• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

দুর্যোগ মোকাবিলা সরকারের উদ্যোগ ইতিবাচক

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২০  

বাংলাদেশ এখন দুর্যোগের কবলে পড়েছে। দুর্যোগের পর দুর্যোগ এসে হামলে পড়ছে জনজীবনে। বর্তমানে করোনা বিশ্বব্যাপী এক মহাদুর্যোগ হিসেবে দাপট দেখাচ্ছে। কেড়ে নিয়েছে লাখ লাখ প্রাণ। বাংলাদেশেও এ পর্যন্ত ৫৫৯ জনের মৃতু্য হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। করোনাকালেই আঘাত হেনেছে সুপার সাইক্লোন আম্পান। আম্পানের তান্ডবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফসল নষ্ট হয়েছে, বাঁধ ভেঙে গ্রাম পস্নাবিত হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ভেসে গেছে মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে মুগডাল, চিনা বাদাম ও ভুট্টার খেত। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ব্রিজ কালভার্টের। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে খুলনার কয়রা উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে প্রায় ১৪ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে কোনো শুকনো জায়গা নেই। ফলে ঈদের দিনে পানিতে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ পড়তে দেখা গেছে। 

ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে এ পর্যন্ত আট জেলায় মোট ২২ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে, যাদের বেশির ভাগই ঝড়ে গাছ বা ঘর চাপা পড়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে যশোরে ১২ জন, পিরোজপুরে ৩ জন, পটুয়াখালীতে ২ জন এবং ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, ভোলা, চাঁদপুর ও বরগুনায় একজন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া ঈদের পরে দেশের নানা জায়গায় ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জয়পুর হাটে। সেখানে ২০০ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। দেয়াল চাপায় গাছ চাপায় মারা গেছে বেশ কয়েকজন। মারা গেছে নৌকা ডুবিতেও।

আশার কথা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার, নিয়েছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। যাদের গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে তাদের পুনর্বাসনে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ, আর প্রাকৃতিক দুর্যোগকে এড়ানোর কোনো উপায় নেই। আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলা করেই আগামীতে টিকে থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগ মোকাবিলায় অতীতের মতো এবারও দক্ষতার সঙ্গে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। যে কোনো দুর্যোগে থেমে থাকেনি বাংলাদেশ, প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে মর্যাদার সঙ্গে মাথা তুলে দাঁড়ানো এক দেশ বাংলাদেশ। করোনা সংকটে সরকার ত্রাণ তৎপরতায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। একইভাবে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায়ও।

মানুষকে সচেতন ও সতর্ক করা, তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রম্নত পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া, এসবই সরকারে ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে যেসব অবকাঠামো ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা দ্রম্নত মেরামত করতে হবে। দ্রম্নত ফিরিয়ে আনতে হবে জীবনের স্বাভাবিকতা।

মনে রাখতে হবে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মতো আরও আঘাত আসবে। সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া উচিত তা সাফল্যেরে সঙ্গে মোকাবিলা করা। দুর্যোগ মোকাবিলায় যদি আমাদের আগাম প্রস্তুতি না থাকে তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে, যা সামাল দেয়া সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। সুতরাং আগে থেকেই সাবধান হওয়া এবং নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি এবং এর কোনো বিকল্প নেই।