• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

নারী-পুরুষের সমান অধিকার: কনে গেলেন বরের বাড়ি!

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

বেশ আড়ম্বরপূর্ণ বিয়ের আয়োজন। সবই ঠিকঠাকভাবে চলছে। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন! বিয়ের বহর গেটের কাছে আসতেই কারো মুখে রা নাই। উত্তেজনা চোখেমুখে। গেটের সামনে মাইক্রোবাস থেকে নামলেন লাল বেনারসি শাড়ি পরা বধূবেশে এক কনে।

প্রচলিত প্রথা ভেঙে বিয়ের এমন ঘটনাই ঘটলো শনিবার মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার চৌগাছা গ্রামে।

কনে চুয়াডাঙ্গার হাজরাহাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের মেয়ে খাদিজা আক্তার খুশি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে স্নাতকের শিক্ষার্থী। বর গাংনী উপজেলার চৌগাছার কমরেড আব্দুল মাবুদের ছেলে তরিকুল ইসলাম জয় একজন ব্যবসায়ী।

শনিবার সকাল থেকেই কমরেড আব্দুল মাবুদের বাড়ির আশেপাশে ছিল বিপুল সংখ্যক উৎসুক মানুষ ও আত্মীয়স্বজনের ভিড়। ভিন্নধর্মী এ বিয়ের আয়োজন ঘিরে এলাকার মানুষেরও উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি ছিলো না। উৎসুক দৃষ্টিতে সবাই তাকিয়ে ছিলেন কখন আসবে কনে ও কনেযাত্রীরা।

অবশেষে দুপুরে ৭টি মাইক্রোবাস ও ৩০টি মোটরসাইকেল বহর নিয়ে কনে এসে নামলেন বরের বাড়ির গেটের সামনে। এ সময় কনেকে ফুল ও মিষ্টি মুখ করিয়ে বরণ করে নেয় বর পক্ষ।

এরপর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী একজন মাওলানা তাদের দু’জনকে কবুল পড়ান। প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করান স্থানীয় কাজি। এরপরে বর পক্ষের দাওয়াতী আত্মীয় স্বজন ও কনে যাত্রীদের ভুড়িভোজ করানো হয়।

বিকেলে বর তরিকুল ইসলাম জয়কে নিয়ে কনে খাদিজা আক্তার খুশি চলে গেছেন তার বাবার বাড়িতে। সেখানে কয়েকদিন কাটানোর পর কনেকে সঙ্গে নিয়ে বর ফিরে আসবেন নিজের বাড়িতে।

নিজের বিয়ের এমন আয়োজন সম্পর্কে কনে খাদিজা আক্তার খুশি বলেন, নারী-পুরুষের সমান অধিকার হিসেবে একজন মেয়ে একজন ছেলেকে বিয়ে করতে তার বাড়িতে যেতে পারেন, তা কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। সেই বাধার বৃত্ত ভেঙে আমরা শুরু করেছি। আশা করছি আরো অনেকেই এখন এটি করবেন।

বিয়ের আয়োজন প্রসঙ্গে বরের বাবা কমরেড আব্দুল মাবুদ বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের অনেক কিছুই করার আছে। মুখে আমরা বললেও তা বাস্তবায়ন করছি কতটুকু? তাই আমি এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি সামনে আনতে চেয়েছি।

উৎসুক মানুষের কয়েকজন জানালেন, বরপক্ষ কনেপক্ষের বাড়িতে যাবে এটি প্রচলিত প্রথা। এই প্রথা ভেঙে কনেপক্ষ বরের বাড়িতে বিয়ে করতে আসছে তা অবশ্যই ভিন্নরকম এক আনন্দের ঘটনা।

বাংলাদেশে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য কমরেড নুর আহমেদ বকুল বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তিনিও অভিভূত। প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে একটি ব্যতিক্রমি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী হবে।