• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

কুড়িগ্রামে অবৈধভাবে বালু তোলা অব্যাহত

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২০  

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ এ বালু তোলার প্রভাবে এখানকার একটি ইউপির দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ওই ইউপির সহস্রাধিক বাড়ি-ঘর হুমকির মুখে পড়েছে। 
অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর গতিপথ পাল্টে যাওয়াসহ জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পাউবোর তীর রক্ষাবাঁধ ভেঙে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। 

রৌমারী, রাজীবপুর উপজেলার সঙ্গে উলিপুর উপজেলাটি ব্রহ্মপুত্র নদীকে ঘিরেই অবস্থিত। এ নদের পানি কমলে নদীর স্রোত কমে যায়। আর এ সময়ে বছর বছর ধরে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু তোলে অবাধে বিক্রি করে আসছে। এ উপজেলার হাতিয়া ইউপির নীলকন্ঠ গ্রামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু তোলার কারণে প্রায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও পাউবোর তীর রক্ষায় যে বস্তা দেয়া হয়েছে সেগুলোও নদীতে ছিটকে পড়ছে। 

ইউনিয়নটির হাতিয়ার গ্রাম, নীলকন্ঠ, রামখানার গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক ঘরবাড়ি এখন ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। মাত্র দেড় থেকে দুই ফুট ভাঙলেই গ্রামগুলো বিলীন হয়ে যাবে এমন আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। এই অবস্থায় অনেকেই অন্যত্রে আশ্রয়ের চেষ্টা করছেন।

নীলকন্ঠ গ্রামের সফিকুল ইসলাম তার বাড়ি-ঘর বিলীন হয়ে যাওয়ায় নিজ বসত বাড়িতে লাগানো গাছগুলো তুলে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,  আমরা নদীর ভাঙনের খেলায় পড়েছি। তাই জীবন বাঁচার জন্য একটু অন্যের ভিটায় ঠাঁই নেয়ার চেষ্টা করছি। 

এ অবস্থায় ব্রহ্মপুত্র নদ ভাঙন কবলিত অনেক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেনের ভাই মোন্নাফ আলী কয়েক বছর থেকে অবৈধভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু তোলে বিক্রি করে আসছে। তিনি এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারে না। ফলে হাজার হাজার সিএফটি বালু অবৈধভাবে তুলে লাখ লাখ টাকায় বিক্রি করায় নদের পেটের ভেতর খালি হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে পাড় ভেঙে যাচ্ছে। 

ভুক্তভোগীদের মতে, এভাবেই ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় পুরো হাতিয়া ইউনিয়নটি ব্রহ্মপুত্র নদ গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।ভুক্তভোগীরা নিজেরা বাঁচতে ও হাতিয়া ইউপিকে বাঁচাতে অবৈধ বালু তোলা বন্ধের দাবি জানান। 

অভিযুক্ত হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যাান আবুল হোসেনের মুঠো ফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, অবৈধ বালু তোলার স্থান পরিদর্শন করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এ ব্যাপারে উলিপুর ইউএনও আব্দুল কাদের জানান, অবৈধভাবে বালু তোলাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি জায়গায় মোবাইল কোর্ট করে জরিমানা করা হয়েছে। ভাঙন কবলিত নীলকন্ঠ গ্রামের মানুষ লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।