• শুক্রবার ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৮ ১৪৩১

  • || ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাসূল (সা.)-কে আল্লাহর বিশেষ সুখবর

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা এক সুখবরে মহানবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন-

وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَىٰ
উচ্চারণ: অলাসাওফা ইয়ু’ত্বীকা রব্বুকা ফার্তাদ্বোয়া
অর্থ: ‘আর শীঘ্রই তোমার রব তোমাকে এত দেবেন যে , তুমি খুশী হয়ে যাবে’। (সূরা: আদ-দুহা, আয়াত: ৫)

সূরা আদ-দুহা পবিত্র কোরআন শরিফের ৯৩ নম্বর সূরা। এ সূরার আয়াত সংখ্যা ১১টি এবং রুকুর সংখ্যা ১টি। সূরা আদ-দুহা মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এই সূরার নামের অর্থ উজ্জ্বল সকাল বা উজ্জ্বল দিবা। যা রাতের মোকাবিলায় ব্যবহার করা হয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট কিছুদিন ওহি নাজিল বন্ধ থাকলে বিরোধীরা মনে করে এবং প্রচার করে যে, রাসূলের প্রতি যে উৎস হতে ওহি নাজিল হতো, সে উৎস হতে ওহি নাজিল বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রেক্ষিতে নবীজি (সা.)-কে সান্ত্বনা ও স্বস্তি দেওয়ার জন্যে মহান আল্লাহ তাআলার তরফ হতে সূরা আদ-দুহা নাজিল হয়েছিল।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরাআনুল কারিমে বলেন, ‘তোমার রব তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি নারাজও হননি’।

জন্দুব ইবনে আবদুল্লাহ আল বাজালী ( রা.) রেওয়ায়াত করেন, যখন জিব্রাইল আলাইহিস সালামের আসার সিলসিলা থেমে গেলো, মুশরিকরা বলতে শুরু করলো: ‘মুহাম্মাদকে (সালাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তার রব পরিত্যাগ করেছেন’। (ইবনে জারীর, তাবারানী, আবদ ইবনে হুমাইদ, সাঈদ ইবনে মনসূর ও ইবনে মারদুইয়া)

মুশরিকরা অপপ্রচার চালাতে লাগলো, বলতে লাগলো যে, তার রব তার প্রতি নারাজ হয়ে গেছেন এবং তিনি তাকে পরিত্যাগ করেছেন।

আরেক রেওয়াআতে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের চাচী, আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামীলের ঘর ছির তার ঘরের সঙ্গে লাগোয়া। সে তাকে ডেকে বললো, ‘মনে হচ্ছে তোমার শয়তান তোমাকে পরিত্যাগ করেছে’।

এই সূরার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলা মহানবীকে (সা.) সুখবর দেন এবং মহানবীর জন্য ভবিষ্যতের মঙ্গলবার্তা দেন ও আখিরাতের মর্যাদা ও পুরস্কারের কথা বলেন। মহান আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামকে বলেন, ‘আখেরাতে তুমি যে মর্যাদা লাভ করবে তা দুনিয়ায় তোমার অর্জিত মর্যাদা থেকে অনেক গুণ বেশি হবে’।

এই সূরার মাধ্যমে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা কিছু শিক্ষাও দিয়েছেন আমাদের। এই সূরায় ইয়াতিমকে না ঠকানো এবং প্রার্থীকে তিরস্কার না করার কথা বলা হয়েছে।

সূরা আদ-দুহার আরবি, বাংলা উচ্চারণসহ অনুবাদ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

(১)
وَالضُّحَىٰ
অদ্ব্দ্বুহা
উজ্জ্বল দিনের কসম।

(২) 
وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَىٰ
অল্লাইলি ইযা- সাজ্বা
এবং রাতের কসম যখন তা নিঝুম হয়ে যায়।

(৩) 
مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَىٰ
মা অদ্দা‘আকা রব্বুকা অমা- ক্বলা
( হে নবী !) তোমার রব তোমাকে কখনো পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্টও হননি।

(৪)
وَلَلْآخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ الْأُولَىٰ
অলাল্ আ-খিরাতু খাইরুল্লাকা মিনাল্ ঊলা
নিঃসন্দেহে তোমার জন্য পরবর্তী যুগ পূর্ববর্তী যুগের চেয়ে ভালো।

(৫) 
وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَىٰ
অলাসাওফা ইয়ু’ত্বীকা রব্বুকা ফার্তাদ্বোয়া
আর শীঘ্রই তোমার রব তোমাকে এত দেবেন যে , তুমি খুশী হয়ে যাবে।

(৬)
أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآوَىٰ
আলাম্ ইয়াজ্বিদ্কা ইয়াতীমান্ ফাআ-ওয়া
 তিনি কি তোমাকে এতিম হিসেবে পাননি? তারপর তোমাকে আশ্রয় দেননি?

(৭)
وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَىٰ
অওয়াজ্বাদাকা দ্বোয়া-ল্লান্ ফাহাদা
তিনি তোমাকে পথ না পাওয়া অবস্থায় পান, তারপর তিনিই পথ দেখান।

(৮) 
وَوَجَدَكَ عَائِلًا فَأَغْنَىٰ
অওয়াজ্বাদাকা ‘আ-য়িলান্ ফাআগ্না
তিনি তোমাকে নিঃস্ব অবস্থায় পান, তারপর তোমাকে ধনী করেন।

(৯) 
فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ
ফাআম্মাল্ ইয়াতীমা ফালা-তাক্বরর্হা
কাজেই এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না।

(১০) 
وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ
অআম্মাস্ সা-য়িলা ফালা-তার্ন্হা
প্রার্থীকে তিরস্কার করো না।

(১১) 
وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ
অ আম্মা-বিনি’মাতি রব্বিকা ফাহাদ্দিছ্
আর নিজের রবের নিয়ামত প্রকাশ করো।