• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

কিবলা পরিবর্তনের ঐতিহাসিক ঘটনা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০২৩  

সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ বা ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা পবিত্র কাবার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করে। ইসলামের সূচনাকালেও মুসলিমরা কাবার দিকে ফিরেই নামাজ আদায় করতেন।

তবে মধ্যবর্তী কয়েক মাস (১৬-১৭ মাস) মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা মসজিদুল আকসার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করার নির্দেশ দেন।

মদিনায় হিজরতের পর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল মাকদিসের দিকে মুখ করেই নামাজ আদায় করতেন। নবীজি (সা.) জিবরীল (আ.)-কে বলেছিলেন- আমার আশা, আল্লাহ তাআলা যেন আমার চেহারা ইহুদীদের কিবলা হতে ফিরিয়ে দেন। জিবরীল (আ.) বললেন- আমি তো আল্লাহর একজন বান্দা মাত্র। আপনি আপনার রবের কাছে প্রার্থনা করুন এবং তার কাছেই বিষয়টি বলুন। তিনি কিবলা পরিবর্তনের আশায় আকাশের দিকে বারবার তাকাচ্ছিলেন। তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াত নাজিল করলেন-

قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِى السَّمَاءِ، فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا، فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ المَسْجِدِ الحَرَامِ

অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি তোমাকে সেই কিবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব, যাকে তুমি পছন্দ কর। এখন তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ কর এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকেই মুখ কর’। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৪৪) এটি ছিল হিজরতের ১৬ মাস পরের এবং বদরের যুদ্ধের মাত্র দুই মাস পূর্বের ঘটনা।

এরপর কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ যখন আসে, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদে বনু সালামায় জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন। ২ রাকাত আদায় করার পর কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ আসে। নামাজের ভেতরেই রাসূল (সা.) বায়তুল্লাহর দিকে ফিরে যান। অবশিষ্ট ২ রাকাত নামাজ সেদিকে ফিরেই আদায় করেন।

কেবলা পরিবর্তনের এই জায়গাকে ঘিরে একটি মসজিদ গড়ে উঠে। একে মসজিদে কিবলাতাইন বলা হয়। যা মদিনা নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিম উপকণ্ঠে অবস্থিত। এটি মসজিদে নববী থেকে এর দূরত্ব চার কিলোমিটার। দ্বিতীয় হিজরিতে সাওয়াদ বিন গানাম গোত্রের লোকেরা মসজিদটি নির্মাণ করেন। নির্মাণকাজে তারা কাঁচা ইট, পাথর, খেজুরগাছের পাতা ও ডাল ব্যবহার করেছিল।

পরবর্তী সময়ে খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.), শাহিন সুজা জামালি, উসমানীয় সুলতান সোলায়মান, বাদশাহ আবদুল আজিজ ও ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ মসজিদে কিবলাতাইনের সংস্কার করেন। বাদশাহ আবদুল আজিজ মসজিদের পুরোনো অবকাঠামো ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করেন। ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ তার আধুনিকায়ন করেন।

বর্তমানে মসজিদে কিবলাতাইনের আয়তন ৩ হাজার ৯২০ স্কয়ার মিটার। মসজিদে রয়েছে ২টি গম্বুজ। যার ১টির আয়তন ৮ মিটার এবং অন্যটির আয়তন ৭ মিটার। উভয় গম্বুজের উচ্চতা প্রায় ১৭ মিটার। কিবলা পরিবর্তনের ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে এখনো মসজিদের ২টি মেহরাব ও আজানের স্থান (মিনার) রাখা হয়েছে।