্জনক। এভাবে আমরা নিজের পায়ে কুড়াল মারছি। নিজে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা পাব না, আমার ঘরের মধ্যে রোগী থাকলেও জানতে পারব না।”
এই ভাইরোলজিস্টের মতে, ‘দায়িত্বহীন’ কিছু মানুষের এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের সবার সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শিশু হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পাশেই গণভবন, মোহাম্মদপুর এলাকা। মহাখালী বক্ষব্যাধি, কুষ্ঠ হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতালসহ বেশকিছু হাসপাতাল কাছাকাছি দূরত্বে। পাশেই গুলশান, নিকেতন ও মহাখালীর মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।
হাসপাতাল থেকে রোগ ছড়ালে এসব এলাকায় মানুষ বসবাস করতে পারত না বলে মনে করেন মুশতাক হোসেন। “যক্ষ্মা এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের আশপাশে কি জনবসতি নেই? সেখানে কোয়ার্টারে চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও থাকেন। তারা তো কোনো রোগে ভুগছেন না।
“রোগীকে আলাদা ঘরে রাখা হয়, সংক্রমণ কমাতে ওষুধ দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা মাস্ক, গ্লাভসসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত সেবা দেন। জীবাণুনাশক দিয়ে সবকিছু পরিষ্কার করা হয়। এ কারণে হাসপাতাল থেকে রোগ ছড়ানোর সুযোগ সবচেয়ে কম।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চীনে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৩ জন বিভিন্ন বন্দর হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমানে ২৮ হাজার ৪৮৩ জন কোয়ারেন্টিনে আছেন। এর মধ্যে হাসপাতালসহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪২ জন এবং ২৮ হাজার ৩৪১ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৪৪২ জন বিদেশফেরতকে।
- মই বেয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজ দেখলেন আইনমন্ত্রী
- ‘জিয়া-এরশাদ-খালেদা কখনোই বাংলাদেশের উন্নয়ন চায়নি’
- `স্বাধীনতা সংগ্রামে নজরুলের রণসংগীত প্রেরণা যুগিয়েছিল`
- অগ্রাধিকার সুবিধা অব্যাহত রাখতে ওইসিডি’র দেশগুলোর প্রতি আহ্বান
- পদ্মাসেতু বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক: ড. হাছান মাহমুদ
- বিসিএস প্রিলিতে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা নেই: পিএসসি চেয়ারম্যান
- কুড়িগ্রামে পৃথক অভিযানে ইয়াবাসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- কীভাবে বুঝবেন কোলেস্টেরল বেড়েছে
- কুড়িগ্রামে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা
- `লজ্জা থাকলে বিএনপি নেতারা পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে না`
- গোপনে ব্যাংক কর্মকর্তাকে বিয়ে করলেন সানাই মাহবুব
- রঙ্গপুর বুক মিউজিয়ামে ৫ হাজার বই দিলেন কবি ফারুক
- বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভারত থেকে ৬ লাখ টন গম আনবে বাংলাদেশ
- রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদার সাথে ফেরত পাঠাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- গাফফার চৌধুরীকে শনিবার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে
- বাজারে বেচাকেনা বেড়েই চলেছে দিনাজপুরী লিচুর
- `ভঙ্গুর স্বাস্থ্যখাত শেখ হাসিনার দক্ষতায় শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়েছে`
- শেষ হলো ৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা
- রংপুরসহ ৮ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
- মাদকের বিরুদ্ধে আরো কঠোর হতে হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আমাদের অর্থনীতি বিস্তৃত: এলজিআরডিমন্ত্রী
- রোদ-বৃষ্টিতে চুলের রুক্ষতা দূর করার উপায়
- গাইবান্ধায় পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত ৩৫ জন
- দিনাজপুরে ৪০ এতিম নববধূর বিবাহোত্তর সংবর্ধনা
- করোনা আপডেট: গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরো ২৩ জনের শনাক্ত, মৃত্যু নেই
- ‘গুপ্তধন পেতে জিনের বাদশাহকে ৮ লাখ টাকা দিয়েছি’
- লিচুকে ঘিরে দিনাজপুরে দৈনিক ১০ কোটি টাকার লেনদেন
- নীলফামারীতে দুস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ
- মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল পেলেন ২ বাংলাদেশি
- আগামীকাল দেশে আসছে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ
- বাংলাদেশ মডেলের পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ শক্তিশালী নেতৃত্ব
- ঠাকুরগাঁওয়ে মা দিবসে ব্যতিক্রমী আয়োজন
- `তিন বছরে আরও ১৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে`
- চাকরি পেতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে: শিক্ষা উপমন্ত্রী
- স্বপ্নের পদ্মাসেতু এখন দৃষ্টিসীমায় দিগন্তজুড়ে দাঁড়িয়ে
- দিক পাল্টেছে ঘূর্ণিঝড় অশনি, অন্ধ্র প্রদেশে রেড অ্যালার্ট জারি
- ঘুরতে বেরিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন ইমন
- তরুণরাই আনবে সোনালি ভবিষ্যৎ: তথ্যমন্ত্রী
- বোনের বিবাদ মেটাতে গিয়ে প্রাণ গেল ভাইয়ের
- ফিলিস্তিনি শিশু মাত্র আট মাসে হাফেজ
- দিনাজপুরে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
- ‘ভাগ্য’ নিয়ে ফিরছেন নিপুণ
- রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ঠেকাতে তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির বৈঠক
- মেয়ের নাম জানালেন রোনালদো-জর্জিনা
- বিমানবন্দরগুলোতে বিটিভি দেখানোর নির্দেশ
- হজ নিবন্ধনের সময় আজই শেষ হচ্ছে
- নীলফামারীতে দুস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ
- মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল পেলেন ২ বাংলাদেশি
- তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা
- নীলফামারীতে বোরো ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু