বাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ
– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২১
বাংলা, বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। একই অবিনাশী সত্তার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। জন্মদাত্রীকে ‘মা’ বলে ডেকে যে ভাষার জন্ম, সে ভাষাকে রক্ত-মজ্জায় ধারণ করে যে জাতির বিকাশ, আর সে জাতির নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন, তারই সফল রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। তাই তো তিনি আমাদের জাতির পিতা। বাংলা নামক দেশের প্রতিষ্ঠাতা।
ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে বীর বাঙালি বহুবার বিদ্রোহ করেছে, রক্ত দিয়েছে, কিন্তু স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। সেই অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার প্রাণ ও প্রকৃতির হাজার বছরের একাগ্র প্রার্থনায় এ ভূখণ্ডে জন্ম নেন বাংলার ‘মুক্তিদূত’ শেখ মুজিবুর রহমান। উর্বরা পলির পরতে পরতে ফুটে ওঠে জনকের মুখাবয়ব। বাংলার মুক্তিকামী মানুষের অপরাজেয় চেতনাকে বুকে ধারণ করে তিনি হয়ে ওঠেন আমাদের মুক্তিসংগ্রামের আরাধ্য মহানায়ক। তিনি তাঁর মধ্যে একই সঙ্গে ধারণ করেছেন ফকির মজনু শাহ্, হাজি শরিয়তুল্লাহ, তিতুমীর, ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন-প্রীতিলতা, নেতাজি সুভাষচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ও কবি নজরুলকে। তাইতো তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
অসীমের যেমন কোনো শুরু কিংবা শেষ নেই, তেমনি মহামানবেরা কোনো জন্ম, মৃত্যু কিংবা সময়কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেন না। আমি নিশ্চিত, আজ থেকে হাজার বছর পরেও মহা-আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে ‘মুজিব বর্ষ’ উদ্যাপিত হবে। বাঙালি যত উৎকর্ষ লাভ করবে, নিজেকে বিশ্বে কিংবা মহাবিশ্বে যত সমৃদ্ধির আসনে প্রতিষ্ঠিত করবে, তত বেশি করে সে তার শিকড়ে ফিরে যাবে, পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে তার পিতাকে।
যখনই সে বাধাগ্রস্ত হবে, যখনই কেউ তাকে দাবিয়ে রাখতে চাইবে, তখনই তাকে শক্তি দেবে, পথ দেখাবে সেই ‘অমোঘ তর্জনী’। বঙ্গবন্ধু অমর ও আমাদের অনন্ত প্রেরণার উৎস। মৃত্যু তাঁকে কোনোভাবেই সীমিত করতে পারেনি। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে আমাদের পাপ খানিকটা লাঘব করেছি মাত্র।
জাতির জনকের জন্ম, ৫৫ বছরের যাপিত জীবন, শতবর্ষের বিশাল প্রেক্ষাপট এবং হাজার বছরের অবশ্যম্ভাবী প্রভাব ও তাৎপর্য মননে ধারণ করা দুরূহ এক কাজ, তা ভাষায় প্রকাশ করা আরও কঠিন।
মুজিব একজন ‘ব্যক্তি’, ব্যক্তি থেকে ‘নেতা’, নেতা থেকে একটি ‘প্রতীক’ এবং সেখান থেকে কীভাবে একটি ‘চেতনা’য় উত্তরিত হলেন, তা নিয়ে নিশ্চয়ই বহু গবেষণা হবে। ১৯২০ সালে টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর জন্ম। দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম ও কারাবাসের মধ্য দিয়ে মুসলিম লীগ, আওয়ামী-মুসলিম লীগ ও আওয়ামী লীগের পথপরিক্রমায় তিনি পরিণত হন জাতীয় নেতায়।
ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও উনসত্তরের গণ-আন্দোলন তাঁকে নিয়ে যায় এক অবিসংবাদিত আসনে। সত্তরের নির্বাচনে বিশাল বিজয়, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা এবং পাকিস্তানিদের হাতে বন্দী হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির আশা, আকাঙ্ক্ষা ও মুক্তির মূর্ত প্রতীকে।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের অকালপ্রয়াণ তাঁকে নিয়ে যায় এক অবিনাশী ‘চেতনা’র স্তরে। বাঙালি জাতির জন্য তিনি একক ও অভিন্ন এক সত্তা। সভ্যতার ইতিহাসে তাঁর নাম লেখা থাকবে একজন ‘বাঙালি’, একজন ‘মুসলমান’ এবং বিশ্বের সব মুক্তিকামী ও শোষিত মানুষের পক্ষের লড়াকু এক যোদ্ধা হিসেবে।
শুধু অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থান নয়, গণমানুষের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস তাঁকে বিশ্বের অপরাপর স্বাধীনতাকামী নেতাদের থেকে পৃথক ও অনন্য এক মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
গণতন্ত্র, জাতীয়তা, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—যে চার মূলনীতির ওপর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, সেটাও পৃথিবীতে বিরল। প্রচলিত গণতন্ত্রের তীক্ষ্ণ দলীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে গিয়ে তিনি যে জাতীয় ঐক্য ও জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্নের পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন, কালের বিবর্তনে সেটাও যথার্থ প্রমাণিত হবে।
তাঁর রাজনীতির ভিত্তি ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ হলেও বাংলাদেশের সংবিধানে সব জাতিসত্তার সমান স্বীকৃতি সুস্পষ্টভাবে স্থান পেয়েছে। তাঁর সমাজতন্ত্রের ধারণাও কোনো ভিনদেশি মতবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের সক্ষমতা ও সমবায় উদ্যোগই তাঁর দর্শনের ভিত্তি। সে পথেই বাংলাদেশের সার্বিক মুক্তি নিহিত।
আর তাঁর ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ কোনোভাবেই পাশ্চাত্যের ধর্মহীনতার ধারণা থেকে সৃষ্ট নয়, বরং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সব ধর্মের সমান মর্যাদাকেই তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। তিনি মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডার সহাবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি সব ধর্মীয় ও জাতিগত উৎসবকে সর্বজনীন উদযাপনে পরিণত করতে চেয়েছেন।
