• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

কথা দিয়ে কথা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী: খুশি ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় বাসী

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০১৮  

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঠাকুরগাঁও ॥ দেশের ৫০৭ কিলোমিটারের দীর্ঘতম পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকার রেল রুটে আন্ত:নগর ট্রেন চালু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টায় পঞ্চগড়ে ট্রেনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। আর ঠাকুরগাঁওয়ে উদ্বোধন করেন-রমেশ চন্দ্র সেন এমপি। এসময় জেলা প্রশাসক ড.কেএম কামরুজ্জামান, পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহা.সাদেক কুরাইশী উপস্থিত ছিলেন। 
সকাল সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও রোড স্টেশন এলাকা থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটির মাধ্যমে চালুর মাধ্যমে চালু হয় ঢাকা-ঠাকুরগাঁও সরাসরি ট্রেন চলাচল। এ জেলার মানুষের দীর্ঘ দিনে দাবি পুরন হলো এই রেল চালু মাধ্যমে। এ নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে উৎসবে আমেজ বিরাজ করছে। পঞ্চগড় থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে ঢাকায় যাতায়াত শুরু করেছে একতা ও দ্রুতযান নামে দুটি ট্রেন। ঠাকুরগাঁওয়ে তিনটি রেল স্টেশন থেকে দুইটি ট্রেনে প্রায় ২শ যাত্রী ঢাকায় যেতে পারবে বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ।
এবার রেলের হুইসেলে পাল্টে যাবে জেলার চিত্র। আর্থ-সামাজিক ও ব্যবসায়িক উন্নয়নের পাশাপাশি দুরপাল্লার ভোগান্তিরও অবসান হলো। গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরগাঁওয়ে জনসভায় রেল চালুর ঘোষনার দেন। আজ বাস্তবায়ন হওয়ায় খুশি জেলার বাসিন্দারা।

১৮৩৬ সালে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত মিটার গেজ রেল লাইন নির্মান হয়। এর পর থেকে সংস্কার কাজ হয়নি এ রুটে। ফলে ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধীরগতিতে ট্রেনের চলাচল আর ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ ছিল না। ২০১০ সালে পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত  ১৫০ কিলোমিটার নতুন করে ডুয়েল গেজ রেল লাইন স্থাপন ও অবকাঠামোর নির্মানে প্রায়  ১৩শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় আ’লীগ সরকার। প্রায় ৭ বছর পর শেষ হয় রেল রুটের কাজ। এর পর থেকে শুধু প্রতিক্ষার প্রহর গুনেছে দু জেলার মানুষ। ট্রেন চালুর দাবিতে শান্তিপূর্ন কর্মসুচি পালন করেছে এলাকাবাসী। এ বছরের ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরগাঁওয়ে সফরে এসে ট্রেন চালুর ঘোষনা দিলে আশার আলো দেখে জেলাবাসী। অবশেষে ১০ নভেম্বর দুটি ট্রেনের মাধ্যমে চালু হচ্ছে পঞ্চগড়-ঢাকার ট্রেন চলাচল। খবর শুনে খুশি এখানকার বাসিন্দারা। 
ঠাকুরগাঁও শহরের ঘোষপাড়ার মাহামুদ হাসান প্রিন্স জানান, দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ায় ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। যে তিনি ঠাকুরগাঁওবাসীর প্রাণের দাবি পুরন করেছেন। তবে ঠাকুরগাঁওয়ের জন্য আলাদা একটি ট্রেনের দাবি করছি। এতে এ জেলার মানুষের যোগাযোগ আরো উন্নত হবে বলে জানান তিনি। 
ট্রেন যাত্রী কনক, মজিবর, হোসেনসহ অনেকে বলেন, স্টেশন গুলোতে যাত্রীদের উন্নত বসার ব্যবস্থা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখাসহ টয়লেট ব্যবস্থাপনা আর যাত্রীদের গন্তব্যে পৌছতে নিরাপত্তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ৫০৭ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে দীর্ঘ এই রুটে ট্রেনে চলাচল করতে ঠাকুরগাঁও জেলার তিনটি রেলস্টেশন রুহিয়া, ঠাকুরগাঁও রোড ও পীরগঞ্জ রেল স্টেশনে টিকিটের জন্য যাত্রীদের সারি সারি লাইন দেখা যাচ্ছে। সংগ্রহ করছে টিকিট। কর্মব্যস্ততায় দিন কাটছে রেলওয়ে কর্মকর্তা –কর্মচারিদের।
ঠাকুরগাঁও রোড স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাস্টার অনুপ বসাক বলেন, আজ রাতে একতা এক্সপ্রেস পঞ্চগড় থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে ৯টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাবে। পর দিন সকাল ৮টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌছাবে। এজন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। 

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান বলেন, এ রুটে ট্রেন চলাচলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের ফলে জেলার আর্থ সামাজিক ও ব্যবসায়িক উন্নয়নের পাশাপাশি গড়ে উঠবে নতুন নতুন কলকারখানা। কর্মসংস্থান হবে অনেক বেকার মানুষের।
আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি বলেন, এ এলাকার মানুষে দীর্ষ দিনের প্রত্যাশা ছিল সরাসরি ঠাকুরগাঁও-ঢাকা ট্রেন চলাচল। বর্তমান সরকার উন্নয়নের  সরকার। তাই এই এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পুরন করেছে। সরকারের সকল উন্নয়ন দৃশ্যমান। পরবর্তীতে হিমাল এক্সপ্রেস নামে আরো একটি ট্রেন চালুরও পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।