• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

তিস্তা ভাঙনে পীরগাছায় বাড়ছে ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২০  

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তিস্তা নদী ভাঙনে ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। উপজেলার ছাওলা ইউপির গাবুড়ার চর, শিবদেব চর, কিশামত ছাওলা, পূর্ব হাগুরিয়া হাশিম চর কাশিম গ্রাম প্রতি বছরই এ ভাঙনের কবলে পড়ে। এ কারণে গত কয়েক বছরের ব্যবধানে এসব গ্রামের শত শত একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বসতবাড়ি ও জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অসংখ্য পরিবার।

পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করায় এসব পরিবারের সদস্যরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। তাদের কর্মসংস্থান, খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও স্যানিটেশনের ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। দিন মজুরি করে তারা কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। অনেক পরিবার ১০-১৫ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক অন্যের জমিতে বসবাস করছেন।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদী ভাঙন ও বন্যায় সহায়-সম্বলহারা মানুষ ঠিকানাবিহীন গন্তব্যে ছুটে চলছেন। নদী ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে বাঁধসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। নতুন কোনো আশ্রয়স্থল না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে ভূমিহীন পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ভূমিহীন অনেক পরিবার পাশের গ্রামের বিত্তবানদের কাছ থেকে চুক্তিভিত্তিক জমি নিয়ে বসবাসের স্বপ্ন দেখছে। গড়ে একটি পরিবারের বসবাসের জন্য ৫-৬ শতাংশ জমির প্রয়োজন। ফলে প্রতিবছর ভাড়া বাবদ তাদের দিতে হবে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। তবে যাদের চুক্তিভিত্তিক জমি নেয়ার সামর্থ্য নেই তারা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তবে অনেক পরিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ভাসমান মানুষের তালিকায় নাম লেখাচ্ছেন।

এদিকে, গত সাত দিনে উপজেলার ছাওলা ইউপির গাবুরার চর, রামসিং, চর হরিরাম গ্রামে নতুন করে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এবারের ভাঙনে প্রায় একশ হেক্টর ফসলি জমি ও শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

পাওটানা বাজারের পাশে আশ্রয় নেয়া বাবু মিয়া, মজিদ আলী ও আকবর আলীসহ কয়েকজন জানান, নদী ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন তারা। এখন দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন।

স্থানীয় ছাওলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম বলেন, প্রতি বছর নদী ভাঙনে শত শত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। এত সংখ্যক পরিবারের জন্য স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। 

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ও বরাদ্দ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।