২০২০ সালে আমরা মুজিব বর্ষ পালন করছি। ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ‘সুবর্ণজয়ন্তী’। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে আমরা আজ বহুদূর এগিয়েছি। বাংলাদেশের জল ও সমুদ্রসীমা জয়ের যে রূপরেখা তিনি রেখে গেছেন, সে পথেই আমরা সফল হয়েছি। কৃষি গবেষণায় সর্বোচ্চ বিনিয়োগ ও বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আমাদের তেল-গ্যাস ক্ষেত্রগুলো ফেরত নিয়ে, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার যে ভিত তিনি তৈরি করে গেছেন, তার ওপর দাঁড়িয়েই আমরা আজ স্বাবলম্বী হওয়ার পথে হাঁটছি।
আমাদের নৌবহরে ‘সাবমেরিন’ সংযোজন এবং মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে আমরা আজ জাতির পিতার ‘জল, স্থল ও অন্তরিক্ষে বাঙালির ঠিকানা গড়বার স্বপ্ন’ পূরণে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলছি। তিনি বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন গঠন করে পারমাণবিক যুগে প্রবেশের যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে তা আজ বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে।
বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে তিনি যে নতুন প্রযুক্তি অধ্যায়ের সূচনা করে গেছেন, সেটাই আজকের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। তিনি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে যে ‘সমঝোতা স্মারক’ স্বাক্ষর করেছিলেন, সেটাই আজ ‘বদ্বীপ পরিকল্পনা’য় রূপ নিয়েছে। তিনি বাংলাদেশকে ঠিক যেখানটায় রেখে গেছেন, তার সুযোগ্য কন্যা সেখান থেকেই শুরু করে আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন।
১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর শাসন আমলে বাংলাদেশ ৯.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মাইলফলক অর্জন করেছিল, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শেখ হাসিনার হাত ধরে আমরা আবার ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অতিক্রম করলাম। বঙ্গবন্ধুর জীবন-আলেখ্য, বক্তব্য ও লেখনীতে আমাদের অনাগত ভবিষ্যৎ পথচলার অনেক নির্দেশনা ও ইঙ্গিত লুকায়িত আছে, যা আমরা কেবল সে পর্যায়ে পৌঁছালেই অনুধাবন করতে পারব। বাংলার নিখাদ মাটি থেকে উৎসারিত ‘মুজিব আদর্শ’ আমাদের আরও বহুদূর নিয়ে যাবে। সময়ের পরিক্রমায় এই দর্শনেরও বহুধা উন্মোচন ঘটবে এবং সয়ম্ভু হয়ে নিজেই তাকে ধারণ করবার মতো প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক কাঠামো ও যুগোপযোগী নেতৃত্ব তৈরি করবে।
[মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে দেওয়া সংসদ সদস্য অপরাজিতা হকের বক্তব্য অবলম্বনে]
লেখক: সংসদ সদস্য।
- গাইবান্ধায় যুব উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগ নিয়ে মতবিনিময় সভা
- রংপুরে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- দ্বিতীয় সাক্ষাতেও গুজরাটকে হারাল দিল্লি
- খুন হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছাড়লেন সালমান খান
- সব রোগ-ব্যাধি থেকে শেফা লাভের সূরা
- জিম্মি এক ইসরায়েলি-আমেরিকানের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- র্যাবের নতুন মুখপাত্র আরাফাত ইসলাম
- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন
- গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
- মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- সব ডিসি-এসপির সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
- নীলফামারীতে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনা
- চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী
- চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫০ ভাগ
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- ডিমলায় জুয়া খেলার অপরাধে আটক-২
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- রাতেই যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- ফারিণের ‘নিকষ’ অন্ধকার!
- অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি, ৫ যুগ্ম-সচিবের বদলি
- ‘সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে ভূমিসেবায় দুর্নীতি প্রতিরোধ করা হবে’
- জলবায়ু সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- অবৈধ দখলে থাকা খাস জমি চিহ্নিত করতে বললেন ভূমিমন্ত্রী
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- চিকিৎসা ব্যবস্থা যেকোনো মূল্যে সহজলভ্য করবো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- মানুষের জীবন সহনীয় করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জামদানিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত করা হবে: শিল্প সচিব
- রোহিঙ্গা সমাধানে নিউজিল্যান্ডকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান
- তুরস্কে আঞ্চলিক নির্বাচনে এরদোগান বিরোধীদের জয়
- ঈদে সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়তি ফ্লাইট
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- আইপিএলের মাঝপথে হঠাৎ দেশে ফিরলেন মুস্তাফিজ