• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

নীলফামারীতে দেড় মাস পর বাক্সবন্দী লাশের রহস্য উদঘাটন

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০  

দেড় মাস পর অজ্ঞাতনামা শিশুর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই পুলিশ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে  মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় হত্যাকান্ডের শিকার শিশুর পরিচয় ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা ও সৎ মাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

চলতি বছরের ১৬ জুলাই নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার রামডাঙ্গা ফরেস্ট ও সিংগাহাড়া নদীর তীরে একটি তালাবদ্ধ ট্রাংক থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ঘটনার তিনদিন পরও রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), রংপুরকে দেয়া হয়। 

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ১৫ জুলাই রাতে একটি পিকআপ একটি তালাবদ্ধ ট্রাংক নীলফামারীর ওই স্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। তা দেখতে পেয়ে এলাকাবাসি পুলিশকে খবর দেয়। পরদিন পুলিশ ট্রাংকটি খুলে বিছানা চাদর ও কাথা মোড়ানো অবস্থায় একটি অর্ধ গলিত লাশ পায়। লাশ দেখে মনে করা হয় এটি কোন ৩০ বছরের যুবকের লাশ ছিল। ঘটনাটি তদন্ত পায় পিবিআই রংপুর। তারা সকল কিছু সংরক্ষণ করে ও সকল বস্তু সাক্ষ্য যথাযথ ভাবে সংগ্রহ করে এবং তদন্ত শুরু করে। লাশটি ঝলসানো ও অর্ধ গলিত থাকায় ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণ করে সে সময় শিশুটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে নীলফামারীর ডিমলা থানায় একটি মামলা করা হয়। 

রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেনের এর নেতৃত্বে একটি স্পেশাল টিম তথ্য প্রযুুক্তি ব্যবহার করে প্রায় ১ মাস ১৭ দিন পর অপরাধের মোটিভ, প্রক্রিয়া ও মৃত ব্যক্তির পরিচয় নৃশংসতম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। তাৎক্ষণিক ভাবে অভিযান পরিচালনা করে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার একটি এনজিওতে কর্মরত নিহত শিশু জিহাদ(১২) এর বাবা জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। 

আটক জিয়াউর রহমানের স্বীকারোক্তি মতে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় তার ভাড়া বাসা থেকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি(১৯) ও তার শ্বশুর আইয়ুব আলীকে(৫৫) গ্রেফতার করা হয়। ওই বাড়ি থেকে ইলেক্ট্রিক ওয়াটার হিটার জব্দ করা হয়। যার মাধ্যমে জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য গরম পানি নিক্ষেপ করা হয়। 

পিবিআই জানায়, ধৃতদের তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি এবং তার বাবা জিয়াউর রহমানের সাথে শিশু জিহাদের বনিবনা না হওয়ায় তারা একত্রে পরিকল্পিত ভাবে ১৪ জুলাই রাতে ঘুমন্ত জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যা নিশ্চিত করার জন্য বাসায় ব্যবহৃত একটি স্টিলের ট্র্যাংকে শিশু জিহাদের লাশ পেঁচিয়ে ভিতরে ঢুকায় ইলেক্ট্রিক ওয়াটার হিটার দিয়ে জিহাদের দেহটি অর্ধগলিত করে দেয়। পরে জিহাদের সৎ নানা আইয়ুব আলী পার্শ্ববর্তী মীম ভ্যারাইটিজ স্টোর হতে দুইটি চাইনিজ তালা কিনে এনে ট্রাংকটি তালাবদ্ধ করে। পরে লাশ ট্রাংকটি ভরে অপসারণের জন্য বিরল হাসপাতালের গেটের সামনে হতে একটি নীল রংগের ছোট পিক আপ ভ্যান ১৩ হাজার টাকায় ভাড়া করে। এরপর পিকআপটি নীলফামারীর ডিমলার উক্ত স্থানে এসে গভীর রাতে নদীর ধারে ট্র্যাংকটি ফেলে পালিয়ে যায়।  উক্ত পিক আপের মালিক ও ড্রাইভার ইসমাঈলকে(২৬) গ্রেফতার করা হয়। জিহাদ হত্যাকান্ডে তার বাবা, সৎ মা, সৎ নানা ও পিকআপ চালক সহ এপর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। 

পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেনের জানান, পিবিআই এসআই মোঃ ইকরামুল হক এই মামলা তদন্ত করছেন। তাকে পিবিআই এর একটি স্পেশাল টিম সহায়তা করছেন। মামলার তদন্ত অব্যহত রয়েছে।