• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

পঞ্চগড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে সাদিয়া সামাদ লিসা নামে স্কুলছাত্রীর কীভাবে মৃত্যু হলো, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। বাড়ির পাশের পুকুর থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তাকে হত্যা করা হয়েছে, নাকি সে আত্মহত্যা করেছে- এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

যদিও লাশ উদ্ধারের পর শুক্রবার রাতে তিন কিশোরের নামে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন নিহতের বাবা আব্দুস সামাদ। মামলায় অভিযুক্ত নবম শ্রেণি পড়ূয়া আকাশ ও মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরেক অভিযুক্ত অষ্টম শ্রেণি পড়ূয়া সাদ পলাতক রয়েছে। এদিকে সাদকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে লিসার সহপাঠীসহ শিক্ষার্থীরা।

আটোয়ারী উপজেলা শহরের ছোটদাপ এলাকায় শুক্রবার বাড়ির পাশের পুকুর থেকে লিসার লাশ উদ্ধার হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে লিসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মূলত বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিবেশী ও তার সহপাঠী কিশোর সাদ লিসার বাড়িতে এসে তার পরিবারের লোকজনকে জানায়, ‘লিসার কারণে তাকে মার খেতে হয়েছে।’

ওইদিন লিসাকে নিয়ে আরেক কিশোর আকাশের সঙ্গে তার মারামারি হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আকাশের সঙ্গে লিসার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। লিসার সঙ্গে কথা বলতে দেখে সাদকে মারপিট করেছে প্রেমিক আকাশ।

লিসার পরিবারের অভিযোগ, মারামারির পর সাদ বাড়িতে এসে লিসাকে ‘কিছু একটা করা’র হুমকি দেয়। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে-ই লিসাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দিয়েছে।

তবে অভিযুক্ত কিশোরদের পরিবারের দাবি, সাদ লিসাদের বাড়ি গিয়ে মারপিটের ঘটনায় নালিশ করায় হয়তো লিসাকে তার পরিবারের লোকজন বকাঝকা কিংবা কটু কথা বলেছে। সে জন্যই অপমান আর ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করতে পারে। এ নিয়ে সঠিক তদন্তের দাবি করেছেন তারা।

তারা আরও জানান, লিসাকে খুঁজতে সন্ধ্যায় তার পরিবারের সদস্যরা সাদের বাড়িতে আসে। সে সময় সাদ বাড়িতেই ছিল। আকাশ ও মুন্নাকেও রাতে তাদের বাড়িতে পাওয়া যায়। পরে লিসার মা স্থানীয় মুরুব্বি সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গোলাপের কাছে অভিযোগ করলে অভিযুক্ত তিন কিশোরকে তার বাড়িতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতভর তিন কিশোর ওই বাড়িতেই আটক ছিল। ভোরে লিসার লাশ উদ্ধারের কথা শুনে সাদ ভয়ে পালিয়ে যায়। এতে অন্য দু’জনকে পুলিশে দেওয়া হয়।

কিশোরদের পরিবারের দাবি, তিন কিশোর এ মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত নয়। আকাশের সঙ্গে লিসার সম্পর্ক নিয়ে তার পরিবারের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ায় মান-অভিমানে লিসা পুকুরে আত্মহত্যা করতে পারে।

সাদের বাবা স্কুলশিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনা বিবেচনা করলেই প্রমাণ হয়, আমার ছেলে নির্দোষ। আশা করি পুলিশ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বের করবে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিষয়টি পরিস্কার হবে। লাশ উদ্ধার করে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছিল।

তবে নিহত সাদিয়ার মা খায়রুন নাহারের দাবি, তাদের তিনজনকে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে সাদ পালিয়ে যায়। তারাই অন্য কাউকে দিয়ে আমার মেয়েকে হত্যা করিয়েছে। আমি তাদের বিচার চাই।

আটোয়ারী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্কুলছাত্রীর বাবা তিন কিশোরের নামে মামলা করেছেন। তাদের মধ্যে আটক দু’জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। মূল অভিযুক্ত কিশোর সাদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।