• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

দৌড়ানোর পর যা কখনোই করবেন না

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০১৯  

দৌড় আমাদের দারুণ কর্মশক্তি যোগায়। দৌড়ানোর সময় আমাদের পেশিগুলো উদ্দীপিত হয়, শরীরের সংযোগস্থলগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়ে। এছাড়া দৌড়ানোর সময় প্রতিটা পদক্ষেপের প্রতি নজর রাখতে হয় তাই এ সময় আমাদের মস্তিষ্কের কাজ বেড়ে যায়। দৌড় শেষ করার পরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সময় অর্থাৎ রিকভারি পর্যায় শুরু হয়। সমস্যা হল দৌড়ের ব্যাপারে যতটা মনোযোগ দেই আমরা তার সামান্য অংশও রিকভারি পর্যায়ে দেইনা। কিন্তু দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। নাহয় নানারকম দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। আসুন দেখে নেই দৌড়ানোর পরপর কোন কোন ভুলগুলো আমাদের এড়িয়ে চলা উচিৎ।

দৌড়ের পর শরীর ঠাণ্ডা হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিৎ

ব্যস্ত জীবনে আমরা অনেকেই দৌড়ানোর জন্য সময় করে উঠলেও দৌড়ানোর পর শরীর ঠাণ্ডা হওয়ার সুযোগ দেইনা যা একদমই ঠিক না। ঠাণ্ডা হওয়া মানে কিন্তু দৌড় শেষেই জুতো খুলে সোফায় গা এলিয়ে দেওয়া না। মনে রাখবেন একটা যানবাহনেরও ব্রেক কষার আগে গতি কমাতে হয়। তেমনি আমাদেরও উচিৎ না দৌড়ানোর পরপরই হুট করে ব্যায়াম থামিয়ে দেওয়া। প্রতিবার দৌড়ানোর পর শরীরকে আস্তেধীরে ঠাণ্ডা হতে দিতে হবে।

দৌড়ানোর শেষদিকে আস্তেধীরে গতি কমানো উচিৎ আর দৌড় শেষ করে কিছু বেসিক স্ট্রেচিং করে তারপর ব্যায়াম শেষ করা উচিৎ। এতে শরীরের পেশী নমনীয় থাকে ও মাসল সোরনেস বা পেশিব্যাথা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া এভাবে দৌড় শেষ করার পর দিনের কাজ শুরু করার নতুন উদ্যম পাওয়া যায়।

পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া

দৌড়ানোর পরে পানি খেলেই তবে আমাদের শরীর ঠিকভাবে কার্যক্ষমতা ফিরে পায় ও ঠিকঠাকভাবে মেটাবলিক ওয়েস্ট (যেকোন কষ্টসাধ্য ব্যায়ামের পরে নির্গত হওয়া ল্যাকটিক এসিড) নির্গমনে সাহায্য করে। তাছাড়া ব্যায়াম বা দৌড়ানোর পর যত দ্রুত সম্ভব পানি পান করা উচিৎ যাতে আমাদের পেশিগুলোতে ঠিকমত অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ হয়।

গ্লাইকোজেনের সংগ্রহ পুনরায় পূর্ণ না করা

দৌড়ানোর সময় আমাদের শরীরে শক্তি ব্যয় হয়, ক্যালরি পোড়ে, শরীরের সমস্ত রিসোর্সেস বা জমানো উপাদান ক্ষয় হয়। এছাড়াও আমাদের শরীরের সব পেশি, টেন্ডন, লিগামেন্ট আর মেরুদণ্ড কাজ করে। এই রিসোর্সগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণ করা উচিৎ। নাহয় মাংসপেশিতে ইনজুরি বা ক্ষতের সম্ভাবনা থাকে।

যারা ওজন কমাতে দৌড়ান তাদের জন্য দৌড়ের পরে কিছু খাওয়া গ্রহণ করা ভালো। কারণ ব্যায়াম বা দৌড়ের পর শরীরের মেটাবলিজম বা হজমশক্তি বেড়ে যায় যা অতিরক্ত চর্বি পোড়ায়।

ব্যায়ামের পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা থাকে। তাই ব্যায়ামের পর ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ভালো।

দৌড়ানোর পরপরই গোগ্রাসে খাওয়া যাবে না

অনেকেই আছেন যারা দৌড়ানোর সময় কত ক্যালরি ব্যয় হল তার হিসেব রাখে না। আবার দৌড় শেষ হতে না হতেই মিষ্টি জাতীয় খাবার, চিপস, এনার্জি ড্রিঙ্ক ইত্যাদি খেতে শুরু করে যেসব খাবারের ক্যালরির পরিমাণ দৌড়ানোর সময় ব্যয় হওয়া ক্যালরির চাইতে বেশি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া অতিরিক্ত চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার খেলে তা ব্যায়ামের পরপর তৈরি হওয়া ক্যালরির চাহিদা পূরণ করলেও আদতে ব্যায়ামের পরে পেশির ক্ষয়রোধ প্রক্রিয়ায় বাঁধা দেয় বা দেরি করায়। তাই ব্যায়াম শেষ করে যত ক্লান্তই থাকুন না কেন গোগ্রাসে খাওয়া শুরু করবেন না। পানি পান করুন। আর সময়মত ক্যালরি হিসেব করে পুষ্টিকর খাবার খান।

দৌড়ের মাঝে বিরতি না দেওয়া

ব্যায়াম বা দৌড়ের সময় আমাদের শরীর অসম্ভব চাপের মধ্যে থাকে। তাই ব্যায়ামের মাঝে কিছুটা বিরতি দেওয়া ভালো। এতে আমাদের আমাদের শরীরের পেশিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়না। একটানা ব্যায়াম করলে বা দৌড়ালে পেশিতে টান লাগতে পারে বা অন্যান্য ইনজুরিও দেখা দিতে পারে।

তাছাড়া আমাদের পেশি, হাড় ও টেন্ডন যাতে আরোগ্য লাভের সুযোগ পায় তাই দিনে পর্যাপ্ত ঘুম হওয়াটাও জরুরি।

নিয়মিত দৌড়ান, সুস্থ থাকুন।