• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

প্রস্রাব-পায়খানার আদবসমূহ

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮  

ইসলামের বিধি-বিধান মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে পরিব্যাপ্ত। এর থেকে বাদ যায়নি প্রস্রাব-পায়খানার মতো একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়ও।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিয়ে থাকি। তোমরা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে কেবলাকে সামনে বা পেছনে দিয়ে বসবে না। ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য সম্পাদন করবে না।’ তিনি তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা করা থেকে বারণ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭)

উল্লিখিত হাদিসে বর্ণিত নির্দেশনা ছাড়া প্রস্রাব-পায়খানার নির্দিষ্ট আদব ও শিষ্টাচার রয়েছে, প্রত্যেকের উচিত এগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া। সেগুলো হলো-

> এমন স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করবে, যেখানে বসলে মানুষ দেখে না। আওয়াজ শোনে না এবং দুর্গন্ধ মানুষের নাকে আসে না। (তিরমিজি, হাদিস : ২০, আবু দাউদ, হাদিস : ২)

> প্রস্রাব-পায়খানার জন্য নরম বা উঁচু স্থান বেছে নেওয়া উচিত, যাতে এর ছিটা শরীরে না লাগে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩)

> পায়খানায় প্রবেশের সময় এই দোয়া পাঠ করা : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবাইস।’ অর্থ : হে আল্লাহ! আমি নর ও নারী শয়তান থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই। (বুখারি, হাদিস : ১৩৯) এই দোয়া পাঠের তাৎপর্য হলো, জিন ও শয়তান বেশির ভাগ নাপাক স্থানে অবস্থান করে।

> প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার সময় নিজের বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসা। এটি কষ্টদায়ক বস্তু দ্রুত নিঃসরণে সহায়ক। (আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি, হাদিস : ৪৬৬)

> বাঁ পা দিয়ে প্রবেশ করা ও ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (নাসায়ি শরিফ, হাদিস : ১১১)

> প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের সময় মাথা ডেকে রাখা। (আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি, হাদিস : ৪৬৪)

> মাটির গর্তে প্রস্রাব না করা। কেননা ভেতরে সাপ-বিচ্ছু থাকলে ক্ষতি হতে পারে অথবা ক্ষতি করতে পারে। (আবু দাউদ : ২৭)

> রাস্তা বা কবরস্থানে প্রস্রাব-পায়খানা না করা। (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ৩৯৭)

> ছায়াময় স্থানে প্রস্রাব না করা, যেখানে মানুষ বিশ্রাম নেয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪)

> ফলবিশিষ্ট বৃক্ষের নিচে প্রস্রাব-পায়খানা না করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪)

> প্রস্রাব-পায়খানার সময় বিনা প্রয়োজনে কথা বলা মাকরুহ (ইসলামের দৃষ্টিতে অপছন্দীয় কাজ)। (আবু দাউদ : ১৪)

> প্রস্রাব-পায়খানার সময় শব্দ করে কোরআন পাঠ ও জিকির করা মাকরুহ। (মুসলিম, হাদিস : ৫৫৫)

> আবদ্ধ কম পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (মুসলিম, হাদিস : ৪২৩)

> আবদ্ধ বেশি পানি বা প্রবহমান পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা অনুচিত। (মুসলিম, হাদিস : ৪২৫)

> কোনো অপারগতা ছাড়া প্রস্রাব-পায়খানা থেকে ডান হাতে পবিত্রতা অর্জন করা মাকরুহ। (মুসনাদে আহমাদ : ২৬৩২৬)

> অক্ষমতা, অসুস্থতা ও সীমাবদ্ধতা না থাকলে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরুহ। (তিরমিজি, হাদিস : ১২)

তবে সীমাবদ্ধতা থাকলে তা বৈধ।

কেননা দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার মাধ্যমে প্রস্রাবের ছিটা গায়ে লাগার সম্ভাবনা থাকে। আর এটি দৃষ্টিকটু। পাশাপাশি তা রোগের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা।

> প্রস্রাব-পায়খানা সেরে ডান পা দিয়ে বের হয়ে এই দোয়া পাঠ করা : ‘আল হামদু লিল্লাহিল্লাজি আজহাবা আন্নির আজা ওয়া আফানি।’ অর্থ : সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার কাছ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু বের করে দিয়েছেন এবং আমাকে নিরাপদ করেছেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৭)

তবে কোনো কোনো হাদিসে ‘গুফরানাকা’ শব্দও এসেছে। তাই উভয় দোয়া একসঙ্গে পাঠ করা যায়।