• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

টক-ঝাল-মিষ্টিময় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২২  

টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর সম্ভবত এবারই সাদা বলের কোনো আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশকে নিয়ে প্রত্যাশা এতো কম ছিল। বিশ্বকাপের জন্য দেশ ছাড়ার আগে এবার ছিল না আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন, হয়নি দলীয় ফটোসেশনও। প্রত্যাশার পারদ ছিল খুবই নিচে।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বিশ্বকাপ... সেখানে অতীতে হওয়া ম্যাচের ফলাফল, সঙ্গে টি-২০ ফরম্যাটে টাইগারদের পারফরম্যান্স কোনোটাই কাউকে আশাবাদী করেনি। তবে বিশ্বকাপে যা করেছে বাংলাদেশ, সেটাও কি খুব খারাপ? সবমিলিয়ে হয়তো বলা যায়, এবারের আসরটা বাংলাদেশের জন্য ছিল টক-ঝাল-মিষ্টিময়।

সপ্তম বিশ্বকাপের ফলাফলের ভিত্তিতে এবারের আসরে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলেছে বাংলাদেশ। বাছাইপর্বে যখন ছোট দলগুলো শক্তিমত্তায় বড় দলগুলোকে হারাচ্ছিল, দেশের অনেক ক্রিকেটভক্তই টাইগারদের সুপার টুয়েলভে থাকার বিষয়ে খুশি ছিলেন। অনেক ক্রিকেটবোদ্ধার মতে, এবারের আসরে বাছাইপর্ব খেললে হয়তো সুপার টুয়েলভে উঠতেই পারতো না সাকিব আল হাসানের দল।

যা হয়নি, তা নিয়ে আর কথা না বাড়াই। তবে সুপার টুয়েলভ থেকে বাংলাদেশ অন্তত দুটি ম্যাচ জিতবে, এই প্রত্যাশাও ছিল অনেকের। যেখানে অবশ্য ব্যত্যয় ঘটেনি। টাইগাররা ঠিকই হারিয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই হয়েছে অতীতের বিচারে বাংলাদেশের সফলতম আসর। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে যা মিষ্টির মতোই।

বিশ্বকাপ মিশন শুরুর আগে অন্তত একটি জয়ই ছিল যেখানে মূল লক্ষ্য, সেখানে দুটি জয় পাওয়ায় খুশিই হওয়ার কথা। বাস্তবতা বিচারে খুশি না হওয়াটাই খারাপ দেখায়। কিন্তু শেষের দিকে বাংলাদেশের সামনে যে সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল, সেটা কাজে লাগাতে না পারার আফসোস কি সহজে মিটবে?

প্রথম তিন ম্যাচের মাঝে দুটি জেতার পর বাংলাদেশের হাতে ছিল দুটি ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ছিল ভারত ও পাকিস্তান। দুটি ম্যাচেই বাংলাদেশ কোনো না কোনো সময় প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছে। কিন্তু ম্যাচের ফল আসেনি পক্ষে। 

এর মাঝে প্রথম বড় বিতর্ক দেখা দেয় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে। যেখানে বৃষ্টির পর দ্রুত নামতে বাধ্য করা সহ আম্পায়ারদের কিছু সিদ্ধান্তের জন্য বাংলাদেশ ভুগেছে বলে দাবি করা হয়। সে ম্যাচ হারার পরও বাংলাদেশের সামনে সেমিফাইনালের বিরাট সুযোগ আসে গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে।

ঠিক আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে অঘটনের শিকার হয় দক্ষিণ আফ্রিকা, সেই সঙ্গে বিদায় নেয় বিশ্বকাপ থেকে। তখন বাংলাদেশের সমীকরণ দাঁড়ায়, পাকিস্তানকে কোনোভাবে হারালেই মিলবে সেমিফাইনালের টিকেট। 

এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথম ১০ ওভার ভালোভাবেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই আসে আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। সাকিবকে দেওয়া সেই আউটের পরই খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ম্যাচ হারের সঙ্গে সঙ্গে নিভে যায় সেমিফাইনালের স্বপ্ন, বিদায় নিতে হয় আসর থেকে।

সেমিফাইনালে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নিজেদের দোষে হাতছাড়া হওয়ায় বাংলাদেশ বলতেই পারে, আঙুর ফল টক! তবে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফল আসায় এবারের বিশ্বকাপকে মিষ্টিও বলতে পারেন ক্রিকেটাররা। সেই সঙ্গে আম্পায়ারদের দেওয়া বিপক্ষে যাওয়া সিদ্ধান্তগুলো ছিল ঝালের মতো!

প্রত্যাশাবিহীন যাত্রা, লক্ষ্য পূরণ এবং শেষদিকে বড় স্বপ্নের হাতছানি ও সেখান থেকে ব্যর্থ হয়ে ফেরা... সবমিলিয়ে বলা যায় অম্ল-মধুর এক আসরই কাটিয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে ছিল টক, মিষ্টি, ঝাল সবরকম অভিজ্ঞতাই। এবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামনে বাংলাদেশ ভালো করবে, এটাই এখন ক্রিকেটপ্রেমীদের আশা।