• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

নির্বাচনী ‘বিধি ভঙ্গ করে’ কোটি টাকা উত্তোলন

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২১  

নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে দফায় দফায় প্রায় কোটি টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার সচিব এসএম মাজহারুল আনোয়ার ও হিসাবরক্ষক (ভার:) আশরাফুল মওলার বিরুদ্ধে।

তৎকালীন মেয়র আব্দুল্লা আল-মামুনের যোগসাজশে ব্যাংকের সঙ্গে আঁতাত করে এসব টাকা উত্তোলন করেছে বলে পৌরবাসী ও নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের দাবি।

ব্যাংকের একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনসহ বেশকিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এরপরও মাজহারুল আনোয়ার ও আশরাফুল মওলা এসব টাকা উত্তোলন করেছেন।

এদিকে, যথাযত তথ্য উপাত্ত সম্বলিত ফরমেটে আগে মেয়র দায়িত্ব বুঝে দেয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে নবনির্বাচিত মেয়রের। এমনকি পৌর পরিষদের দায়িত্ব গ্রহনের সময় পৌরসভার ব্যাংক স্টেটমেন্ট অনুযায়ী স্থিতির বিষয়ে হালনাগাদ কোনো ক্যাশ রেজিস্ট্রার পৌরসভার সচিব ও হিসাবরক্ষক দেখাতে পারেনি। উপরন্ত বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খাতে প্রায় আট লাখ টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে পৌরসভার দায়িত্ব নিতে হয়েছে বলে জানান মেয়র আব্দুর রশিদ রেজা সরকার।

সারাদেশে দ্বিতীয় ধাপে ২০২০ পৌর নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর নিয়ম অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী, মেয়র, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রার্থী এবং তাদের কর্মী ও সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুসরণ প্রসঙ্গে একটি বার্তা পাঠানো হয়। সেই বার্তার অনুলিপি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

পৌরসভার সচেতন নাগরিক দেবাশিষ কুমার শাহা বলেন, ‘পৌরসভার কর্মকতা-কর্মচারীরা মারাত্মকভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। বিগত সময়ে এই পৌরসভার কোনো উন্নয়ন তো দূরের কথা তারা এটিকে গ্রামে পরিণত করেছে। তারপরও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আইন অমান্য করে পৌরসভার কর্মকর্তাদের ব্যাংকে এতো বড় লেন-দেন আমার কাছে দুর্নীতিরই ইঙ্গিত বলে মনে হয়। এর দায় ব্যাংক কর্মকর্তারাও এড়াতে পারেনা। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখা উচিত বলে আমি মনে করি।’

এদিকে সুন্দগঞ্জ উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক শাখার ব্যাবস্থাপক ফারেজুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর পৌরসভার অ্যাকাউন্টগুলোতে যে সমস্ত লেনদেন হয়েছে তার জবাব আমি পৌর কর্তৃপক্ষ অথবা নির্বাচন কমিশনকে দেব। সাংবাদিকদের কাছে এ ধরনের কোন তথ্য দিতে আমি বাধ্য নই।’

সুন্দগঞ্জ উপজেলার জনতা ব্যাংক মিরগঞ্জ শাখার ব্যাবস্থাপক আরেফীন সিদ্দিকী বলেন, আমি কোনো চিঠির অনুলিপি পাইনি। কিন্তু পৌর নির্বাচনের আগে কৃষিঋণের একটি মিটিংয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে মৌখিকভাবে বলেছেন তফসিল ঘোষণার পর কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ব্যতিত কোন প্রকার লেনদেন পৌরসভার কর্তৃপক্ষ করতে পারবেনা। আমার ব্যাংক থেকে পৌরসভার তফসিল ঘোষণার পর কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা ব্যতিত কোনো প্রকার লেনদেন করা হয়নি।

এ বিষয়ে তৎকালীন মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায় নি।

সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক আশরাফুল মওলা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পূর্বের মেয়রের নির্দেশে আমরা কাজ করেছি। আমরা যে হিসাব দিয়েছি বর্তমান মেয়র তা না মানলে আমাদের করার কিছু নেই।’

তবে পৌরসভার বর্তমান মেয়র আব্দুর রশিদ রেজা সরকার জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

অন্যদিকে সুন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মারুফ বলেন, ‘আপনার মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের ব্যাপারটি আমি জানতে পারলাম। এমনটি যদি ঘটে থাকে, তবে তা অন্যায়। পৌর মেয়র যদি জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন সেক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্তা নেয়া যেতে পারে।’