• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

গোলাপি বলের সাতকাহন

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৯  

শুক্রবার ইডেন টেস্টের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করছে দিবা-রাত্রির টেস্টের যুগে। শুধু টাইগাররা নয়, স্বাগতিক ভারতেরও ডে-নাইট টেস্টে অভিষেক হচ্ছে এই ম্যাচে। ফলে ম্যাচটি ঘিরে সবার আগ্রহ ও উৎসাহ এখন তুঙ্গে। একইসঙ্গে সবার আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ম্যাচের বল তথা গোলাপি বল নিয়ে। কিভাবে তৈরি হয় এই বল? এর সুবিধা অসুবিধা কি কি? সেসব নিয়েই ডেইলি বাংলাদেশ পাঠকদের জন্য আজকের আয়োজন।

বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে, দিনের বেলায় দেখার ক্ষেত্রে লাল ও কমলা বল সুবিধাজনক। তবে রাতের বেলায় এই দুই ধরনের বলের রঙ বদলে যায়। ফলে বল দেখতে সমস্যায় পড়েন ব্যাটসম্যানরা। আবার একদিনের ফরম্যাটে রাতে দেখার ক্ষেত্রে সাদা বলই বেশি সুবিধাজনক। কিন্তু পুরনো হয়ে গেলে এই বল সুইং করেনা।

এগুলো সব সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছে গোলাপি বল। রাতে দেখার ক্ষেত্রে গোলাপি বলে কোনো সমস্যা নেই। দীর্ঘসময় টিকে থাকার ক্ষেত্রেও বলটি নিজের স্থায়িত্বের প্রমাণ দিয়েছে। সুইং এর ব্যাপারেও আশানুরূপ প্রতিফলন পাওয়া গেছে গোলাপি বলে।

সব দিক ঠিক থাকায় ক্রিকেটের নতুন সংস্করণ হিসেবে এসেছে গোলাপি বল। একইসঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটের আবেদন ফিরিয়ে আনতে ডে-নাইট টেস্টের আদর্শ নিয়ামক হয়ে উঠেছে এটি। ফলে বলতে গেলে ক্রিকেটের নতুন যুগের সূচনা করেছে ‘দ্যা পিঙ্ক বল’।

ঝকঝক করার জন্য হাতে বোনার পর বিশেষ ধাতুর স্তর বা ‘ল্যাকার’ দেয়া হয় গোলাপি বলে। শুকিয়ে যাওয়ার পর করা হয় পালিশ। তার জন্য আরেকটি আলাদা স্তর যুক্ত হয়। পালিশের ফলে গোলাপি বলে যে উজ্জ্বলতা সৃষ্টি হয় তা সুইংয়ে সাহায্য করে। আবার বিশেষ ধাতুর স্তর বা ‘ল্যাকার’ থাকার ফলে লাল বলের তুলনায় এটা বেশি সময় টিকে থাকে। বলতে গেলে সাদা ও লাল বলের সঙ্গে গোলাপি বলের মূল পার্থক্য মোটা ল্যাকার।

লাল বলের উজ্জ্বলতা সাধারণত এক ঘন্টা বা এর একটু বেশি সময় স্থায়ী হয়। অপরদিকে গোলাপি বলে এর স্থায়িত্ব লাল বলের প্রায় দ্বিগুণ। ফলে ফাস্ট বোলাররা বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকে। সিমের দিক থেকেও গোলাপি বল অন্য দুই রঙের বল থেকে আলাদা। গোলাপি বলের সিম বা সেলাই তুলনামুলক বেশি চওড়া হওয়ার ফলে বাড়তি বাউন্স হয়। সুইংও বেশি পান বোলাররা।

তবে গোলাপি বল পুরোটাই যে বোলারদের সহায়ক তা নয়। কারণ এই বলে সহজে রিভার্স সুইং হয়না। আবার বাউন্স বুঝে উঠতে পারলে রান তোলা অনেকটা সহজ হয়ে যায় ব্যাটসম্যানদের জন্য।

গোলাপি বলের আরেকটি বিশেষত্ব হলো এটি তৈরিতে সময় লাগে বেশি। লাল বল যেখানে চারদিনেই সম্পন্ন হয়ে যায় সেখানে গোলাপি বল তৈরিতে সময় লাগে আট দিন। মূলত অন্য রংয়ের চামড়া শুকিয়ে তার উপর রং করে তৈরি হয় গোলাপি বল।

গোলাপি চামড়া পাওয়া যায় না বিধায় বিশেষ ধাতুর স্তর বা ‘ল্যাকার’ দিয়ে গোলাপি করা হয়। মজার ব্যাপার, এই বলে রঙ করা হয় দুইবার। প্রথমবার রং করা হয় বলের চূড়ান্ত সেলাইয়ের আগে, আবার একই রং করা হয় সেলাইয়ের পর। বাড়তি রং করার ফলে কখনো কখনো গোলাপি বলকে কমলার মতোও লাগে।

এখন পর্যন্ত হওয়া গোলাপি বলের ১১ টেস্টে পেসাররা নিয়েছেন ২৫৭ উইকেট। স্পিনাররা ৯৫ উইকেট নিয়ে বেশ পিছিয়েই আছেন। তবে ইডেনে খেলা হবে এসজি-র বানানো গোলাপি বলে। কোকাবুরা ও ডিউক বলের তুলনায় এসজি বলের সিম একটু বেশি উঠে থাকে। ফলে স্পিনারদের জন্যও বাড়তি সাহায্য থাকতে পারে ইডেনে।

ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম গোলাপি বলে টেস্ট তিন দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেই টেস্টে কোন দলই আড়াইশো পার করতে পারেনি। বাংলাদেশ ভারতের মধ্যকার ম্যাচের প্রথম চারদিনের টিকেট এর মাঝেই শেষ। ম্যাচটি ঘিরে দুই প্রতিবেশী দেশের জমজমাট লড়াইয়ের প্রত্যাশায় আছেন সবাই।