• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

এরশাদের অছিয়ত নামায় সব পথ রুদ্ধ বিদিশার

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৯  

বিদিশার জন্য প্রেসিডেন্ট পার্কের (প্রয়াত এরশাদের বাস ভবন) দরজা বন্ধ করে দিয়ে গেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেই। বিদিশা যাতে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করতে না পারেন, সে জন্য অছিয়ত নামা দলিলে স্পষ্ট করে লিখে গেছেন তিনি।

২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর তারিখে ওই অছিয়ত নামা সম্পাদন করা হয়। গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সম্পাদিত ওই দলিলে (নম্বর ৬৮) বিদিশা সম্পর্কে এরশাদ লিখেছেন,‘অছিয়তকৃত সম্পত্তিসহ তোমার (এরিক) মালিকানাধীন সম্পত্তিতে আমার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকী কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করিতে পারিবে না, কিংবা তোমার একচ্ছত্র মালিকানা ও ভোগ দখলে কোন প্রকার বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি করিতে পারিবে না, কিংবা তোমার মালিকানা ও ভোগ দখলে কোনরূপ তদারকি কিংবা অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে কোনরূপ পরামর্শ কিংবা কোনরূপ আদেশ নিষেধ করিতে পারিবে না, কিংবা তোমার মালিকানাধীন কোন সম্পত্তি বিক্রয় বন্ধক কিংবা হস্তান্তর করিতে পারিবে না।’

শুধু অছিয়ত নামা দলিলে নয়, ট্রাস্টের উইলেও বিদিশার বিষয়ে স্পষ্ট করে লিখে গেছেন এরশাদ। ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল সম্পাদিত ট্রাস্টের ওই উইলের ১১ নম্বর কলামে বলা হয়েছে, ‘বিদিশা সিদ্দিকী কখনই ট্রাস্টের সম্পত্তি বা অর্থের উপর কোনরূপ দাবি করতে পারবে না। যদি কখনও কোনো রকম দাবি করে, তাহলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে অবৈধ এবং অগ্রাহ্য হবে।’

ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজর (অব.) খালেদ আখতার বলেছেন, বিদিশা সিদ্দিকী যা বলছে, সব অসত্য বলছে। এরিকের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, বিদিশার কাছ থেকে এরিককে আলাদা করে কথা বলেন, দেখবেন সব উল্টে যাবে। এরিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব বলানো হচ্ছে। এরিকের সেবা-যত্নে কোনো রকম কমতি করা হচ্ছে না। যারা বাসায় তার দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে, তাদের কোলেপিঠেই মানুষ হয়েছে এরিক। এরিকের প্রতি তাদের মমত্ববোধের কোনো ঘাটতি নেই। বিদিশা যা করছে, এটা নিছক নাটক। ওই বাড়িটি ট্রাস্টের সম্পদ, এখানে বিদিশার থাকার কোনো এখতিয়ার নেই। সে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এরশাদের ব্যক্তিগত আইনজীবী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রয়াত এরশাদের সঙ্গে বিদিশার ছাড়াছাড়ি হলে, শিশু এরিককে পেতে মামলা করেছিলেন বিদিশা। কোর্ট কিন্তু এরশাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। সে দিক থেকেও বিদিশার দাবি আইনগতভাবে টেকসই হয় না। আগে ছিল ‘শিশু এরিক’, তখনই কোর্ট তাকে পক্ষে রায় দেয় নি। এখন তো ‍সে প্রাপ্তবয়স্ক।

প্রেসিডেন্ট পার্ক ট্রাস্টের সম্পত্তি। ট্রাস্টের অনুমতি ছাড়া এখানে কারো প্রবেশ কিংবা অবস্থান পুরোপুরি বেআইনি হিসেবে গণ্য হবে বলে মনে করেন অ্যাড. শেখ সিরাজুল ইসলাম।

ছেলে এরিককে দেখার কথা বলে, গত ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় বিদিশা (প্রয়াত এরশাদের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী) এসে বাসায় ঢুকে পড়েছেন, আর বের হচ্ছেন না। শনিবার (২৩ নভেম্বর) পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করছেন। নিজেদের অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ তুলেছেন। জীবন গেলেও তাকে সন্তানের কাছ থেকে আলাদা করা যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এতে অস্বস্তিতে আছেন পরিবারের সদস্যরা। না পারছেন তাকে বের করে দিতে, আবার না পারছেন মেনে নিতে। আবার এরশাদ যাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন, তার অবস্থানও ভালোভাবে দেখছেন না পরিবারের লোকজন। আবার বিদিশা বাসায় ঢুকেই ক্ষান্ত হননি, তার নিজের কিছু লোকজনকে বাসায় ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। এতে সন্দেহ আরও বেড়েছে।

নিজের ও মায়ের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এরিক। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশা সিদ্দিকের অবস্থানের কারণে এরিক এরশাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে- উল্লেখ করে পাল্টা জিডি করেছেন ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর (অব.) খালেদ আখতার।