• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

করোনার ভয়ে মৃতকে ছুঁল না পরিবার, সৎকারে মুসলিম যুবকরা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২১  

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত ভারত।পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে আগামী দিনে এই দেশে করোনা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে চলেছে। এই অবস্থায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির গড়লেন ভারতের বিহারের গয়া জেলার একদল মুসলিম যুবক।

করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, এই ভয়ে এক মহিলার মৃতদেহ ছুঁতে চায়নি পরিবারের লোক। শেষপর্যন্ত রীতি মেনে ওই হিন্দু মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন মুসলিম যুবকরাই। ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে তাদের সেই কাজ। অনেকেই প্রশংসাও করেছেন। 

ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের গয়া জেলার ইমামগঞ্জ পুলিশ স্টেশনের তেতারিয়া গ্রামে। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রভাবতী দেবী নামে ৫৮ বছরের ওই মহিলা। তাকে তড়িঘড়ি একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আরটি-পিসিআর টেস্টও করা হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও পরবর্তীতে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। করোনাতেই মারা গিয়েছেন তিনি, এই ভয়ে ওই মহিলার স্বামী এবং দুই ছেলে দেহ নিতে রাজি হননি। ফলে দীর্ঘক্ষণ গাড়িতেই পড়েছিল মৃতদেহ। শেষপর্যন্ত খবর পেয়ে ওই মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে এগিয়ে আসেন মুহাম্মদ রফিক, শারিক, কালামি, বারিক, লাদ্দানসহ এলাকারই বেশ কয়েকজন মুসলিম যুবকরা।

এই প্রসঙ্গে সমাজকর্মী মুহাম্মদ শারিক জানান, 'চিকিৎসা চলাকালীনই ওই মহিলার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। এরপরই চিকিৎসকরা তার করোনা পরীক্ষা করতে বলেন। রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও চিকিৎসা চলাকালীনই মারা যান তিনি। এদিকে, করোনা আতঙ্কেই মৃত্যু হয়েছে প্রভাবতী দেবীর, এই ভয়ে তাঁর স্বামী বা দুই ছেলে কেউই মৃতদেহ নিতে রাজি হননি। ফলে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গাড়িতেই পড়েছিল তার মৃতদেহ। শেষপর্যন্ত আমরা খবর পেয়ে সেখানে যাই, পরিবারের লোকজনকে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে বলি। কিন্তু তবুও তারা দূরেই দাঁড়িয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত আমরা কয়েকজন গাড়ি থেকে মৃতদেহটি নামাই। এরপর বাঁশ দিয়ে মড়া নিয়ে যাওয়ার খাট তৈরি করে শবদেহটি নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হই। তখন অবশ্য পরিবারের অন্যরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আমাদের সঙ্গ দেন।'

এই প্রসঙ্গে মৃতের এক ছেলে বলেন, 'এলাকার মুসলিম যুবকরা আমার মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে সাহায্য করেন। ওরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ গড়েছে। আমাদের পরিবার ওদের প্রত্যেকের কাছে ঋণী।'